পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪৫২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8>२ ---. রোগে পড়ে চিকিৎসা করাতে আসে, তবে তাকে চিকিৎসা করতেই হবে। কোনও হাসপাতাল অস্বীকার করতে পারবে না। চিকিৎসা করে পরে গবর্ণমেণ্টকে তাদের খরচের জন্ত দাবি করতে হয়। অবশু গবর্ণমেণ্ট হাসপাতালকে তার খরচ দেয় বটে, তবে সে এত কম যে তাতে হাসপাতালের লোকসান ব্যতীত লাভ কখনও হয় না। লাভ হউক, লোকসান হউক রোগীকে ফেরৎ দেওয়া অসম্ভব। টাকা খরচের বেলায় আমেরিকার সঙ্গে বোধ হয় আর কোনও দেশের তুলনা করা চলে না। এদের আছে অগাধ, খরচ করেও অফুরন্ত রকমে। স্বাস্থ্যবিভাগ অজস্র টাকা খরচ করছে—তার হিসাব দিতে গেলে কোটার অঙ্কে যেতে হবে । কিন্তু সামান্য এই পাড়ায় পাড়ায় শিশু-স্বাস্থ্য সম্বন্ধে এর যা খরচ করছে সে-ও কিছু কম নয়। সাধারণতঃ কেন্দ্রগুলি গরিব পাড়াতেই খোলা হয়। তাই ভাড়া কম। গড়ে মালিক পঞ্চাশ ডলার মাত্র ভাড়া দিতে হয় । ভাড়া ছাড়া ডাক্তার ও নাসের বেতন, অন্তান্ত লোকের বেতন, আলো, টেলিফোন, চেয়ার, টেবিল, ওজন করা, দুধ দেওয়া ইত্যাদি নানা রকমের খরচ আছে। গবর্ণমেণ্ট এ-সমস্তই বহন করে। - এ-দেশের লোক সাধারণতঃ বিনামূল্যে কিছু নিতে চায় না বা ভিক্ষা করা পছন্দ করে না। ষতটা সম্ভব সকলে স্বাবলম্বী হতে চায়—যদি নিতান্ত অক্ষম না হয়। দুধের ব্যবসায়ীরা ৰিনা লাভে এই সব কেন্দ্রে দুধ বিক্ৰী করে —অবশ্য শুধু শিশুদের ব্যবহারের জন্য। লোকেরাও অপেক্ষাকৃত কম দামে শিশুদের দুধ পেয়ে স্বধী হয়। প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্য হ’ল পাড়ার শিশুস্বাস্থ্যের উন্নতি করা। ডাক্তার ও নাসেরা সেইদিকেই সৰ্ব্বদা লক্ষ্য রাখেন। SనOBO সময়ে পরীক্ষা করা, টীকা দেওয়া, ওজন করা, উপযুক্ত খাদ্য ব্যবস্থা করা, শরীর ও ওজন হ্রাস-বৃদ্ধির হিসাব রাখা ইত্যাদি। কিন্তু স্বাস্থ্য ভাল রাখতে গেলে শুধু শিশু পরীক্ষা করলেই অনেক সময় হয় না। তার মা ও বাবা ও সংসারের অন্তান্ত লোকের স্বাস্থ্যপরীক্ষাও দরকার হয়। নাস এই সব ব্যবস্থা অতি স্বন্দর ভাবেই করে। আর্থিক অবস্থা খারাপ হ’লে বোর্ড অব হেল্থ নিজে সে ভার গ্রহণ করে। আসল কথা, স্বাস্থ্যোন্নতির জন্য যা-কিছু দরকার, টাকার অভাবে তা বন্ধ থাকে না । এই শিশুপ্রতিষ্ঠানের এবং স্থানীয় বোর্ড অব হেলথের সব কাজই বিনামূল্যে করা হয় ; কেননা, লোকের ট্যাক্স দিয়েই এই বোর্ড—এবং লোকের অন্ধথে বোড অব হেলথই ভার নেয়। এই রকম উপায়ে গবর্ণমেণ্ট যে স্বাস্থ্য বিষয়ে অনেক ভাল কাজ করেছে ও করছে সে-বিষয়ে গৰ্ব্ব করার মত এদের যথেষ্ট কারণ আছে । শিশুমঙ্গলের জন্য আমেরিকা যা করছে, আমরা যদি তার খানিকটাও করতে পারি তবে আমাদের অসম্ভব শিশুমৃত্যুসংখ্যা অনেকটা কমবে, সে-বিষয়ে সন্দেহ নেই। ভারতের ভবিষ্যৎ আশা ভরসা, স্বাস্থ্য মুখ শাস্তি সবই নির্ভর করছে আমাদের শিশুদের উপর। যদি তাদের মানুষ হতে দেখতে চাই, তবে এখন থেকে সব রকমে তাদের যত্ব নিতে হবে। তাদের স্বাস্থ্য ভাল রাখার জন্ত আমাদের অনেক স্বার্থ ত্যাগ করতে হবে, অনেক অর্থ খরচ করতে হবে । তা নইলে আমরা এখন যেমন কোনও রকমে বেঁচে আছি, তারাও পরে এমনি সদাশঙ্কিত প্রাণে মরার মত বেঁচে থাকবে । \ 'A