- ..ءم می دة ۔ مصر جديداني ‘It করিয়াছেন। যাহারা এই সমিতির সভ্য হুইবে তাহাদিগকে কতকগুলি প্রতিজ্ঞায় স্বাক্ষর করিতে হুইবে । সেগুলি এই— ১। আমি নারীজাতির সর্বপ্রকার হিতসাধনকে জীবনের ব্ৰত বলিয়া গ্রহণ করিলাম । ২। নারী মাত্রেরই মানুষের সূৰ্ব্বপ্রকার অধিকার আছে, ইহা আমি মানিয়া লইতেছি। ৩। আমি নিজের স্বার্থহানি করিয়া কোন পুরুষের অধীনতা স্বীকার করিব না। ৪। আমি যতদূর সম্ভব স্বাবলম্বনবৃত্তি গ্রহণ করিব। ৫ । আমি যতদূর সম্ভব দেশহিতকর কার্ধ্যে আত্মনিয়োগ করিব । আমি এই সব গুনিয়া বলিলাম,-“শঙ্কর-দা নারীপ্রগতি সমিতির প্রতিজ্ঞাপত্র ত শুনলাম, কিন্তু এতে ত নারীর এরূপ কোন প্রতিজ্ঞ নেই যে আমি বিয়ে ক’রব না।” শঙ্কর বলিল—“স্পষ্ট সেরূপ কোন প্রতিজ্ঞা নেই বটে, তবে পুরুষের অধীনতা স্বীকার করবে না, এই প্রতিজ্ঞ ত আছে । এর মানেই বিয়ে না করা।” আমি বলিলাম—“কিন্তু পুরুষের যদি প্রতিজ্ঞা করে যে, তার নারীকে অধীনে না রেখে মাথায় ক’রে রাখবে, তবে ত বিয়ে করবে ?" শঙ্কর বলিল—“প্রতিজ্ঞা ত অনেক সময় অনেকেই করে, তা পালন করে কয় জন ?” আমি বলিলাম---“আচ্ছ বেশ । এতে পুরুষদের জাহুল্লামে যাবার কোন কারণ নেই। নারীরা যদি চিরকুমারী থাকেন, তবে পুরুষেরাও চিরকুমার থাকবে। আর শঙ্কর-দ৷ তুমি যখন নারীদের চ্যাম্পিয়ন অর্থাৎ পাগু হয়েছ, তখন আশা করি তুমিহ এ বিষয়ে পথ দেখাবে।" শঙ্কর হাসিম বলিল—“আমাকে কিন্তু শীঘ্র বিয়ে করবার জন্যে বাড়ি থেকে তাগিদ আরম্ভ করেছে । আমি তবে এখন উঠি । কালই আবার আমাকে এটা নিয়ে আসতে হবে।” এই বলিয়া শঙ্কর বিদায় হইল। শঙ্করের সঙ্গে নীরু দেবীর যেরূপ মাখামাপি ভাব দেখছি, আমার বোধ হয় সে নীরুকে ভালবাসে এবং সেজন্ত বাপমায়ের তাগিদ সত্ত্বেও বিয়ে করতে রাজী হচ্ছে না। কিন্তু নীরু দেবী কি তাকে বিয়ে করবেন ? তাহার এই নারীপ্রগতির সেক্রেটারী হওয়া ভাল হইল। সেক্রেটারী হইয়া এখন তিনি শঙ্করকে হঠাৎ বিবাহু করিতে পরিবেন না। স্বতরাং সে-সম্বন্ধে এখন নিশ্চিন্ত থাকা যাইতে পারে। কিন্তু তাহাতে আমার স্থবিধা কি হইবে ? আমি কি তবে আলেয়ার পশ্চাতে ধাবিত হইতেছি ? আমার এখন দূরে পড়িয়া থাকা উচিত নহে। স্বকুমার যথার্থই বলিয়াছে, আমার এখন নিলিপ্ত থাকা ভাল নয়, মধ্যে মধ্যে দেখাসাক্ষাৎ করা আবশ্যক। " - ইতিমধ্যে এক বিষম বিপৰ্য্যয় উপস্থিত হইল। ভারতের রাজনৈতিক গগন কিছুকাল যাবৎ ঘনঘটাসমাচ্ছন্ন হুইয়াছিল। অকস্মাৎ বজ্রপাতের ন্যায় মহাত্মা গান্ধীর আইন-অমান্ত নীতি ঘোষিত হইল। দেশের শত শত নরনারী লবণ প্রস্তুত, বিলাতী জিনিষ বয়কট ও মাদকদ্রব্যের দোকানে পিকেট করিয়া কারাবরণ করিতে লাগিলেন । সমগ্র ভারতে এক মহা আন্দোলনের সাড়া পড়িয়া গেল। গুদ্ধান্তঃপুরবাসিনী ভদ্রমহিলাগণ পৰ্য্যস্ত জাতীয় পতাকা হস্তে কলিকাতার রাজপথে বাহির হইলেন। মহাত্মা গান্ধীর অহিংস-নীতি অবলম্বন করিয়৷ এই সকল নারীবাহিনী বিলাতী কাপড়ের ও মদ গাজার দোকানে পিকেটিং আরম্ভ করিলেন। আমি ইহার মধ্যে একদিন প্রাতঃকালে স্বকুমারদের বাড়িতে গেলাম। সুকুমার আমাকে লাইব্রেরী-ঘরে বসাইল। নীরু দেবী প্রমীলার সঙ্গে সেখানে আসিলেন। আমাকে দেখিয়া তিনি বলিলেন,--“এই যে আপনি এসেছেন। ভাল আছেন ত ?” আমি ছ বলিয়া মাথা নাড়িলাম। তিনি বলিলেন—“আপনি দেশের কোন খবর রাখেন, ন। কেবল কলেজ আর মেস-মেস আর কলেজ করেন ?” আমি হাসিয়া বলিলাম-“তা'ও করি, আবার দেশের খবরও কিছু কিছু রাখি।” তিনি বলিলেন—“মহাত্মা গান্ধী ইতিপূৰ্ব্বে গবৰ্ণমেন্টের সঙ্গে নন-কো-অপারেশন ঘোষণা করেছিলেন, এবার সিভিল ডিস্ওবিডিয়ান ঘোষণা করেছেন, জানেন ত ? এ-সম্বন্ধে কলেজের ছাত্র ও ছাত্রীদিগের কি কৰ্ত্তব্য তা ভেবে দেখেছেন ?” আমি বলিলাম---“না, এখনও এ-সব বিষয় নিয়ে আমি কোন চিন্তু করি নাই ।”
পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪৫
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।