দেবীদাস রায়ের সিন্দুক শ্ৰীমনোজ বস্তু মাসখানেক মাত্র নিরুদ্দেশ থাকিয়৷ উমানাথ বাড়ি ফিরিয়াছে কাল রাত্রে । এত শীঘ্র ফিরিবার কারণ, মঠবাড়িতে মেলা লাগিয়াছে, ভাল ভাল কীৰ্ত্তনিষ্কার আসিয়াছে, বিশেষ করিয়া এবার সোনাকুড়ের বালক-সঙ্কীৰ্ত্তনের আসিবার কথা। খবরটা কাকপক্ষীর মুখে কি করিয় তাহার কানে পৌঁছিয়াছিল। বড় ভাই ক্ষেত্রনাথ দাওয়ায় বসিয়া সকালবেলার মিষ্ট রোদ সেবন করিতে করিতে একখানা দলিলের পাঠোদ্ধারের চেষ্টায় ছিলেন । দলিলটি বহু পুরাণে, পোকায় কাটা, জায়গায় জায়গায় ছিড়িয়া এমন পাকাইয়া গিয়াছে যে, এক একটা জট খুলিতেই একটি বেলা লাগে ..উমানাথ সোজা সেইখানে উঠিয়া তড়বড় করিয়া আপনার বক্তব্য বলিতে লাগিল । বিস্থিত চোখে ক্ষেত্রনাথ একবার মুখ তুলিয়া দেখিলেন। কথা শেষ হইলে প্রশ্ন করিলেন—জগদ্ধাত্রীর বাড়ি কবে গিয়েছিলে ? —কুড়ি-বাইশ দিন আগে । –হৃদয় ছিল সেখানে ? -F} } ই—বলিয় ক্ষেত্রনাথ চুপ করিম নিজের কাজ করিতে লাগিলেন। তারপর হাতের দলিল সযত্নে ভাজ করিম রাখিয়া বলিলেন—আমি জগদ্ধাত্রীর চিঠি পেয়েছি পরশুদিন । এখন তোমার ঐ বিশ দিনের বাসি খবর শুনে লাভালাভ নেই— দলিল বাক্সবন্দী করিয়া ধীরেন্বস্থে পরম নিশ্চিন্তভাবে তিনি তামাক ধরাইয়া বসিলেন । এবার বলিবার পাল৷ তাহার । কণ্ঠ চিরদিনই প্রবল, আজও তাহার অন্যথা হইল না। বাক্যের তুণ একেবারে নিঃশেষ হইয় গেলে ক্ষেত্রনাথ অন্ত কাজে চলিয়া গেলেন, তাহার পরেও উমানাথ সেখানে একইভাবে বসিয়া রহিল। ঘণ্টা দুই পরে বাড়ির মধ্যে গিয়া তরঙ্গিনীর সঙ্গে মুখোমুখি দেখা। তরঙ্গিনী ভালমানুষের ভাবে জিজ্ঞাসা করিল—বটুঠাকুরের সঙ্গে কি কথা হচ্ছিল ? অর্থাৎ এবার দ্বিতীয় কিস্তি। উমানাথ চুপ হইয়া রহিল। তরঙ্গিনী আবদারের ভঙ্গীতে মোলায়েম স্বরে বলিতে লাগিল - তা বল, বল না গো— মেয়েমানুষ, ঘরের কোণে পড়ে থাকি, কামাই-ঝামাই ক’রে এলে এদিন পরে, ভালমন্দ কত নিয়ে এলে, দেখে এলে, শুনে এলে—বল না দুটো কথা, শুনি— উমানাথ বলিল,—জগদ্ধাত্রী দিদি ওঁর দেশে ঘরে ফিরেছেন, তাই বলছিলাম দাদাকে--- । —গুরুকন্তে ? মন্তবড় খোসখবর, গামছা বখশিষ দিই ? তরঙ্গিনী হাসিয়া যেন গলিয়া পড়িতে লাগিল। গামছা হাতে সে মাথা মুছিতেছিল, সেইটা পরম পুলকে সে স্বামীর দিকে আগাইয়া ধরিয়া বলিতে লাগিল—পুরুষের ত মুরোদ হল নী যে, জন্মের মধ্যে পরিবারের হাতে একটা কিছু দিই এনে... তা আমি দিচ্ছি এই গামছা বখশিষ= মনে মনে আহত হইয়া উষ্ণকণ্ঠে উমানাথ বলিল,—গামছা বখশিষ_কেউ আমায় দেয় ন— তরঙ্গিনী তৎক্ষণাৎ স্বীকার করিক্ষা লইল—ন, তাও দেয় না । হাসিয়া কহিতে লাগিল—গামছা ত দেয় না, উত্তমমধ্যম দেয় কি-না ব’লো ত একদিন— উমানাথ এ কথায় একেবারে ক্ষেপিয়া গেল । --মহা মিথুকি তোমরা। বখশিষের কত শাল-দোশাল এনে দিচ্ছি এ যাবৎ, তবু বার বার ঐ কথা। উত্তম-মধ্যম নেয়...দিলেই হ'ল অমনি । ডাকো দিকি দশ গ্রামের সভা, ডাকো একবার এদিককার যত কবিওয়াল -- বলিতে বলিতে উত্তেজনার মুখে কবিতা বাহির হইয়া আসিল— হরেক কবি হরবোল!-- সবার উপর ময়র ভোলা, ষ্ঠার শিষ্য সহায়রাম, গুরুর পীয়ে কোটি গুপাম— । গুরু সহায়রামের উদ্দেশ্রে প্রণাম করিয়া অৰশেষে সে किक्षि६ *ाख श्ल ।
পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৫০
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।