পরিশ্রমের ফলে ছাপাইতে লাগিলেন, বলিলেন— দেবীদাস রামের সিন্দুক এর নাম—নড়বে কি সহজে ? মধ্যে আবার তোমার ঐ সহায়রাম আর সাৰ্ব্বভৌম ঠাকুরের গুষ্ঠাঁর পিণ্ডি বোঝাই করা। এই রাত্রে খুলে যে সব বের করে ফেলা, সেও ত মহা হাঙ্গামের ব্যাপার চিন্তান্বিত মুখে ক্ষেত্রনাথ চুপ করিলেন। উমানাথ বলিল— এখন কি ওসব হয় ? দরকার হ'লে সকালবেলায় মানুষ জন ডেকে সরিয়ে ফেলা যাৰে— —বুদ্ধির জাহাজ ! ক্ষেত্রনাথ চটিয়া উঠিয়া বলিতে লাগিলেন—খুব কথা বললে তুমি, সকাল বেলা লোক জানাজানি হয়ে যাবে না ? যা করবার এখুনি করতে হবে –সহস যেন সমাধান দেখিতে পাইয়। বলিলেন—এক কাজ কর দিকি, চালির থেকে বালিশ বিছানা সব পাড়ে। ঐগুলো সিন্দুকের উপর সাজিয়ে রেখে দাও, বাইরে থেকে সিন্দুক যাতে দেখা नीं शीघ्रं । করা রয়েছে । সিন্দুক ঢাকা হইয় গেল। ক্ষেত্রনাথ আলো ধরিয়া এদিক ওদিক ভাল করিম। দেখিলেন। দেখিয়া খুণী হইলেন। বলিলেন–জগদ্ধাত্রী ত জগদ্ধাত্রী, শ্মশান থেকে সহায়রাম রায় উঠে এলেও আর ধরতে হচ্ছে না । সিন্দুকের ইতিহাস উমানাথ সমস্ত জানে এবং আজ জগদ্ধাত্রী যে গ্রামে আসিয়াছে সে কথাও কানে গিয়াছে। অতএব এখনকার আয়োজন দেখিয়া ব্যাপার বুঝিতে বিলম্ব হুইল না, বলিল—এই ত ভাঙাচোরা খানকতক তক্তা— কি-ই বা জিনিষ-এ দেখে তারপরে কি আর জগদ্ধাত্রী দিদি দাবী করতে আসবেন ? আর করেনই যদি, অনাথ বিধবার জিনিষ--দিয়ে দেওয়া উচিত— রুক্ষ দৃষ্টিতে চাহিয়া ক্ষেত্রনাথ বলিলেন– কোনটা কার জিনিষ, সে আমাদের সেকেলে স্বত্বাস্থত্বির কথা । তুমি তার কি খবর রাখ ষে বলতে এসেছ ? তাড়া খাইমা উমানাথ নিরুত্তর হইল। ক্ষেত্রনাথ তামাক সাজিতে প্রবৃত্ত হইয়াছিলেন। মুখ ফিরাইয়া দেখিলেন, উমানাথ ধীরে ধীরে চলিয়া যাইবার উদ্যোগে আছে। কিঞ্চিৎ হাসিয়া সদয় কণ্ঠে কহিলেন—ভায়া আমার মনে মনে ভাবেন, দাদা দেশের লোককে ফাকি দিয়ে বিষয় কি লেখা আছে বলত? মনে হবে, এখানে কেবল বিছানাপত্তোর গাদা : আশা করেছে...। জগদ্ধাত্রী আমার এক চিঠি দিয়েছিল— দেখেছ ? مهر —দেখেছি । আশ্চর্ঘ্য হইয়া ক্ষেত্রনাথ কহিলেন—কোন চিঠি দেখেছ ? --দেশে ফিরে অবধি দিদি ত ঢের চিঠি লিখেছেন। সেই যে সহায়রাম কাকার ভিটেবাড়ির দরুণ টাকা চেয়ে লিখেছিলেন— ক্ষেত্রনাথ বলিলেন—ও ত হৃদয় রামের চিঠি–হৃদয় শিখিয়ে দিয়েছে, জগদ্ধাত্রীর- হাতের লেখা। আগের চিঠি দেখেছ ? —তাতেও ঐ । লিখেছেন, বসতবাড়ির দরুণ না দাও— ঘর সারাতে হবে, তারই সাহায্য বলে দাও গোটা পাচেক টাকা—- 爱 ক্ষেত্রনাথ অসহিষ্ণু ভাবে ঘাড় নাড়িয়া বলিলেন—সে আগের কথা বলছি নে। তুমি সে সময় বিষ্ণুপুরে বেহালা বাজিয়ে বেড়াও । সহায়রাম রায় মারা গেলেন। জগদ্ধাত্রী সেই সময় দিল্লী থেকে চিঠি লিখেছিল। চিঠি নয়—সে আমার দলিল। দেখেছ ? উমানাথ তাহ জানে না। ক্ষেত্রনাথ বলিতে লাগিলেন— গোড়া না জেনে বলতে নেই। বিয়ের পর-বছর জগদ্ধাত্রীকে নিয়ে গেল পশ্চিমে। সহায়রাম খুড়ে মারা গেলে খবর দিলাম, কেউ এল না। জগে৷ লিখলে, বাবার জিনিষপত্তোর যা আছে, তুমি নিও ; তুমি নিলেই বাবার তৃপ্তি হবে। ঐ হৃদয়ের বাপ বরদাকান্ত রায় মশায় তখন বেঁচে । তিনি এসে বাদী হলেন বলেন—আমরা হলাম নিকট জাতি ; সহায়রামের অস্থাবর আমাদের ডিঙিয়ে ক্ষেত্তোর চাটুজ্জে পর্যন্ত পৌছয় কি ক’রে ? লোক ডাকাডাকি, মহা হুলস্থূল কাও। জিনিষের মধ্যে ত থান কতক পিড়ি-বারকোষ আর ঐ দেবীদাস রায়ের সিন্দুক-ছাইভন্মে বোঝাই। আমারও জেদ—তাই বা ছাড়ব কেন ? ছাই ভস্ম ? এই অঞ্চলের একটা বিখ্যাত বস্তু এই সিন্দুক, যা লইয়া সহায়রাম রায় পালা বাধিয়াছিলেন। এখনও ক্ষেত নিড়াইবার মরস্থমে চাষাভূষার মুখে উহার দশ বিশটা কলি মাঝে মাঝে গুনিতে পাওয়া যায়। ক্ষেত্রনাথ সিন্দুক
পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৫৭
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।