পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৫৫৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মাঘ কেল্লাৰঙ্গের পথ Qoro বুঝবে যে “মানি বড় কম মেয়ে নয়। দশ জনে আম্বারা দিয়ে দিয়েই না ওর মাথাট, একেবারে খেয়েচে । এ কথার পরে সেদিন মালা আর বেশী কথা বলে নাই । এক সময় কাহাকেও কিছু না বলিয়া না জানাইয়াই এই কেয়াবনের পথ ধরিয়া এক এক বাড়ি চলিয়া গিয়াছিল। কেয়াবনের পথ ধরিয়া বিজু এক একাই স্কুল হইতে বাড়ি ফিরিতেছিল। আর সে ভাবিতেছিল, বহুদিন মালাদের বাড়ি যাওয়া হয় নাই। মালাদের লিচুগাছের লিচুগুলি এতদিনে হয়ত পাকিস্থা গিয়াছে। সেগুলি এতদিনে হয়ত কাকে বাদুড়ে মিলিয়া প্রায় শেষ করিয়া আনিয়াছে । অথচ সেদিন মালাকে যে কারণে সে চড় বসাইমা দিয়াছে তাহা যদি মালাদের বাড়ির কাহারও কাছে ফাস হইয়া গিয়া থাকে তো সেখানে সে যাইবে কেমন করিয়া ? আর কি ফাস এতদিনে না হইয়াছে ? মালাকে সে তো কতদিন কত কথাই বলিয়াছে, কিন্তু সে-সবের খোজ কেহ রাখিল ন, আর ভুলে যাহা সে একদিন ফল করিয়া বলিয়া ফেলিল তাহারই যত খোজ রাখিতে গেল। লোকের এই স্থায়হীনতা অসহ একেবারে । অথচ, সেই সব লোকেদের কিছু না করিয়া মালাকে সে চড় মারিতেই বা গেল কেন ? মালার তো কোন অপরাধ নাই। সেই সব লোকেদের যে তাহার করিবার কিছু ছিলঙ না। যাহা হইয়া গিয়াছে তাহা গিয়াছে, সেজন্য জাপ শোষ করিম আর লাভ নাই। কোন মতেই তা বলিয়া মালাদের বাড়ির অমন লিচুর মায়া পরিত্যাগ করা চলে না। আজ সে বাড়ি ফিরিয়া বই-পত্তর রাখিয়া সমস্ত মান-অপমান যশ-অপষশ ভুলিয়া একবার মালাদের বাড়ি যাইবেই বাইবে। তারপর বরাতে যাহা আছে তাহ সে অকাতরে সস্থা করিবে। সমস্তই যখন ঠিক, তখন কেয়াবনে কি যেন খস খস করিয়া উঠিল । বিজু চিন্তামগ্ন ছিল, কাজেই অধিকতর চমুকাইয় একলাকে খানিকটা পথ আগাইয়া যাইতে গিয়া একেবারে হাস্তোচুল মালার গায়ের উপর আসিয়া পড়িল । মালা পূৰ্ব্ব হইতেই চিৰাময় বিন্ধুকে জানিতে দেখিয়াছিল, কিন্তু বিজু চিন্তাম ছিল বলিয়াই মালাকে দেখে নাই। উভয়ে উন্ট দিক হইতে আসিতেছিল এবং এখানে পথও অনেকটা সোজা, কাজেই না দেখার আর কোন কারণ বর্তমান নাই। , 桑 মালা হাসিয়া উঠিল, বলিল,—বিজু এত বড়টি হ’লে, এখনও তোমার ভয় কাটলে না ? অার কার্টবে কবে শুনি ? একটা ব্যাঙ লাফালে তাতেই এই ?, বিজু অপ্রতিভ হইয়াও অপ্রতিভ হয় নাই এমন ভাব প্রকাশ করিয়া বলিল,—ব্যাঙ নয়, ওটা একটা শঙ্খচূড় সাপ। অনেকক্ষণ ধরে এই পথের পরেই বসেছিল। ঢিল মারতে তবে সরে গেল। নইলে ব্যাঙ দেখে লাফাবো আমি ? স্কুল থেকে ফেরবার পথে প্রায়ই ওটাকে দেখি। ও কিন্তু কাউকে কোন দিন কিছু বলে না। মালা বিজুর মিথ্যা সহজেই বুঝিয়া লইয়া বলিল,—লোকের সঙ্গে ওর অত মিতালি কিসের বিজুন ? তোমার সঙ্গে ঠাটাও ওর চলে যে দেখচি । —কি রকম ? —আবার কি রকম। এই যেমন তুমি আমার সামনে একটু অপ্রস্তুত হ’লে । আবার বানিয়ে তার জন্তে দুটে৷ মিথ্যেও বললে । বিজু মহা ক্ষেপিয়া গিয়া বলিল,—আজকাল দিদির কাছে কি শিক্ষানবিশী হচ্ছে নাকি তোররে মুখপুড়ী ? দু-দিন আগেও যার গালে চড় বসালে কঁদিতে পৰ্যন্ত সাহসে ফুলোতে না তারও যে দেখি মুখ দিয়ে বড় কথা বেরোয়। দেব এক ধাক্কায় ঐ কেয়ার্কাটার ঝোপে পাঠিয়ে মুখপুড়ী। মালা বিজুর কথা শুনিয়া হাসিতে লাগিল। কিছুক্ষণ পরে সে বলিল,—আজকাল তোমার কি হয়েচে শুনি বিজু যে আমাদের বাড়ি একদিনও যেতে পার না ? অগত্য বাধ্য হয়ে আজ গাছ থেকে লোক দিয়ে লিচু পাড়িয়ে নিজেই তোমাদের বাড়ি গিয়ে দিয়ে আসতে হল। মা বলেন, আমার মুখ নাকি ভারি খারাপ তাতে ষ্ণেকেউ রাগ করতে পারে, আর বিজুটা তো এমনিই অভিমানী ছেলে ---এদিকে মারও খেলাম, ওদিকে দোষও নিলাম। এ-কথা বললে কি কেউ বিশ্বাস করবে যে, তুমি নিজের বোকামির লজ্জাতেই আর আমাদের বাড়ি যেতে পার না ? বিজু তাড়াতাড়ি একটা ঢোকৃ গিলিয়া লইয়া বলিল,—