পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কাত্তিক ' সেকালে পণ্ডিঙের জাম্বর રે છે বদান্যভার ফলে তাহার সভায় নানাদেশীয় পণ্ডিত সমবেত হইতেন একথা মনে করা বোধ হয় অসঙ্গত হইবে না। পঞ্চদশ শতাব্দীর প্রথমার্দ্ধে প্রসিদ্ধ আৰ্ত্ত ও নানাবিধ । কাব্যাদির টীকাকার বৃহস্পতি রায়মুকুট গোঁড়াবনীবাদব জলালউদ্দীনের নিকট হইতে ছয়টি উপাধি পাইয়াছিলেন। ‘রায় মুকুট" উপাধিদানের সময় বিশেষ আয়োজন করা হইয়াছিল। এই উপলক্ষে ঙাহাকে হাতীর উপর চড়াইয়৷ নানাবিধ বৈধ স্নান করান হুইয়াছিল। র্তাহাকে একগাছি হার দেওয়া হষ্টয়াছিল তাহাতে অনেক হীরামাণিক লাগান ছিল--তাঁহাতে তাহ ঝলমল করিতেছিল। তাহাকে যে কুগুল দেওয়া হইয়াছিল –তাহাও ঝকৃঝক্‌ করিত। দুই হাতে রতনচুর’ দেওয়া হইয়াছিল ; তাহাতে দশ আঙ্গুলে দশটি আঙটি এবং তাহাতে হীরা লাগান ছিল। দুইটি ছাতা দেওয়া হইয়াছিল, অনেকগুলি ঘোড়া দেওয়া হইয়াছিল '* শাস্ত্রের ও পাণ্ডিত্যের প্রতি উড়িষ্যার মহারাজ প্রতাপ রুদ্রদেবের প্রগাঢ় অনুরাগ ছিল। ‘ভক্তিবৈভব নামক নাটকের রচয়িত কবিডিণ্ডিম রাজগুরু জীবদেব তাহার নিকট হইতে আটটি স্বর্ণচামর, স্বর্ণ ছত্র ও ডিগুিম উপহার পাইয়াছিলেন If ইহা জীবদেবের নিজের কথা তিনি ভক্তিবৈভব নাটকের প্রস্তাবনায় এইরূপ লিথিয়াছেন। মনে হয়, তিনি বিশিষ্ট

  • বৃহস্পতি রায়মুকুটকৃত অমরকোষের পদচত্রিকানামী টাকার ভূমিকায়। এই টাকার পুথি ইণ্ডিয়া অফিস লাইব্রেরীতে আছে এবং তাহার বিবরণ ঐ লাইব্রেরীর ক্যাটালগের দ্বিতীয় খণ্ডের ৯৫৪-৬ সংখ্যক পুথির বিবরণমধ্যে আছে। ঐ বিবরণ অবলম্বনে হরপ্রসাদ শাস্ত্রী মহাশয় উপরিলিখিত বর্ণনা দিয়াছিলেন ; সাহিত্য-পরিষৎ-পত্রিকা | ( ۰نه .ې۶ ,eپه }vى

+ অষ্টে হাটকচামরাশি কনকচ্ছত্ৰং ডমডিডণ্ডিমং যো লঙ্ক, প্রথিতপ্রতাপবিভবরিত্রদেবারাৎ | ভক্তিষৈভৰ নাটকের একখানি পুথি এশিয়াটিক সোসাইটার গভর্ণমেণ্ট সংগ্রহে জাছে । সম্মানজনক উপহারগুলির কথাই উল্লেখ করিয়াছেন। কাৰ এবং রাজগুরু হিসাবে তিনি হয়ত রাজার এবং অন্তান্ত সম্পন্ন গৃহস্থের নিকট হইতে সাধারণ সাহায্যলাভে বঞ্চিত হন নাই । এই সেদিনকার কৃষ্ণনগরাধিপতি প্রসিদ্ধ জমিদার কৃষ্ণচন্দ্রের সভা বাংলার ব্রাহ্মণ পণ্ডিত সম্প্রদায়ের লীলানিকেতন হইয়া উঠিয়াছিল। পণ্ডিতদিগের মুখস্বাচ্ছদের জন্ত তিনি কিরূপ জাগ্ৰহান্বিত ছিলেন বুনে রামনাথের প্রতি র্তাহার ব্যবহারের সর্বজনবিদিত বৃত্তান্তই তাহার প্রমাণ। সম্পন্ন গৃহস্থ ও জমিদারদিগের ব্যয়ে পরিচালিত একাধিক চতুষ্পাঠী বৰ্ত্তমানকাল পর্যন্ত সেই প্রাচীন ধারা বাংলা দেশে অনেকটা অক্ষুণ্ণ রাখিয়াছে। তবে দুঃখের সহিত স্বীকার করিতে হয় যে বর্তমানে এই সমস্ত অনুষ্ঠানে আন্তরিকতার অভাব এবং তাহার স্থলে নিছক নিয়মরক্ষার ভাব অনেক ক্ষেত্রে দেখিতে পাওয়া যায়। তাই এই ধারা বর্তমান থাকিলেও পণ্ডিতদিগের অবস্থা এখন আর পূর্বের মত সচ্ছল নহে। অনতিপ্রাচীন কালেও কিন্তু রাজারাজড়াদের নিকট ইষ্টতে নানা অবসরে প্রচুর ও মূল্যবান উপহার পাওয়ার ফলে লক্ষ্মী-সরস্বতীর চিরবিরোধ সত্ত্বেও দেশের পণ্ডিত-সম্প্রদায়ের অবস্থা তেমন মন্দ হওয়া দূরে থাকুক- অনেক ক্ষেত্রে বিশেষ সচ্ছলষ্ট ছিল। প্রাচীন ভারতের ‘কুলপতিগণ দশ সহস্র ছাত্রের আহার বাসস্থান জোগাইতেন ; ইহা হইতে র্তাহাজের সম্পন্ন অবস্থার অনুমান করা অযৌক্তিক নহে। রাজশেখর তাহার কাব্যমীমাংসার কবিচর্যা প্রকরণে কবির দৈনন্দিন, চৰ্য্যার যে বিবরণ দিয়াছেন অভাবের গুরুভারে ক্লিষ্ট ব্যক্তির পক্ষে তাহী আদী সম্ভবপর নহে। তাহার বর্ণিত কবির গৃহ ও সাজসজ্জা আধুনিক যুগের মধ্যবিত্ত গৃহস্থের ও জনশনক্লিষ্ট সাহিত্যিকের কল্পনার বাহিরে। ইহা কি সে-যুগের পণ্ডিত-সম্প্রদায়ের আর্থিক অবস্থার ইঙ্গিত প্রদান করে না ? -