পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৫১৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মাঘ উত্তরে 8ማዔ উণ্ডহেড, সি-আই-ই, আই-লি-এস মহোদয় ১৯৩১ সালে ভারত গবৰ্ণমেণ্টের বাণিজ্য-বিভাগের সেক্রেটারীরূপে সিমলাতে ছিলেন। তিনি বাংলার সিভিলিয়ান। দূর প্রবাসে বাঙালীর এই লোকহিতকর প্রতিষ্ঠানের সহায়তাকল্পে, কালীবাড়ির সম্পাদক মহাশয়ের একখানা চিঠি পাইয়াই তিনি এক শত টাকার একথান 'চেক' পাঠাইয়া দেন। উড হেড সাহেবের এই দানের একটু বিশেষত্ব আছে বলিয়াই এখানে তাহার উল্লেখ করিলাম। দান, বিশেষত: দেবমন্দিরে দান, কখনও বৃথা হয় না । দেবতা মানুষের ঋণ ফেলিয়া রাখেন না- অপ্রত্যাশিতভাবে তাহা প্রত্যুপণ করেন --- - - - -- ...God Pays debts seven for one ; who Squanders on Him shows thrift.” সিমলা কালীবাড়ির নবগৃহ নিৰ্ম্মাণের যাহা মোট ব্যয়, তাহ আজও সম্পূর্ণ আদায় হয় নাই। এ-বিষয়ে আমি সহৃদয় বঙ্গবাণীমাত্রেরই দৃষ্টি আকর্ষণ করিতেছি। আশা করি, স্বতঃপ্রবৃত্ত হইয় তাহার এ-সম্বন্ধে সাহায্যদান করিতে কুষ্ঠিত হইবেন না। সিমলা কালীবাড়ি সম্পর্কে যাহাদের নিকট সিমলার প্রত্যেক বাঙালী কৃতজ্ঞ, তাহাদের মধ্যে মাত্র কয়েক জনের বিষয় উল্লেখ করিলাম। র্তাহারা ব্যতীত আরও কত জান ও অজানা কৰ্ম্মী নীরবে ও নিঃস্বার্থভাবে কাজ করিয়াছেন ও করিতেছেন, কে তাহাঁর গণনা করিবে ? কিন্তু তাহদের সকলেরই স্মৃতি কীৰ্ত্তি, অক্ষয় ও অমর হইয়া থাকিবে, কারণ— "চলচ্চিত্তং চলদ্বিত্ত্বং চলজ্জীবনযৌবনমূ চলচিলমিদং সৰ্ব্বস্ কীৰ্ত্তিৰ্যস্ত স জীবতি ।” উত্তরে শ্ৰীখগেন্দ্রনাথ মিত্র বর্ষ। তখন শেষ হইয়া আসিয়াছে। কলিকাতার মিঃ এন-গস, ষ্টকূ-ব্রোকার, সপরিবারে হঠাৎ দেশে আসিলেন। সঙ্গে খানসাম, বাবুর্চি, বেয়ার, দ্বারবান, কুকুর, মোটর প্রভৃতি চেতন অচেতন বিস্তর সামগ্ৰী। বাড়িখানি শহরের প্রান্তভাগে—স্বৰ্দুগু ও নাতিবৃহৎ । মিঃ গস দশ বৎসর পূৰ্ব্বে এখানি নিৰ্ম্মাণ করেন। কিন্তু এতকাল একরূপ খালি পড়িয় ছিল। মফঃস্বল শহরের নানা অসুবিধা হেতু ছেলেরা ত কেহ আসিতই না, মিঃ গসূও ইচ্ছা সত্ত্বেও কাজের ভীড় ঠেলিয়া আসিয়া উঠিতে পারিতেন না ; এবং যখন অবসর ঘটিত তখন পশ্চিম বা উত্তর ভারতের অরণ্য ও শৈলমালবেষ্টিত কোন স্বাস্থাকর স্থানেই সুপরিবারে যাত্রা করিতেন। কিন্তু এবার কি মনে হইল, তিনি দেশে আসিলেন। নিরাল পল্লীটাও এক বেলার মধ্যে জম্ জম্ করিতে লাগিল । মিঃ গসের বাড়ির নীচেই প্রকাও নদী। নদীটা সে সময় কানায় কানাম পরিপূর্ণ হইয়া কুল ভাঙিয়া, গ্রাম ভাসাইয়া, ক্ষেতের উপর দিয়া,মাঠ ডুবাইয়া বহিয়া যাইতেছে। তাহার পার স্পষ্ট চোখে পড়ে না। রাত্রিদিন তাহার বিরামহীন মৃদুগম্ভীর জলোচ্ছ্বাসধ্বনি তীরবাসীদের অন্তরে একটা আতঙ্ক জাগাইয়া রাখিয়াছে। সেইদিনই বিকালের দিকে পাইপ, টানিতে টানিতে একটি প্রকাগু কুকুর সঙ্গে লইয়া মিঃ গস পল্লীট একবার ঘুরিয়া আসিলেন। শৈশব-সঙ্গীরা কেহ বড় একটা নাই ; দুই একজন যাহারা আছে, সকলের সহিত আলাপ করা সম্ভব নয় । তাঁহাদের মাঝের ব্যবধানটা কেবল বিশ বৎসরের নহে—পরিবর্তিত আচার, জীবিকা ও বখাঞ্চৎ প্রকৃতিরও । মিঃ গস্ সেদিন আর কোথাও গেলেন , নদীর চাতালে ইজি-চেম্বারে বসিয়া পাইপ টানিতে লাগিলেন। কুকুরটাও তাহার পায়ের কাছে গুইয়া নদীর দিকে সোংস্ককে তাকাইয়া রহিল।