পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৫০৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মাঘ . সিমলা কালীবাড়ি 8ఆక, অন্যত্র ভণিতা— উড়িয়া গোপাল দাস বনাম গোপাল উড়ের “ছেড়াচুলে গোঁর গদাধর পাদপদ্ম করি আশে r - ११ ‘কীৰ্ত্তন উজ্জ্বল কৈল স্ত্রী কিশোর দাসে । বকুলফুলে খোপা বেঁধেছ ? প্রেম কি ঝালিয়ে তুলেছ কবি হুবু, করিধিলে, হইয়া, কংহ প্রভৃতি শব্দ ব্যবহার করিয়াছেন । “কবিকর্ণ” (ইনি চৈতন্য-চন্দ্রোদয়কার কবিকর্ণপুর নন্‌) রচিত সত্যনারায়ণের পালাগুলি উড়িষ্যার ঘরে ঘরে সমাদৃত ; ইনি আত্মপরিচয় দেন নাই। তবে এর নাম শঙ্করাচার্য্য। পালাগুলির script কীৰ্ত্তনউজলের মত উড়িয়া।* বৈষ্ণব ধৰ্ম্মের ভাবাবেগ শিথিল হওয়ার পর বাংলা ধৰ্ম্মসাহিত্যে উড়িয়া পদকর্তাও আর দেখা দিল না ।

  • একটি পাল হইতে কিঞ্চিৎ নমুনা দিতেছি। পালার নাম মদগঞ্জ বিভ” পাল ।

“ফকির কহিলা দোহে শুন সাবধানে যেরূপ তোমার কৃষ্ণ হৈল বৃন্দাবনে । রাম রহমানে দোহে এক করি লেপ আমি সে গোবিন্দরাপ চক্ষু মেলি দেখ ॥” কিংবা "হায়রে দশা কি তামাস, বাসার জন্তে ভাবছ কেনে। হৃদকমলে দিতে বাসা, আশা করে কতই জনে” প্রভৃতি গানগুলি ধৰ্ম্মসাহিত্যের পর্যায়ে পড়ে না। প্রবোধচন্দ্রিকা’র গ্রন্থকার (র্যাহার লেখার-প্রসিদ্ধ নমুনা “উচ্ছলচ্ছিকরাত্যচ্ছ নিঝ রাস্ত কণাচ্ছন্ন হইয় অাঁসিতেছে” ) মৃত্যুঞ্জয় বিদ্যালঙ্কার মহাশয় নাকি উড়িয়া ছিলেন। তবে তিনি বাংলা ধৰ্ম্মসাহিত্যের জন্য কিছু লিথিয়াছেন কিনা জানি না। স্বৰ্গীয় রাও মধুসূদন রাও মহাশয় কয়েকটি ব্ৰহ্মসঙ্গীত বাংলায় রচনা করিয়াছিলেন।* ' 象

  • এই প্রবন্ধ রচনায় সাহায্য করার জন্ত আমি সহাধ্যায়ী বন্ধু স্ক্রপ্রতুলাননা সেন, বি-এ ও আমার কনিষ্ঠ ভ্রাতা মান সলিলকুমার মুখোপাধ্যায়, বি-এ এ দু-জনের নিকট ঋণী। প্রবন্ধ ছাপিতে দিবার পর রায় রামানন্দ, কিশোর দাদ ও আরও কয়েক জনের অপ্রকাশিত পদের সন্ধান কটকে পাইয়াছি ।

সিমলা কালীবাড়ি ঐস্থধীরচন্দ্র সরকার ইংরেজরা তাহণের জাতীয় বিশেষত্বের পরিচয়-স্বরূপ একটা কথা বলিয়া থাকে যে, তাহারা পৃথিবীর যে অংশেই যাক না কেন, সেখানে একটা ‘ক্রিকেট ক্লাব’ আর একটা গির্জা’র প্রতিষ্ঠা করে। আধুনিক বাঙালী যেখানে প্রবাসী হয়, সেখানে সৰ্ব্বপ্রথমে একটা “অবৈতনিক নাট্য-সমাজ প্রতিষ্ঠিত করে ; কিন্তু পূৰ্ব্বে, প্রবাসে, তাহারা বাঙালী স্কুল ও লাইব্রেরী প্রতিষ্ঠিত করিত, এবং স্বগণের সংখ্যাবৃদ্ধির সঙ্গে-সঙ্গে কালীবাড়ি বা হরিসভা স্থাপিত করিত। বঙ্গের বাহিরের বাঙালীর এই সব প্রতিষ্ঠানগুলির ইতিহাসের ধারাবাহিক আলোচনা যে আধুনিক বৃহত্তর বাংলার ইতিহাস-রচনার একটা মূখ্য উপাদান, সে বিষয়ে সন্দেহ নাই। বিগত শতাব্দীর প্রথম ভাগে, উত্তর-পশ্চিম ভারতবর্ষে ইংরেজ-রাজত্বের প্রতিষ্ঠা ও ক্রমবিস্তৃতির সঙ্গে সঙ্গে অনেক ভাগান্বেষী শিক্ষিত বাঙালী ঐ অঞ্চলে যাইতে আরম্ভ করেন। তাহার কারণ, বাংলার বাহিরে তখনকার দিনে ইংরেজীনবীশ দেশীয় লোক ছিল না বলিলেও হয়, এবং ভারতবর্ষের মধ্যে বাংলা দেশই সৰ্ব্বপ্রথম ইংরেজীপন্থী শিক্ষা ও সভ্যতা গ্রহণ ও আয়ত্ত করিয়াছিল। তাহার ফলে, সরকারী দপ্তরের কৰ্ম্মচারী হইতে স্বর করিয়া, জজ, হাকিম, জজ-পণ্ডিত, উকীল, স্কুল ও কলেজের শিক্ষক, ডাক্তার প্রভৃতি প্রায় সকলেই বাঙালী ছিলেন। ইংরেজী শিক্ষাপ্রাপ্ত বাঙালীর প্রতিপত্তি ভারতবর্যের প্রায় সকল স্থানেই ছড়াইম্বা পড়িয়াছিল