পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৫৬৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

V ভকামী W. কাছে আমন, স্বন্দর মেয়ে দিতে চাইবে ? লেখাপড় কিছুই করেনি যে ” -- চন্দ্রমুখী বলিলেন, “তা না করুক, ঘরে খাবার পরবার ত অভাব নেই? এখন সবদিক খুজলে আর পাচ্ছি কোথা বল ? অন্ত পক্ষও যে তাহলে সব দিক খুঁজবে। বিধু হতভাগীর কপাল পুড়েছে গেল বছর, কোথা থেকে কি দেবে, বিধবা মানুষ।” T عبید পিলীমা একটু ভাবিয়া ববিলেন, “আমার খোকার অদৃষ্টে মুকুব্বি লেখা নেই, যে-কটা সম্বন্ধ এল সব বাপথেকে মেয়ে । যাক, এ তৰু মন্দের ভাল, তোমার বোনঝি যখন । তোমরা ত আর তাদের ফেলতে পারবে না ? তা সে মেয়ে আছে কোথায় ? অনেক বছর আগে দেখেছি, এখন একবার দেথতে ত হবে ?” চন্দ্রমুখী বলিলেন, “আছে কলকাতাতেই। তা দেরি করে আর কাজ কি ? রবিবারে ছেলেকে নিয়ে এস, এখানেই খাওন্ত্ৰী-দাওয়া করে, ওদেরও আনিয়ে রাখব।” - পিসীমা বলিলেন, “সেই ভাল। বেলাবেলি আসব এখন ? বলিয়া তিনি বিদায় হইলেন । রামনিধি এবার জলজ্যাস্ত কনেরই সাক্ষাৎ লাভ করিল, এবার আর ছবি নয়। যোগেশের চেয়ে যোগেশের বিমাতার যে বুদ্ধি বেশী তাহা স্বীকার করিতেই হইবে। স্বশীলাকে দেখিয়া রামনিধি একেবারে মুগ্ধ হইয়া গেল। মেন্থেটি সত্যই দেখিতে ভাল, বাঙালীর ঘরে এই রকম চেহারাই স্বন্দর বলিয়া চলে। রং উজ্জল, গোলগাল গড়ন, চোখদুটি বড় বড়। মুখে খুং নাই যে তাহা নয়, তবে এমন একটি ঐ আছে যে অন্য সব জটি ঢাকাই পড়িয়া যায়। পিসীমায়ও মেয়ে পছন্দ হইল। তবু বলিলেন, “একটু বেশী ডাগর হল, আমার খোকার পাশে ঠিক মানানসই হবে না।” চম্রমুখী বলিলেন, “তা হোক গে ভাই, এটুকু খুঁতের জন্তে আর মেয়েটাকে পায়ে ঠেলে না। ভারি লক্ষ্মীমেয়ে, ঘরে নিলেই বুঝতে পারবে। একেবারে কচিকী ঘরে আনার ঠেলা আছে। নাৰে কেৰে হাড় জালিয়ে তুলবে। স্বশী আমার এরই মধ্যে ঘর-সংসারের সব কাজ করতে পারে, তোমার কত সাৰ্বাধ্যি হবে দেখো।" বোকা ૧૨૬ বরের পিণী এবং কনের মাসী মিলিয়া সম্বন্ধ একেবারে পাকা করিয়া ফেলিলেন । বরের মুখের ভাব দেখিয়া মনে হইল না যে, তাহার ইহাতে বিন্দুমাত্রও আপত্তি আছে। যোগেশ ত বিবাহের কথা শুনিয়া তেলেবেগুনে জলিয়া উঠিল। রাগ সামূলাইতে না পারিয়া মায়ের কাছে গিয়া তীক্ষশ্বরে বলিল, “সেই বাপ-মর মেয়েই আনলে ত ? তাহলে নীরটা অপরাধ করেছিল কি ? আমি কথাটা পেড়েছিলাম, বলেই মেয়েটা কুপাত্ৰী হ’ল বুঝি ?” সতীন-পো’র এত ঝাঝের কারণ মার বুঝিতে দেরি হইল না। কড়া জবাব মুখে আসিয়াছিল, সেটা সামাইয়া লইয়া বলিলেন, “তা যেটা বেশী পছন্দ হবে সেটা ত নেব ? এ মেয়ে আমার নিজের জানা, ছেলেবেলা থেকে দেখছি।” যোগেশের বলিবার ঢের কথা ছিল, কিন্তু - এখন আর বলিয়া লাভ হইবে কি ? বিবাহ ত স্থিরই হইয়া গিয়াছে।. গণ্ডগোল পাকাইবারও উপায় নাই, কারণ দেনাপাওনা লইয়াই গণ্ডগোল বাধে। এ বিবাহে দেনাপাওনার যে কোনো কথাই নাই। বিধবার কন্যা, শাখা শাড়ী দিয়াই বিদায় করিয়া দিবে হয়ত। আত্মীয়স্বজন ইচ্ছা করিয়া কিছু দিতে পারে, না-ও দিতে পারে। আর মেয়ের বংশ কুল গোত্র সবই জান, সে-সব দিকদিয়াও গোল করিবার উপায় নাই। যোগেশের মাথায় ফন্দির পর ফন্দি প্রতবেগে খেলিয়া যাইতে লাগিল, কিন্তু কোনোটাই বেশ কাজের বলিয়া তাহার মনে হইল না। এদিকে বিবাহের দিনও দেখিতে দেখিতে আসিয়া পড়িল । বিবাহের সময় পিসীমা রাধারাণীকে আসিবার জন্ম লিখিলেন, কিন্তু তাহাকে ন-কি শক্ত ম্যালেরিয়া জরে ধরিয়াছে, এই ছুতায় বেহাই পাঠাইতে রাজী হইলেন না। পিসীম৷ আর উচ্চবাচ্য করিলেন না। যোগেশকে তৰু বহু দিনের অভ্যাসগুণে র্তাহার সহিয়া গিয়াছিল, বউমাটিকে,এখনও সেপরিমাণ অভ্যাস হয় নাই। যাহা হউক, রামনিধির বিবাহ হইয় গেল, ভালম ভালয় । ধুমধাম হইল না বটে, তবে উভয় পক্ষের আত্মীয়স্বজন মিলিয়া কোলাহল করিল বিস্তর। কন্যা বিদায় করিবার সময় চন্দ্রমুখী যোগেশের হাতে ধরিয়া মেয়েটিকে স্নেহের নজরে দেখিবার জন্য অনেক মিনতি জানাই দিলেন। যোগেশের