जकि ՀՖ খাজাইন দিয়া স্বরধবাবুকে চুপে চুপে কি বলিয় তাহার কী লইয়া প্রেস্থান করিলেন। আমি কিশোরকে ঘরের বাহিরে পাইয়া জিজ্ঞাসা করিলাম, “ইনি কি বললেন আপনি স্পষ্ট করে বলুন " কিশোর বলিল—"লাড়ীর অবস্থা খুব খারাপ, ডাক্তার ষ্টিমুলেন্ট দিয়েছেন, এতে ক্রমে ভাল হতে পারে।” আমি বলিলাম—“তবে স্বরথ বাবু ডাক্তার এখানে থাকুন।” কিশোর বলিল---“ষ্ঠ, তাকে রাখাই উচিত, আজ রাত্রিটা বড়ই আশঙ্কাজনক ।” - দাদা আমাদের কথা শুনিতেছিল। সে বলিল,— “আপনি আর কি পরামর্শ দেন ?” কিশোর বলিল- ‘ ভাক্তারের যা সাধ্য তা-ত করাই হচ্ছে। এখন ঈশ্বর ভরসা।” এই কথা শুনিয়া আমি বঁাদিয়া ফেলিলাম। কিশোর বলিল “আপনি উতলা হবেন না। মা'র কাছে গিয়! বন্ধন স্বরথ বাবুর কাছে যাই । তিনিও মাঝে মাঝে এসে নাড়ী দেখবেন । ঔষধ খাওয়ানোর প্রায় দুই ঘণ্টা পরে মা একবার চক্ষু মেলিয়। চাহিলেন । তাহার যেন ছ’স হইয়াছে বোধ হইল । তখন কিশোরকে ডাকিলাম, ডাক্তার বাবুও আসিলেন । দাদ ও শঙ্কর আসিল । ডাক্তার নাড়ী পরীক্ষা করিলেন। মা চক্ষু চাহিয়া অতিক্ষীণ স্বরে বলিলেন, “জল ।” আমি তার মুখে এক চামচে জল দিলাম, তিনি আমার মুখের দিকে চাহিয়া বুহিলেন, তাহার দুই চক্ষু দিয়া দুই ফোটা জল গড়াইয়া পড়িল। আমি আঁচল দিয়া চক্ষু মুছিয়া দিলাম।” ম! আবার চক্ষু মেলিয়া চারি দিকে তাকাইলেন, কাহাকে যেন খুঁজিতেছেন, পরে কিশোরকে দেখিতে পাইয় তাহার পানে চাহিয়া রহিলেন, তাহার মুখ ধেন উজ্জল হইয়া উঠিল। তিনি ইসারায় কিশোরকে কাছে ডাকিলেন । কিশোর কাছে আসিয়া দাড়াইতেই ক্ষীণ কণ্ঠে বলিলেন, “বাবা, নীরকে তোমার হাতে সঁপে দিয়ে গেলুম।” এই বলিয়া আবার চক্ষু মুদিলেন। আমি তাহার কথা নিয়া কানিতে কাদিতে বাহিরে গেলাম। ডাক্তার বাবু আর সকলকে বলিলেন, “আপনার আর ভড় করবেন না, বাহিরে যান।” তখন দা ও শঙ্কর বাহিরে গেল। ডাক্তার বাৰু আবার নাড়ী দেখিলেন, আমি আবার ঘরে গিয়া শয্যাপার্থে মায়ের মুখের দিকে তাকাইয়া দাড়াইয়া রহিলাম। কিশোর তফাৎ হইতে দেখিতে লাগিল। কিছুক্ষণ পরে ডাক্তার বাবু উঠিয়া বাহিরের ঘরে গিয়া বসিলেন। রাত্রি প্রায় সাড়ে এগারটার সময় আমি টের পাইলাম, মা যেন জোরে জোরে নিঃশ্বাস ফেলিতেছেন। আমি দাদাকে ডাকিলাম, দাদা ও কিশোর আসিল । কিশোর আসিয়া নাড়ী দেখিয়া -ডাক্তার বাবুকে ডাকিয়া আনিল, তিনি নাড়ী পরীক্ষা করিয়া বলিলেন---“নাড়ী পাওয়া যাচ্ছে না, শ্বাস উঠেছে ” এই বলিয়া তিনি বাহিরে গেলেন। কিশোর ও দাদা তাহার সঙ্গে গেল। আমি ইহার অর্থ কি বুঝিতে না পারিয়া ভয়ে নিতান্ত অভিভূত হইয়া বসিয়া রহিলাম। কিছুক্ষণ পরে দাদা আসিয়া বলিল—“ডাক্তার ব’লে গেলেন, আর রক্ষা নেই।” এই বলিয়া দ্বাদ কাদিয়া ফেলিলেন । আমিও দাদার কথা শুনিয়া হাউ হাউ করিয়া কাদিম উঠিলাম। আমাদের কাল্প শুনিয়া কিশোর ও শঙ্কর আসিল । তাহারা দাদাকে ধরিয়া বাহিরে লইয়া গেল। পরে কিশোর আসিয়া আমার কাছে দাড়াইয়া আমাকে বাহিরে ঘাইতে বলিল। আমি উঠিলাম না, মা’র গলা জড়াইয়া ধরিয়া কাদিতে লাগিলাম। প্রমীলাও অশ্রুবিসর্জন করিতে লাগিল । ক্রমে মায়ের অবস্থা আরও খারাপ হইতে লাগিল । আমরা সকলে তাহার চারি পাশে বসিয়া অশ্রুবিসর্জন করিতে লাগিলাম। রাত্রি একটার সময় সব শেষ হইল, আমার স্নেহময়ী জননী আমাকে অকুল সাগরে ভাসাইয়া প্রস্থান করিলেন । < =ૌજ્ઞ શ્વક কিশোরের কথা S. এই অল্প কয়েক দিনের মধ্যে যে ঘটনা ঘটিল, তাহ পূৰ্ব্বে কথন স্বপ্নেও ভাবি নাই। কোন এক অচিন্ত শক্তির দ্বারা পরিচালিত হইয়া, যাহাঁদের সঙ্গে আমার কোন দিন জালাপ
পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪১
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।