পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৫৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মাঘ जचिह्न & ex রাণী-সাহেব আমাকে জিজ্ঞাসা করিলেন, “আপনি এখানে এসে কেমন আছেন ? কোন অসুবিধা হয় নাই ত?” আমি বলিলাম, “আমি ভালই আছি। আপনাদের কৃপাম আমার কোন অসুবিধা নেই।” “গুনলাম আপনি থোড়া দিনের মধ্যে স্কুলের অাচ্ছি তোঁরসে বন্দোবস্ত করেছেন। রাজাসাহেব আপনার খুব তারিফ করলেন । কিন্তু আপনি বোধ করি এখানে বহুৎ রোজ থাকবেন না, হয়ত শাদি হলেই চলে যাবেন।” “স্ত্রীজাতির উন্নতির জন্য আমি জীবন উৎসর্গ করতে চাই । আশা করি, আপনি আমাকে সে-বিষয়ে সাহায্য করবেন।” "ঔরংলোকের কিরূপ উন্নতির কথা বলেন ? লেখাপড়া শেখা? সেজন্য ত স্কুলই করা হয়েছে।” “আমি সৰ্ব্বপ্রকার উন্নতির কথা বলছি। আপনি বোধ হয় রাজাসাহেবের কাছে শুনে থাকবেন, বিলেতে মহিলারা পুরুষ জাতির অধীনতা থেকে আপনাদিগকে মুক্ত করবার জন্য কত প্রকার অনুষ্ঠান করেছেন।” তিনি হাসিন্ধা বলিলেন, “ঔরংলোক ত আলবং পুরুষ লোকের অধীন হোবেই । শাদি করলেই ত তার অধীন হ’লে৷ ” আমি বলিলাম, “যদি বিয়ে না করে ? স্ত্রীলোককে যে বিয়ে করতেই হবে এমন কি ধরাবাধা কথা আছে ?” “শাদি না করলে ছালিয়া পয়দা হোবে কেমন করে। ছালিয়া না হ’লে বংশ থাকবে না।” ইহার উত্তরে আমি কি বলিব ভাবিতে লাগিলাম। তিনি আরও বলিলেন, "ঔরংলোকের বালবাচ্চা হওয়ার একটা প্রবল আকাঙ্ক্ষা আছে। আমার বালবাচ্চ হয় নাই সেজগু আমার মনের যে আপশোষ, তা হম্বত আপনি মালুম করতে পারবেন না।” আমি বলিলাম, “কিন্তু এই মাতৃত্বের ক্ষুধা অন্য ভাবে মেটানো যায়। বিশ্বসংসারের সকল ছেলেকে নিজের ছেলে মন করে কাজ করুন יין তিনি দীর্ঘনিঃশ্বাস ছাড়িয়া বলিলেন, “ত হয় না। তাতে মনের ভোখ মেটে না। পানীর পিয়াস কি দুধে মেটে " আমি বলিলাম, “বিলেতে স্ত্রীলোকের বিয়ে না করে, নিজেদের উন্নতৃির জন্ত দেশের উন্নতির জন্ত কত সং কাজ করেছেন। আমরাও ত করতে পারি।” “কিন্তু শাদি ক’রেও সে সব কাজ করা যায়। পুরুষদের সঙ্গে আমাদের ত কোন আদেীতি ( শক্রতা ) নাই, ষে র্তারা আমাদের কাজে বাধা দেবেন, বরং তার আমাদের সাহায্য করবেন।” - “কিন্তু এতকাল তারা ত আমাদের অধীনতাশূন্থলে বেঁধে রেখেছেন, আমাদের দাবিয়ে রেখেছেন, আমাদের নিজেদের অধিকার, নিজেদের স্বার্থ রক্ষা করে চলতে • পারি নি।” “কই আমাদের দেশে ত সে রকম কিছু দেখতে পাই না। স্ত্রী স্বামীর অধীন বটে, কিন্তু সে নাম মাত্র। আমাদের শাস্ত্রে বলে শক্তিহীন শিব শবমাত্র, একটা মুরদ। সংসারের কোন কাজই ত স্ত্রীর বিনা অভিপ্রায়ে, স্বামীর একলার ইচ্ছায় হয় না। স্ত্রী উপযুক্ত হ’লে বাহিরের বিষম্বকৰ্ম্মেও স্বামী স্ত্রীর পরামর্শ নিয়ে কাজ করেন। আমাদের দেশে রাণী অহল্য। বাঈ, রাণী দুর্গাবতী, আরও কত ঔরং রাজ্য শাসন পর্যন্ত করেছেন ।” আমি ইহঁার সঙ্গে আর অধিক বাক্যব্যয় করা উচিত মনে করিলাম না। আমি বলিলাম, “আমি আপনার মত গুনে খুব খুশী হলুম। আমাকে আবার সাড়ে দশটার সময় স্কুলে যেতে হবে। আজ বিদায় দিন । আমি আর একদিন আসব।” “আলবৎ আসবেন । আপনার আজ কোন খাতির করা হলো না। ওলো লছমী, পান আতর লিয়ে আয়।” এই বলিতে একজন পরিচারিকা সোনার বাটামু করিয়া কয়েকটা পান ও সোনার আতরদানিতে করিয়া আতর জানিয়া আমার সম্মুখে রাখিল। আমি তাহা গ্রহণ করিলাম। পরে একজন পরিচারিকা আমাকে সদর দরজা পৰ্য্যন্ত লইয়া গেল । সেখানে গাড়ী প্রস্তুত ছিল । আমি সেই গাড়ীতে চড়িয়া বোর্ভিঙে জাসিলাম। ( আগামী সংখ্যায় সমাপ্য )