পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩৯৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

একজোড়া জুতা শ্ৰীনরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী সেকালে বড়লোকদের ঘুম ভাঙাবার জন্তে নাকি বৈজ্ঞালিক গানের ব্যবস্থা ছিল। এখন তার স্থান নিয়েছে এলাম ঘড়ি। অজিতের কিন্তু এ-দুয়ের কোনটারই দরকার নেই, কারণ প্রত্যহ ভোর না হতেই পাশের বাড়ির কলতলায় ভাড়াটে ও বাড়িওয়ালার মেয়েদের মধ্যে স্বাধিকার স্থাপনের প্রচেষ্টায় যে মৃদু বিতর্কের স্বষ্টি হয় সেটা ঠিক সঙ্গীতরসাপ্রিত না হলেও ঘুমভাঙানোর পক্ষে অব্যৰ্থ। আজ রবিবার ; আপিসের তাড়া নেই। একটু বেলা পৰ্য্যন্ত আরাম করলে কোনো ক্ষতি ছিল না, কিন্তু উপায় কই । অজিত এই বলে আক্ষেপ করতে করতে উঠে পড়ল যে, তার সজীব টাইমপীস একদিনের জন্তও স্লো যেতে জানে না । - ঘরের মধ্যে দু-বার পায়চারি করে ঘুমটা ভাল করে ছেড়ে গেলে অজিত ষ্ট্রোভ জালতে বসল। ষ্টোভ জেলে চায়ের জলট চাপিয়ে দিলে, তার পর টুথপাউডারের একটা বাহারি খালি শিশির ভেতর থেকে খানিকট ছাইয়ের গুড়া বঁHহাতের তেলোর উপর ঢেলে ডানহাতে বুরুশটা নিয়ে নীচে নেমে গেল । - কলতলা থেকে ফিরে এসে চাটুকু তৈরি করে নিতে নিতে মনে পড়ে গেল আজ আবার বিকালে তার এক বন্ধুর বাড়ি নিমন্ত্রণ আছে। বন্ধুটি সম্রান্ত ঘরের লোক এবং অপর নিমন্ত্রিতদেরও অধিকাংশই সেই শ্রেণীর। স্বতরাং বেশভূষার একটু আয়োজন করা চাই। আয়োজন আর কি, কাপড় একটা কাচাই, কিন্তু ভাল জামা তার একটাও নেই। সেই মান্ধাতার আমলের একটা তসরের পাঞ্জাবী, তাও আস্তিনের উপর সেদিন একটা দাগ লেগেছে । না কাচিয়ে পরা চলে না। কিন্তু খোপার বাড়ি থেকে সাফ করিয়ে নেওয়ারও সময় নেই। হাতে পয়লা থাকলে একটা জামা কিনে জানা যেত কিন্তু মাসের শেষাশেষি কোন কেয়াশীরই বা পকেট ভারি থাকে। ঘরেই কেটে নিতে হবে এই জামাট । একটা পেয়ালাম খানিকট চা নিয়ে সে খেতে স্বাবে এমন সময় পাশের ঘর থেকে রমেন এসে ঢুল। অজিত বাকি চ'-টা একটা পেয়ালাম ঢেলে রমেন যাতে না দেখতে পায় এমন করে দু-ফোটা গোলাপজল মিশিয়ে পেয়ালট তার দিকে এগিয়ে দিলে । 曾 - চাষের পেয়ালা চুমুক দিতে দিতে রমেন বলে উঠল,— এটা কি চা হে? গোলাপের গন্ধ পাচ্ছি যেন ? - অজিত গম্ভীর হয়ে বললে,-ই্যা ওটা রোম-পিকো । এখানে পাওয়া যায় না, চা-বাগান থেকে একেবারে বিলাত চলে যায়। খুব দামী জিনিষ। —ত তুমি যোগাড় করলে কোখেকে ? — আমার এক জাষ্ট্ৰীয় চা-বাগানের ম্যানেজার কিনা ; সেখান থেকে সে দু-পাউণ্ড পাঠিয়ে দিয়েছিল। —আমায় দিও ত দু’টে— —এখন আর কোথেকে দেব, আজই শেষ হয়ে গেল যে | —যাকৃ, তবে আর কি হবে । ই ভাল কথা, আজ যে সাতারের প্রতিযোগিতা আছে সে-কথাটা একেবারেই ভুলে গিয়েছিলুম। চল না যাবে দেখতে ? তোমার ত ছুটি রয়েইছে । —না ভাই, এখন আর আমার বেরুবার উপায় নেই, এক জন লোকের আসবার কথা আছে । তার জন্যে অপেক্ষ করতে হবে। —থাকৃগে, তবে আমিও যাৰ ন৷ ঐ ভীড়ের মধ্যে, তার চেয়ে বরং তোমার সঙ্গে খানিকট গল্প করে যাই ।... অজিত ভাবলে,...ভাল বিপদ ত, এ যে কাটালের আটার মত ছাড়তেই চায় না! এদিকে কত কাজ রয়েছে— দাড়ী কামান, জামায় সাবান দেওয়া, জুতা বুরুশ করা, এসব করব কখন i আচ্ছা দাড়াও, তাড়াবার বন্দোবস্ত করছি । ফল করে লে রমেনের কাছে পাঁচটা টাকা ধার চেয়ে