সন্ধি ঐযতীন্দ্রমোহন সিংহ ঙ্গিভীষ্ম খণ্ড নীহারিকার কথা - »s ৰেলা ১১টার সময় ডাঃ পাকড়াশী ও স্বরথ বাবু কিশোরের সঙ্গে আসিলেন। শঙ্কর পরে আসিল । ডাঃ পাকড়াশী অনেকক্ষণ পৰ্য্যস্ত পরীক্ষা করিয়া দেখিলেন এবং দুই ডাক্তারে পরামর্শ করিয়া দাদাকে বলিলেন, কারবাঙ্কল এখন যেরূপ দাড়াইয়াছে, তাহাতে ইহাকে বসাইয় দেওয়া অসম্ভব, অস্ত্র করিতে হইবে, আর যেরূপ তাড়াতাড়ি বাড়িয়া চলিতেছে, খুব শীঘ্ৰ অস্ত্র করা দরকার। আমি দাদার কাছে একথা গুনিয়া কাদিয়া ফেলিলাম। কারণ, পূৰ্ব্ব হইতেই আমার মনে অত্যন্ত ভয় জন্সিয়াছিল, মা অস্ত্রোপচার কিছুতেই সহ করিতে পরিবেন না। দাদা ও কিশোর আমাকে অনেক বুঝাইল, শঙ্করও আসিয়া তাহাতে যোগ দিল । অবশেষে আমি জগত্য অস্ত্র করাতে সম্মত হইলাম। তখন কে জানিত, মলম লাগাইয়াও কত জনের কারবাঙ্কল আরাম হইয়াছে। এরূপ স্থির হইল, পরদিনই বেলা ১০টার সময় ডাঃ পাকড়াশী ও স্বরথ বাবু আসিয়া অঙ্গ করিবেন। সেজন্য তাহার কিশোরকে অনেক উপদেশ দিলেন, এবং কি কি জিনিষপত্র কিনিতে হইবে, তাহার ফর্দ দিলেন। ডাঃ পাকড়াশীকে ১৬২ টাকা কী দেওয়া হইল, কিন্তু অস্ত্র করার জন্ত তিনি লইবেন ৫০২ টাকা । স্বাহী হউক, জিনিষপত্রের ফর্দ লইয়া কিশোর ও শঙ্করের সহিত দাদা বাজারে বাহির হইল। মাকে অস্ত্র করার কথা বলা হইল না, আমি সারাদিন তাহার কাছে বসিয়া রছিলাম। তাহাকে কেবল ফলের রস খাইতে দেওয়া হইল। সন্ধ্যার সময় দাদা জিনিষগুলি লইয়া ফিরিয়া আসিল, শঙ্করও তাহার সঙ্গে আসিল। কিশোর তার হাসপাতালের কাজ সারির রাত্রি ১-টার সময় আসিবে, এরূপ বলিয়া পঠাইয়াছে : মা’র জর আজও খুব বাড়িয়া চলিল । আমি মাথায় আইস্-ব্যাগ দিয়া বসিয়া রহিলাম। আমি যখন আহার করিতে গেলাম, তখন দাদা ও শঙ্কর বসিল, কিন্তু, আমি কিছুই খাইতে পারিলাম না। আমি আসিয়া দেখি, কিশোর আসিয়াছে । কিশোর শঙ্করকে বলিল—“যাও এবার তোমাদের ছুটি, আমি এখন বসি।” আমাকে বলিল-- “আপনিও এখন একটু ঘুমিয়ে নিন।" কিন্তু শঙ্কর বলিল— কিশোর, তুই ত কাল রাত জেগেছিল, আজ তুই ঘুমে গিয়া, আমি এখন বসি, নীরুদেবী আপনিও ওয়ে পড়ুন।” দাদা বলিল-“আর আমি ? তোমরা রাত জাগবে, আর আমি বুঝি মুখে নিদ্র যাব ?” আমি বলিলাম--“দাদা তুমি ত বসে বসে ঘুমুবে, তার চাইতে বিছানায় গিয়ে শোও। শঙ্কর বাবুও এ-সব বিষয়ে নেহাৎ আনাড়ি। কিশোর বাবু, আপনি এতক্ষণ হাসপাতালে খেটে এসেছেন, আপনিও গিয়ে বিশ্রাম করুন, আমি এখন বসি, আপনি ৩টার সময় আসবেন ।” এই বলিয়া আমি মা’র মাথার কাছে বসিয়া পড়িলাম। প্রমীলা তফাতে দাড়াইম্ন ছিল। সেও আমার কাছে আসিয়া বসিল । দাদা তাহার বন্ধুদের লইয়া অন্য ঘরে গেল। আমি কিছুক্ষণ পরে দেখিলাম, প্রমীলা বসিয়া ঝিমাইডেছে। তাহাকে গুইতে পাঠাইয়া দিয়া আমি একলা মা’র কাছে বসিলাম ও র্তাহার মাথায় আইস-ব্যাগ দিতে লাগিলাম । কিন্তু আইস-ব্যাগ দেওয়া সত্বেও ডিলীরিয়াম আরম্ভ হইল। আমি তখন কিশোরকে ডাকিয়া আনিলাম, ও আমরা দুই জনে মা’র মাথার দুই পাশে বসিলাম—কিশোর আইস ব্যাগ ধরিল, আমি মাথায় বাতাস দিতে লাগিলাম। কিশোর থার্শ্বোমেটার দিয়া দেখিয়া বলিল-“জর ১০৪ ডিগ্রী উঠেছে, সেই জন্তই ডিলীরিয়াম হচ্ছে। ওষুধ আর এক দাগ খাওয়ান যাক ৷” আমি বলিলাম—“এই•রকম বেশী জর হচ্ছে, শরীর
পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩৮
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।