পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৫৭৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

6ද්‍රිෂ් So8p কিরূপ হইবে, তাহ পরে বিবেচ্য। বাংলা সরকার সে-টাকা জমিবন্ধকী ব্যাঙ্ককে ধার দিতে পারেন। বর্তমানে বাংলা সরকার অল্পস্বদে টাকা পাইতে পারেন, সন্দেহ নাই। তাহার পর কৃষক যাহাতে পুনরায় ঋণ করিয়া জড়াইয়া না পড়ে তাহার ব্যবস্থাও করিতে হইবে। • কৃষির অবনতির কারণ ও শিল্পের অবনতির কারণ কতকটা এক। তাহার উপর জমির উর্বরতা হ্রাস কৃষির উন্নতির অতিরিক্ত কারণ। যত দিন বাংলার নদী নালা বহু ছিল, ততদিন জমিতে যে পলী পড়িত, এখন আর তাহা পড়ে না। কিছুদিন পূৰ্ব্বে সার উইলিয়ম উইলকক্স স্বয়ং পরিদর্শন করিয়া বাংলার জলপথগুলির সংস্কার করিতে বলিয়াছিলেন। তিনি মিশরে যে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করিয়াছিলেন, তাহাতে র্তাহার পরামর্শ উপেক্ষা করা কখনই সন্মত হয় নাই। কৃষি ও শিল্প উভয়ের অবনতির অন্ত কারণ—উন্নত উপায় অবলম্বনে শৈথিল্য। উন্নত উপায় অবলম্বন করিলে শিল্পের কিরূপ উন্নতি হইতে পারে, তাহার পরিচয় এই বঙ্গদেশেই আমরা ঠকঠকি র্তীতের প্রবর্তনে পাইয়াছি। এই তাতের প্রবর্তনফলে তত্তবায়দিগের আয় যথেষ্ট বাড়িয়াছে। অন্যান্য শিল্পে সেরূপ কোন চেষ্টা এতদিন হয় নাই। বাংলার শিল্পবিভাগ স্থাপনাবধি এবিষয়ে কোন কাজ করেন নাই বলিলেও অত্যুক্তি হয় না। কিন্তু চেষ্টা করিলে যে এই কাজ সহজসাধ্য হয়, সম্প্রতি শিল্পবিভাগের কার্ধ্যে তাহ প্রতিপন্ন হইয়াছে। শিল্পবিভাগ ধান ছাটাই, ধান শুকান, শাকের চাকি কাটা ইত্যাদির জন্য যেসব নুতন যন্ত্র আবিষ্কার করিয়াছেন, সে সকলে শিল্পীর লাভবান হওয়া সহজ । তদ্ভিন্ন বাসনেও বিভাগের ইঞ্জিনিয়ার নূতন উপকরণ ব্যবহার করিতেছেন। এদেশের কাসার বাসন যত ভালই কেন হউক ন, তাহার মূল্য কিছু অধিক। নূতন যে মিশ্রধাতু আবিষ্কৃত হইয়াছে, তাহার মূল্য অপেক্ষাকৃত অল্প। আবার বাসনের ক্ষণভঙ্গুরত্ব বর্জন করিবার উপায়ও আবিষ্কৃত হইয়াছে। এইরূপ শিল্পবিভাগে লৌহের ছুরি র্কাচি ক্ষুর ইত্যাদিতে ধার' দিবার নূতন ব্যবস্থা হইয়াছে এবং কলাই-করা মৃৎপাত্রাদি প্রস্তুত করিবার জন্ত যে উনান গঠিত হইয়াছে, তাহাতে পোর্সিলেন পর্যন্ত হইতে পারিবে, অথচ সে উনান গঠন করিবার ব্যয় অধিক নহে। বাংলার শিল্প বিভাগ এই সব শিল্প মফঃস্বলে লোককে শিখাইবার জন্ত কিছু টাকা পাইয়াছেন এবং শিক্ষাদানের ব্যবস্থা করিয়াছেন । অল্প দিন পূৰ্ব্বে কৃষ্ণনগরে গিয়া শিল্প বিভাগের ডিরেক্টর শ্ৰীযুক্ত গুরুসদয় দত্ত বলিয়া আসিয়াছেন, স্থানে স্থানে এখন এই-সব শিল্প প্রতিষ্ঠিত হইতেছে ; উৎপন্ন দ্রব্য বিক্রয়ের স্বব্যবস্থা করিবার জন্য জেলা বোর্ডকে সচেষ্ট হইতে হইবে। তাহারা এইজন্য এক জন স্বতন্ত্ৰ কৰ্ম্মচারী নিযুক্ত করুন। এই ব্যবস্থায় ক্রেতা ও পণ্যোৎপাদক উভয়ের মধ্যে ঘনিষ্ঠ যোগ সাধিত হইবে এবং পণ্য বিক্রয় সহজসাধ্য হইবে। আমরা দত্ত মহাশয়ের এই প্রস্তাব সমীচীন বলিয়া বিবেচনা করি । ইতিমধ্যে বৃটিশ সাম্রাজ্যের পণ্য বিক্রয় ব্যবস্থা করিবার জন্য বিলাতে যে সমিতি বা বোর্ড স্থাপিত হইয়াছিল, তাহারই চেষ্টায় ভারতবর্ষ হইতে বিলাতে কল রপ্তানীর ব্যবস্থা হইয়াছে, এ বিষয়ে আয়ালণ্ডে যাহা হইয়াছে তাহাই সৰ্ব্বাপেক্ষা উল্লেখযোগ্য। তথায় সরকারের সাহায্য গ্রহণ না করিয়া কয়জন জননায়ক পল্লীশিল্পের পুনর্গঠনের যে ব্যবস্থা করিয়াছিলেন, তাহাতে অসাধ্য সাধন হইয়াছে। বাংলায় সমবায় সমিতিগুলির দ্বারাও সেরূপ কাজ হয় নাই। এখন যদি জেলা বোর্ডগুলি এ-বিষয়ে বিশেষরূপ অবহিত হয়েন, তবে তাহাতে যেমন আমাদিগের স্বাবলম্বনের অনুশীলন হয়, তেমনই সরকারের নিয়ম-নিয়ন্ত্রণযুক্ত হইলে কাজও বোধ হয় ভাল হয় । আমরা এই প্রবন্ধে পঞ্জাবের পল্লীগঠন কার্য্যে নিযুক্ত রাজকৰ্ম্মচারীর উক্তি উদ্ধৃত করিয়াছি । তিনি বলিয়াছেন, বিলাতের মত বৃহৎ শিল্পপ্রধান দেশও এখন বুঝিতেছে, পল্লীগ্রামের ধ্বংসে জাতির অশেষ অকল্যাণ অনিবাৰ্য্য। বোম্বাইয়ের ভূতপূৰ্ব্ব গবর্ণরও এ-বিষয়ে তাহার মত প্রকাশ করিয়া লোককে পল্লীর পুনর্গঠন কর্শ্বে প্ররোচিত করিতে প্রয়াসী হইয়াছিলেন । বাংলার গভর্ণর আজ স্বীকার করিতেছেন- পল্লীগ্রামের পুনর্গঠন ব্যতীত দেশের অবনত অবস্থা নষ্ট করিম উন্নতি প্রবর্তনের অন্ত উপায় নাই। এই পুনর্গঠনকার্ধ্যে তিনি আবণ্ডক অৰ্থনিয়োগের প্রতিশ্রুতি প্রদান করিয়াছেন।