পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩৮৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

e¢९ ཨ་ཊི་ལཱ་ হাজারীবাগে তাহার যে কত বই দেখিয়াছি তাহদের স্বরূপ বা মূল্য নির্ণয় করা আমার সাধ্যায়ত্ত নহে। SOBO প্রথম দেখি ও র্তাহার সহিত পরিচয় হয়। তিনি তখন এলাহাবাদ কায়স্থ পাঠশালায় কাৰ্য্য করিতেন।" তিনিও পুস্তক পাঠ ও পুস্তক খরিদ র্তাহাকে নেশার মত মধ্যে মধ্যে মহেশবাবুর বাসায় আসিতেন ; এবং সেই সময়ে পাইয়াছিল। বাকুড়ায় আমি দেড় বৎসর ছিলাম ; তখন দেখিয়াছি যে, তাহার সামান্ত আয় হইতে সঞ্চয় করিয়া প্রতিমাসে দু-একখানি পুস্তক ক্রয় করিতেন। পরে দেখিয়াছি বিলাত হইতে প্রতিমাসে অনেকগুলি করিয়া পুস্তক আনাইতেন । বাঁকুড়ায় থাকিতে তিনি মধ্যে মধ্যে মধ্যবাংলার পরীক্ষক নিযুক্ত হইতেন । একবার উহার পারিশ্রমিকস্বরূপ পঞ্চাশ-যাট টাকা পান ; ঐ টাকায় সে-বার মনিয়ার উইলিয়মূসের ইংরেজী সংস্কৃত অভিধান ক্রয় করেন। ঋগ্বেদ সম্যকরূপে বুঝিবার জন্য তিনি পাণিনি পড়িতে আরম্ভ করেন ; এবং এলাহাবাদের পাণিনি আপিস্ হইতে ৪০ টাকায় পাণিনি ক্রয় করেন। এ সকল দৃষ্টান্ত দিবার কারণ আর কিছুই নহে ; তবে আমাদের দেশের যাহারা বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃতবিদ্য এবং অর্থবান, তাহারা র্তাহাদের আয়ের কত অংশ পুস্তকক্রয়ে ব্যয় করেন তাহ কষিয়া দেখিবেন । বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রীধারীকেই আমরা কৃতবিদ্য বলিয়া থাকি ; কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রী কি বিদ্বান করে ? সে কেবল বিদ্বান হইবার পথ দেখাইয় দেয় । এই যে বিদ্বান হইবার, জ্ঞানলাভ করিবার চেষ্টা র্তাহার সঙ্গের সার্থী ছিল । রবাট ব্রাউনিঙের কবিতা অতিশয় দুৰ্ব্বোধ্য। হাজারীবাগে গিয়া দেখিলাম তিনি ইংরেজী সাহিত্যের অনুশীলন করিতেছেন। শেক্সপীয়ার, রবাট ব্রাউনিং, প্রভৃতি শেলি, কীটুস, ওয়াডসওয়ার্থ প্রভূতি কবিদের কবিতা পাঠ করিতেছেন দেখিলাম । বলিলেন, দিনকতক দর্শন কমাইয়। ইংরেজী সাহিত্য পড়িয়া লই। গীত র্তাহার কণ্ঠস্থ ছিল ; এবং গীতা সম্বন্ধে তাহার অভ্যস্ত সূক্ষ্ম দর্শন ছিল । 'প্রবাসীর পাঠকগণ অনেক সময় তাহার পরিচয় পাইয়াছেন । র্তাহার পুস্তাকাগারে গীতার প্রায় কুড়িটি বিভিন্ন সংস্করণ ছিল । বাইবেল সম্বন্ধেও তাহার অমুসন্ধিৎসা কম ছিল না। মূল গ্রীক হইতে নিউ টেষ্টামেন্টের স্থানে স্থানে যে কত পরিবর্তন হইয়াছে তাহা তিনি "মডার্ণ রিভিউ এ অনেকবার দেখাইয়াছেন । বাঁকুড়ায় মহেশবাবুর বাসাতেই প্রবাসীর রামানন্দবাবুকে কথাপ্রসঙ্গে প্রবাসীকে কলিকাতায় আনিবার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। মনে আছে, আমি রবার্ট ব্রাউনিঙের ভক্ত শুনিয়া রামানন্দবাবু আমাকে বলেন, “তাহ হইলে ত আপনার sièfar aftörtofissi (Browning Cyclopaedia) থাকা উচিত ।” তৎপরে আমি ঐ পুস্তক ক্রয় করি। আমি যখন "ল-পাস করিয়া স্কুগের শিক্ষকতা ছাড়িয়া বাকুড়া ত্যাগ করিব শুনিলেন, তখন রামানন্দবাবু বলিলেন, ‘এবার আপনাকে ‘প্রবাসীতে লাগাইয়া দিব।” কিন্তু হায়, সে সৌভাগ্য আমার হয় নাই । রামানন্দবাবুর এ সমস্ত সামান্য বিষয় মনে থাকা সম্ভব নহে। কিন্তু আমার মনে বাকুড়ার স্মৃতির মধ্যে র্তাহার চিত্র উজ্জল হইয়া আছে । যখনই কোনও সাহিত্যিক দেখিয়াছি, প্রাণের টানে তথায় ছুটিয়া গিয়াছি। কিন্তু ভাগ্যবশে যথোপযুক্ত সাহিত্যসেবা করিবার স্থযোগ এ জীবনে হয় নাই। মহেশবাবুর বাসায় আর একজন সা িত্যিককে দেখিয়াছিলাম—তিনি ঔপন্যাসিক শ্ৰীঅবিনাশচন্দ্র দাস । র্তাহার বাড়ি ছিল বাকুড়ার সংলগ্ন “নৃতন চটী” নামক পল্লীতে । মহেশবাবু হাজারীবাগ হইতে প্রবেশিক পাস করেন এবং হাজারীবাগের স্কুলেই কাৰ্য্য করিতে করিতে অবসর গ্রহণ করেন। হাজারীবাগের ওকনী নামক পল্লীতে র্তাহার ভাগিনেয়ীর গৃহে তিনি . বাস করিতেন। ঐ ভাগিনেয়ীর স্বামী পণ্ডিত ধীরেন্দ্রনাথ চৌধুরী বেদাস্তবাগীশ, এম্-এ। মহেশবাবুর মুখে শুনিয়াছি ঐ বাড়িটি তাহারই তত্ত্বাবধানে নিৰ্ম্মিত হয়। ধীরেনবাবু কলিকাতায় থাকেন। সময়ে সময়ে হাজারীবাগ আসেন। গত ১৩৩৫ সালের পূজার বন্ধে হাজারীবাগ যাইব মনস্থ করিয়া মহেশবাবুকে একটি থাকিবার স্থান সন্ধান করিতে লিখি। আমি একাই যাইব জানিয়া তিনি তাহার বাসায় থাকিব র জন্ত বারংবার অন্তরোধ করিতে লাগিলেন ; বাসায় কেবল তিনি ও র্তাহার দিদি – বয়স ৭০ বছরের বেশী । অনেক অসুসন্ধান করিয়া অন্তস্ত্র আমার আহারের ব্যবস্থা করিয়া দিলেন। মহেশৰাবুর এই দিদি বরাবর মহেশবাবুর