পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৫৭৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৫e২ দুৰ্গতির সহিত ইহার সম্বন্ধ অতি ঘনিষ্ঠ। সেই জন্যই তিনি ংলার শিল্পবিভাগ কর্তৃক পরীক্ষিত কতকগুলি শিল্পের উন্নত উপায় শিক্ষা দিবার জন্য যাযাবর শিক্ষকদল প্রেরণের ব্যবস্থায় আগ্রহ প্রকাশ করিয়াছেন। বোধ হয়, সেই পথে অগ্রসর হইয়াই তিনি বুঝিয়াছেন, বাংলার পল্লীগ্রামের আর্থিক অবস্থার পুনর্গঠন ব্যতীত ঈপ্সিত ফললাভের কোন সম্ভাবনা নাই। তিনি মত প্রকাশ করিয়াছেন—এই জন্য চেষ্টা করা প্রয়োজন এবং সে-চেষ্ট করিতেই হইবে। কেন-না, এই পথ ব্যতীত অন্য কোন পথ নাই। তিনি বলিয়াছেন – “বাংলায় কৃষিই আমাদিগের প্রধান অবলম্বন এবং ইহাই এখনও বহুদিন আমাদিগের প্রধান অবলম্বন থাকিবে ; এই বিষয়ে উন্নতি বাংলায় যত প্রয়োজন, অন্য কোন দেশে বা রাষ্ট্রে তদপেক্ষ অধিক নহে। কৃষিই যখন বাংলার সৰ্ব্বপ্রধান অবলম্বন, তখন আমাদিগকে এই কৃষিতেই মনঃসংযোগ করিতে হুইবে । বাংলার লোকের শতকরা ৭০জন কৃষিজীবী, তাহাদিগের অবস্থার উন্নতি সাধিত হইলে শিল্পের সমৃদ্ধি, ব্যবসায়ের সুষ্ঠ অবস্থা, প্রাথমিক শিক্ষাবিস্তার, মধ্যবিত্ত সম্প্রদায়ের হিন্দু ও মুসলমান যুবকদিগের কৰ্ম্মপ্রাপ্তির সুযোগ—এ সবই হইবে।” বাংলার ক্লষকের অবস্থা কত শোচনীয় তাহা কাহাকেও বলিয়া দিতে হইবে না । সে মহাজনের নিকট যে ঋণে বদ্ধ, তাহাকে নাগপাশ বলিলেও অত্যুক্তি হয় না। সাধারণতঃ বলা ধাইতে পারে, স্বাভাবিক ও প্রচলিত ব্যবস্থায় তাহার সে পাশ হইতে মুক্ত হইবার কোন উপায় পরিলক্ষিত হয় না। সমবায় সমিতিসমূহ সে-কার্ধ্যে সাফল্য লাভ করিতে পারে নাই। এখন প্রস্তাব হইয়াছে— ঋণের টাকা কতকটা বাদ দিয়া মিটাইম্বা ফেলা। অধমর্ণের পক্ষে যখন ঋণ শোধ করা অসম্ভব হয়, তখন যদি তাহাকে সৰ্ব্বনাশ হইতে রক্ষা করিতে হয়, তবে ইহাই একমাত্র উপায়। এদেশের প্রজাসাধারণের— অধিবাসিগণের শতকরা ৭০ জনের অবস্থা যদি এইরূপ শোচনীয় হয়, তবে সরকারের পক্ষেই এবিষয়ে সচেষ্ট হইতে হয় ; নহিলে দেশব্যাপী বিশৃঙ্খলার পঙ্কে উন্নতির রথচক্র । বন্ধ হইয়া যায়। বাংলা-সরকার যদি এই কাৰ্য সুসম্পন্ন করিতে পারেন, তবে যে র্তাহারা দেশবাসীর ধন্যবাদভাজন প্রবাসনী স্ট SOBO -بھا হইবেন, তাহাতে সন্দেহ নাই। কি ভাবে তাহারা অগ্রসর হইবেন, তাহা এখনও প্রকাশ পায় নাই। আপাততঃ তাহারী— পঞ্জাবে যেমন হইয়াছে, তেমনই—পল্লীর পুনর্গঠন জন্য একজন কৰ্ম্মচারী নিযুক্ত করিয়াছেন এবং আবশ্বক অনুসন্ধান জন্য বেসরকারী ও সরকারী লোক লইয়া একটি সমিতি গঠিত করিয়াছেন । পঞ্জাবে এই কার্য্যের ভার যে-কৰ্ম্মচারীর উপর ন্যস্ত হইয়াছে, তিনি কম মাস পূৰ্ব্বে একখানি পুস্তিক প্রকাশ করিয়াছেন। তাহাতে তিনি বলিয়াছেন, ইংলণ্ডে শতবর্ষকাল যে-ভাবে শিল্পের প্রসারবৃদ্ধি হইয়াছে, তাহাতে কৃষির ও পল্লীর ক্ষতিতে শহরের উন্নতি হইয়াছে। পল্লীগ্রাম শহরবাসীদিগের ক্রীড়াক্ষেত্র বলিয়৷ বিবেচিত হইয়াছে । এখন সে অবস্থার পরিবর্তন হইয়াছে, এখন চিন্তাশীল লোকরা বুঝিয়াছেন, পল্লীগ্রামের অবনতিতে সমগ্র দেশের অবনতি অনিবাৰ্য্য। তাই এখন পল্লীগ্রাম আবার সমৃদ্ধ ও শ্ৰীসম্পন্ন করিবার চেষ্ট আরম্ভ হইয়াছে। যে-সব কারণে ইংলণ্ডে পল্লীগ্রামের সর্বনাশ ঘটিতেছিল, ভারতবর্ষেও সেই সকল কারণ আবিভূত হইয়াছে ; অথচ বিলাতে শিল্পের উন্নতিতে যে অর্থ সঞ্চিত হইয়াছে পল্লীগ্রামের পুনর্গঠনে তাহা প্রযুক্ত হইতে পারে ; ভারতবর্ষের তাহ নাই। স্বতরাং ভারতবর্ষের অবস্থা আরও শোচনীয়। ভারতবর্ষে যে এই অবস্থার পরিবর্তনসাধন সম্ভব হইতেছে না, তাহার কারণ প্রধানতঃ ত্ৰিবিধ — (১) পল্পীজীবন স্থখময়, স্বাস্থ্যসুন্দর ও সমৃদ্ধিসম্পন্ন করিবার উপায় সম্বন্ধে অজ্ঞতা ; (২) এই বিষয়ে যে জ্ঞান আছে, তাহাও কাৰ্য্যে প্রযুক্ত করিবার উদ্যোগের অভাব ; (৩) পল্পীজীবনের উন্নতিসাধনের জন্ত সঙ্ঘবদ্ধভাবে কাজ করিবার উপযোগী প্রতিষ্ঠানের অভাব। পঞ্চাবে পল্লীগ্রামের পুনর্গঠন চেষ্টায় এই কারণ তিনটি দূর করিবার উপায় নির্ণীত হইতেছে। গত ৪ঠা জানুয়ারী তারিখেও সংবাদ পাওয়া গিয়াছে, তথায় কৃষকদিগকে নিম্নলিখিত বিষয়গুলি সম্বন্ধে শিক্ষা ও সংবাদ দিবার জন্য বেতারের ব্যবহার-ব্যবস্থা হইয়াছে – (ক)' কৃষি