পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪৫৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পৌষ পয়াতীরে তারপর পূর্ণিমা নিশীথে জ্যোংঙ্গাস্বাত পদ্মা যখন রূপালি বসনে সাজিয়ী ভূবনভোলান রূপ ধবে তখন মুগ্ধ রেব মণীশের মতই পুলকিত চিত্তে বলিয়া ফেলে, ‘সত্যি, কি সুন্দর।" মণীশ হাসে, বলে, “চিরযৌবনা পদ্মা-ষোড়শীর মতই রূপসী,” তারপর রেবার কানের কাছে মুখ আনিয়া বলে, “তা বলে ভয় নেই গে, যতই রূপসী হোক না ও তোমার সতীন নয়।” রেবা হাসিয়া মুখ বাকায় । মণীশ বলে, “সত্যি, পদ্ম যে আমার কতকালের সঙ্গিনী জান না । ওর তীরে বসেই তোমার জন্ত আরাধনা করেছি যে—তাই না এমনটি পেলুম ।” হেমস্তের স্বর্ণরঞ্জিত পল্লীশ্ৰী যখন আপনার সবুজ শস্তসম্ভার লইয়া চোথে মায়াতুলিকা বুলায়, সেই সময়ে রেব আবার পিত্রালয় হইতে শ্বশুরালয়ে আসিল। এখন আর পদ্মা তাহার ভীতি জাগায় না । সেও প্রিয় চোখেই দেখে। তাই সহজেই এবার সকলের মাঝখানে সে আপনার স্থান করিয়া লইল । মণীশ এবার আসে নাই। শাশুড়ীর উদার স্নেহে শাসনের বন্ধন ছিল না বলিয়া আদরিণী কন্যার মতই রেব দেবর-ননদের দলে মিশিয়া গেল। বধূর সলঙ্গ ভাব তাহার মনে ঠাই পায় না বলিয়া ছুটাছুটি করিয়া খেলিতে তাহার বাধে না। এইরূপে সে একদিন কাণামাছি হইয়া বাহিরে গমনোদ্যত শ্বশুরকে ধরিয়া ফেলিয়া সকলের অশেষ পরিহাসের পাত্রী হুইল। শাশুড়ী মৃদ্ধ ভংগন করিয়া বলিলেন, “দুষ্ট মেয়ে, তুমি বড় দুরন্ত হচ্ছ মা আজকাল।" বধূর তাঙ্গতেও । চৈতন্ত নাই। তাহার শৈশবচাঞ্চল্য এখানে যেন মুক্তি পাইয়া দ্বিগুণ হুইয়া উঠিয়াছে। তাই কনিষ্ঠ দেবর নরুর কাছে ডালা পেয়ার চাহিদা না, পাইলে সে নিজেই গাছে চড়িয়া ননদ রেণুকে আশ্চৰ্য্য করিয়া দেয়, তারপর চি-পাকা । পেয়ারায় অঞ্চল বোঝাই করিয়া, নরকে বলে, “না দিলে ত বয়েই গেল, সাধলেই গোমর বাড়ে। : শুধু গাছে চড়া নয়, খিড়ীর গুহুরে সে সীতারও কাটে, পাতারে রেণুর সমকক্ষ হইতে প্রাণপণ চেষ্টা করে। কিন্তু নিক্সলম্ব হইয়া ভালিবার কৌশলটুকু লেকিছুতে আয়ত্ত করিতে পারে না বলিয়া দাসীদের কলসী কাজিয়া বন্টার পর । ●●ー為● মণীশের মনমোহিনীকে । ঘন্ট। তাহাঙ্গের কাজের বাধা জন্মায়। তারপর সগৰ্ব্বে মণীশকে লেখে এখন আর আমি ভীতু নই। দেখবে, এবার তুমি এলে পদ্মায় সাতার কাটব ।” - ... : * মণীশ উত্তর দেয়, “তুমি সাহসী হয়েছ বেশ, কিন্তু এঅভাগার আর কোন আশা রইল না। ঈশান কোণে কালে মেঘের সঙ্গে বাতাস যদি প্রবল হয়, তুমি ত আর ভয় "خـ.aةt Cع কি রকম দুৰ্ব্বোধ্য চিঠি - রেবা নিঃশ্বাস ফেলিয়া ভাবে, “কি যে মানুষ বোঝা যায় না, ভয় পেলে বলবেন, ভীতু আবার সাহস হ’লেও—কাদুনী গাওয়া—” দোলের দিন রেবা এক কাও করিয়া বসিল। লঙ্ককে রং দিতে গিয়া সে নিজেই আপাদমস্তক রঞ্জিত হইয়া ভীষণ লাঞ্ছিত হইল। শেষে উপায়ান্তর না দেখিয়া অন্ত ফণী । অঁাটিয়া নক্লর পাঠগৃহের দ্বারের অন্তরালে লুকাইয়াছে, এমন সময় শাশুড়ী কি কাজে সে-ঘরে প্রবেশ করলেন, সঙ্গে সঙ্গে বধুর পিচকারীর সবটুকু রং তাহার বঙ্গে মিস্তি হইল। অজ্ঞানরুত অপরাধ এবং কতকটা পুত্রের দুটামী বুঝিয় রেবাকে তিরস্কার না করিলেও তিনি সেদিন গভীর হইয়াই রছিলেন। আর সস্তপ্ত রেবা র্তাহাকে তুষ্ট করিবার উপায় খুজিতে লাগিল। সকালে গৃহিণী নিতাইদাকে বাজারে পাঠাইবার সময় বলিতেছিলেন, “ছেলেরা কেউ খেতে চায় না, কি তরকারী যে তাদের দি, এচোড় যে কবে উঠবে---” হঠাৎ এই কথাটা মনে পড়িতেই রেবা উৎফুল্প হইয়া উঠিল। আমবাগানের ধারের কাটাল গাছটাম লে কাল দুইটি এচোড় দেখিয়াছে যে । অপেক্ষাকৃত আগে হইয়াছে বলিয়া বোধ হয় এখনও তাহ কাহারও নজরে পড়ে নাই। গাছটিও বিশেষ বড় নয়, গুড়ি হইতে অল্পপরেই গাছটি দুই ডালে বিভক্ত হইয়া গিয়াছে। রেব সেখানে অনায়াসেই উঠিম! এচোড় জানিয়া শাশুড়ীকে প্রশ্নঃ করিবে। ; • и বিকালের দিকে শাশুড়ী,বখন ভাড়ারের কাজে ব্যস্ত অবসর বুঝির রেব তখন "বাগানে গিয়া উপস্থিত হইল। তারপর গাছে চড়িয়া মাত্র একটি এচড় পাড়িয়াছে এমন সময় গৃহিণীর ভাগিনেয় বাগানের পথেই প্রবেশ করিয়া থমকিয় । দাড়াইল এবং যাদ্ধাকে চোর মনে করিয়াছিল সে তাহম্বের