পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩৮৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

, este সকলেরই একটা কৰ্ত্তব্য আছে, তাহ গোখলে বিদ্যালয়ের বালিকার বুঝিয়াছে এবং প্রতিমাসে নিজেদের মধ্যে চাদা তুলিয়া গত কয় বৎসর যাবৎ তাহারা দুঃস্থ এবং আতুরদিগকে সাহায্য করিয়া আসিতেছে। গোখলে বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠার পর হইতে প্রায় ত্রয়োদশ বর্ষ অতীত হইতে চলিয়াছে। প্রতিষ্ঠার সময় ইহার ছাত্রীসংখ্যা ছিল মাত্র ছয়জন , দৈনন্দিন কাৰ্য্য সম্পন্ন হইত ভবানীপুরস্থিত একটি একতলবিশিষ্ট ক্ষুদ্র গৃহের একটি ততোধিক ক্ষুদ্র ৫ প্রবাসী ;) SK)8C) প্রকোষ্ঠে। তৎকালিক অবস্থার সহিত ইহার বর্তমান অবস্থার তুলনা করিলে অনেক পরিবর্তন লক্ষিত হয়। আজ ইহার অবশ্যপ্রয়োজনীয় বৰস্থা সমস্তই হইয়াছে- ইহার ছাত্রীসংখ্যা কিঞ্চিল্গুন দুই শত, বাসগৃহ প্রাসাদ সদৃশ। র্যাহার শিক্ষকতা কায্যে ব্ৰতী আছেন, তাহার। উদ্যমশীল, স্বাৰ্থত্যাগী ও কৰ্ম্মপ্রবীণ। আর এই সকলের মূলে কেবলমাত্র ইচ্ছাশক্তিসহায় এক নারীহিতৈষিণী রমণী বৰ্ত্তমান থাকিয় সৰ্ব্বদা অকুপ্রেরণা দান করিতেছেন। মহেশচন্দ্র ঘোষ শ্ৰীবীরেশ্বর মুখোপাধ্যায় মহেশবাবুর সহিত আমার প্রথম পরিচয় হয় ১৯০৩ সালে । বাঁকুড়া জেলাস্কুলে শিক্ষকতার কার্য্য গ্রহণ করিয়া তথায় ঘাই । তখন র্যাকুড়া পৰ্য্যন্ত রেল হয় নাই । রাণীগঞ্জ পর্য্যস্ত রেলে আসিয়া তথা হইতে উটের গাড়ী করিয়া বাঁকুড়া যাইতে হইত। রাণীগঞ্জের নিকটেই দামোদর নদ ; উহা নৌকায় পার হইয়া পরপারে উদ্ভযানে চড়িতে হইত। সমস্ত রাত্রি সেই অদ্ভূত গাড়ীতে বসিয়া বসিয়া ও ঢুলিয়া ভোরবেলায় বাকুড়াম পৌছিতে হইত। পথে কোনও সাকে যদি কে-মেরামত থাকিত, তাহা হইলে সেখানে নামিম হাটিয়৷ নদী পার হইতে হইত। মহেশবাবু তখন আমারই মত একজন সহকারী শিক্ষক ছিলেন ; বেতন ৫০ । বাকুড়ায় স্কুলডাঙ্গায় যেস্থানে ব্রাহ্মসমাজ আছে, তাহারই ঠিক স্থপর পার্থে একটা বাটিতে কয়েকটি স্কুলের ও কলেজের ছাত্র ও অধ্যাপক মিলিয়া একটি মেস , করিয়াছিলেন। আমিও তথায় আশ্রয় পাইলাম । এইখানে থাকতে মহেশবাবুর সহিত ঘনিষ্ঠত হয় এবং তাহ ক্রমে আকৃত্রিম বন্ধুত্বে পরিণত হইয়াছিল। আমরাও তখন নুতন কলেজ ছাড়িয়া বাহির হইয়াছি ; অধ্যয়ন পৃহা তিরোহিত হয় নাই। তাই এই সহকৰ্ম্মীকে বিদ্যাখাঁর মত অধ্যয়ননিরত দেখিয়া সহজেই উহার দিকে আকৃষ্ট হইলাম। শুনিলাম মহেশবাবু ব্রাহ্ম। প্রথমত: মনে একটু খট্কা লাগিল ; কিন্তু ক্রমশঃ তাহার সদ্ব্যবহারে ও চরিত্রমাধুর্য্যে ঐ দ্বিধাভাব দূর হইয় তাহার প্রতি গভীর শ্রদ্ধার উত্ৰেক হইল। সেই ব্রহ্মচারী নিরামিষাশী, একাহারী, কৃশকায় লোকটিকে বাঁকুড়ায় সকলেই অত্যন্ত শ্রদ্ধার চক্ষে দেখিতেন । মহেশবাবুর সত্যনিষ্ঠ অসামান্ত ছিল । তাহার মুখে শুনিয়াছি, তিনি প্রথমে প্রাইভেট স্কুলে মাষ্টারী করিতেন— রামপুরহাট বা নলহাটি। স্কুলের ইনস্পেক্টর স্কুল পরিদর্শন করিতে আসিয় তাহার কায্যকলাপে অত্যন্ত সন্তুষ্ট হন এবং তাহাকে গবর্ণমেণ্ট স্কুলে নিযুক্ত করিবার জন্য দরখাস্ত করিতে পরামর্শ দেন এবং উক্ত ইনেস্পেক্টর বাৰু বলেন, যে, এ বিষয়ে তিনি যথাসাধ্য সাহায্য করিবেন। মহেশবাবুর বয়স তখন পচিশ বৎসর অতিক্রম করিয়াছে। বন্ধুগণ র্তাহাকে তাহার বয়স পচিশ বৎসর অপেক্ষ কম লিখিতে বলেন এবং র্তাহারা এই বলিয়া ভয় দেখান, যে, বয়সে না ফুলাইলে সরকারী চাকুরি কিছুতে পাওয়া যাইবে না। মহেশরাবু কিছুমাত্র বিচলিত না হইয় তাহার প্রকৃত বয়স দরখাস্তে লিখিলেন। দরখাস্ত খামে মুড়িয়া ডাকবাক্সে ফেক্সিবার পূৰ্ব্বে বন্ধুগণ আর একবার চেষ্টা কৰ্বিলেম । কিন্তু সত্যসন্ধ দরিদ্র মহেশবাবু তাহাতে ক্ষেপ না