পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৫৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তাহার স্বদেশ ইংলণ্ডে চলিয়া গিয়াছে। সেখানে গিয় তাহার প্রণয়িনীর সহিত সাক্ষাং করিয়া তাহাকে স্বীয় পলায়ন বৃত্তান্ত o এবং উভয়ে পরামর্শ করিয়া ইংলও ত্যাগ করিয়া অন্ত দেশে গেল। সেখানে বিবাহিত হইয়া পাচ সাত বৎসর বাস করিল। পরে যুদ্ধের বিরতি হইয়াছে জানিয়া উভয়ে দেশে ফিরিয়া গেল। যুদ্ধক্ষেত্র হইতে পলায়ন করিবার পরই তাহার নামে ওম্বারেণ্ট বাহির হইয়াছিল। সেই ওয়ারেন্ট লইয়া পুলিস তাহাকে অনুসন্ধান করিতে করিতে তাহারা স্ত্রীপুরুষে যে-বাড়িতে বাস করিতেছিল, সেখানে গিয় তাহাকে ধরিয়! ফেলিল । ইহার পর বিচারে তাহাকে গুলি করিয়ু প্রাণদণ্ড করিবার আদেশ হইল। পূৰ্ব্বকথিত আগম্বুক টাকা দিবার সময়ে টাকার যে শব্দ হইয়াছিল, সেই শব্দষ্ট স্বপ্নমধ্যে তাহার গুলি করার শব্দ বলিয়। বোধ হঙ্গল, এব" তাহার স্বপ্ন ভঙ্গ হইল । সে তখন আগন্তুককে জিজ্ঞাস করিল সে কতক্ষণ অপেক্ষা করিতেছে । আগন্তুক বলিল, “টাকা ত এইমাত্র দিলাম।” তৃতীয় গল্প আমি স্বপ্নে যে-যে ঘটনা দেখিয়ছিলাম তাহ যদি বাস্তব হইত, তাহ হইলে পাচ মিনিটে তাহ সম্পন্ন হইত, কিন্তু স্বপ্নে দুই তিন সেকেণ্ডের অধিক লাগে নাই—ষ্টহ নিম্নলিখিত বিবরণ হইতে প্রতীয়মান হইবে । অনেক দিন হইল একবার উলট রথের দিন পুরী গিয়ছিলাম। রেলে টিকিট করিয়াছিলাম ইণ্টার ক্লাসের, কিন্তু ভিড়ের জন্য দ্বিতীয় শ্রেণীর গাড়ীতেও স্থান না পাইয়া প্রথম শ্রেণীতে অতি কষ্টে একটু স্থান পাইলাম। ট্রেন যাইতে ইতে প্রথমে যে-স্থান হইতে জগন্নাথের মন্দির দেখা গেল, সেই স্থান হইতে যাত্রীদের মধ্য হইতে ‘জয় জগন্নাথ ধ্বনি উখিত হইল এবং অবিরত উখিত হইতে লাগিল । মধ্যাহ্নে পুরীতে পোহছিয়া পূৰ্ব্বনির্দিষ্ট একটা বাসায় গিয়া স্নানাহার করিম রথ দেখিতে বাহির হইলাম। ষ্টেশন হইতে রথ পৰ্য্যস্ত সমস্ত স্থান লোকে লোকারণ্য ৷ সকলেই যেন আনন্দে বিহবল ৷ এরূপ বিপুল জনতার এমন আনন্দোচ্ছ্বাস পূৰ্ব্বে বা পরে, কি মাহুেশের রথে, কি হরিহর ছত্রের মেলাম আমার আশী বৎসর বয়সের ༤ཟླ་༣g|་ HO মধ্যে কোথাও দেখি নাই। প্রথমে বলরামের, পরে স্বভার রথ চলিয়া গেল। তাহার পর জগন্নাথের রথ আসিতে লাগিল দলে দলে লোক আগ্রে অগ্রে বাদ্য বাছাইতে বাজাইতে, গান করিতে করিতে, নাচিতে নাচিতে যাইতে লাগিল। একটি অৰ্দ্ধবয়স্ক ক্ষীণাঙ্গী অলঙ্কারহীন! রঞ্জিত-বস্ত্র-পরিহিতা মুণ্ডিতবেশী নারী কোন দলে না মিশিয়া হাসিতে হাসিতে উৰ্দ্ধবাহু হইয়া নাচিতে নাচিতে যাইতেছিল। এইরূপ নানা প্রকার হর্ষোচ্ছ্বাস দেখিয়া মনে দুই-একটা প্রশ্নের উদয় হইল। ভগবান স্বয়ং যদি সত্য সত্যই রথারূঢ় হইয়া লোকের সম্মুখ দিয়া যাইতেন, তাহা হইলে কি এমন আনন্দ, এমন উৎসব হইত ? সঙ্গে সঙ্গে উত্তরও একটা মনে হঙ্গল-অনেক লোকই তাহাকে বিশ্বাস করিত না এবং উত্তেজিত হুহয় তাহাকে আক্রমণ করিত। আরও একট প্রশ্ন মনে হইল। যখন কোটি কোটি লেক বহুকাল হইতে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করিয়া আসিতেছে যে, এই দারুমূৰ্ত্তিই স্বয়ং ভগবান, তখন কি তিনি তাহাদের প্রতি সদয় হইয়া এই দারুমূৰ্ত্তিতে আবিভূত হইতে পারেন না ? এ প্রশ্নেরও একটা উত্তর মনে হইল। হিপ নোটাইজার যখন কোন ব্যক্তিকে হিপ নোটাইজ করিয়া তাহার হাতে এক টুকরা কাগজ দিয়া বলে যে এই সন্দেশ খাও, তখন সেই ব্যক্তি দৃঢ়বিশ্বাস করিম। সেই কাগজখণ্ড চৰ্ব্বণ করিতে আরম্ভ করে বটে, কিন্তু কাগজে মোটেই সন্দেশের আবির্ভাব হয় না । এইরূপ চিন্তা করিতেছি এমন সময়ে দেখিলাম, একটি স্থূলকায় বুদ্ধ, বোধ হয় গতিশীল রথের রজ্জ্ব স্পর্শ দ্বারা অনন্ত পুণ্য লাভের আশায় রথের গন্তব্যপথের এক পাশ্ব হইতে অপর পাশ্বে তাহার সাধ্যমত দোঁড়িতেছে। রথ তখন অতি নিকটবৰ্ত্তী । বুদ্ধ। রথচাপা পড়িবে ভাবিয়া আমি দৌড়িয়া গিয়া তাহাকে ধরিয়া টানিয়া বাহির করিতে চেষ্টা করিতে লাগিলাম। কিন্তু তাহাকে টানিয়া দড়ীর নীচে দিয়া গলিয়া যাওয়া দুঃসাধ্য হইল। রথ তখন অতি সন্নিহিত ও বেগবান । এমন সময়, দুই জন কনসটেবল আমাদিগকে টানি ছিচড়িয়া বিপন্মুক্ত করিয়া দিল। একটু আঘাত পাইলাম। তখন রথদেখা শেষ করিয়৷ সোজা বাসায় ফিরিয়া গেলাম এবং ক্লাস্তিবশতঃ একখানা চার