পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৫৮৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

** মায় শৃঙ্খল Ꮘ 3Ꮌ Nః বিরক্ত ও ব্যথিত হইতেছিল, বীণার কাছে এই লইয়\ভূtহার লঙ্গাও ছিল কম নয়। কিন্তু স্বতঃপ্রবৃত্ব হইয়া কোনও বিষয়ে কিছু বল বা করা তাহার স্বভাব নহে বলিয়া উপলক্ষ্যের অভাবে মাতাকে এতদিন কিছু সে বলিতে পারে নাই। উপলক্ষ্য হেমবালাই জুটাইয়া দিলেন। ঐন্দ্রিলার পরীক্ষা শেষ হইবার দিন-পাচেক পর একদিন তাহাকে নিজের ঘরে ডাকাইম্ন আনিম কহিলেন, “এইবার ত পড়াশোনা চুক্ল; এবারে দেশে ফেরবার ব্যবস্থা করা যাকৃ, কি বলিস ?" ঐন্দ্রিলার মন একে ত স্বাভাবিক অবস্থায় ছিল না, থাকিবার কথাও নহে ; মৃত্যুর অতি-সান্নিধ্য মানুষের অস্তিত্বের ভিত্তিমূলকে নড়াইয়া দিয়া যায়, ঐন্দ্রিলার বেলাতেও সে-নিয়মের ব্যতিক্রম হয় নাই ; তদুপরি মায়ের সম্বন্ধে তাহার এতদিনকার সঞ্চিত বিরক্তি ৷ পলকে প্রলয় ঘটিয়া গেল । চোখ মুখ লাল করিয়া সে বলিল, “হঁ্য, তা বই কি। দিদির এই ত অবস্থা বাড়ীতে এমন একটা লোক নেই যে ওর দিকে একটু তাকিম্বে দেখে। এতদিন গণ্ডেপিণ্ডে তাদের খেয়ে নিজেদের কাজ উদ্ধার করে নিয়ে সদলবলে প্রস্থান করবার এই উপযুক্ত সময় বটে। তোমার যোগ্য কথাই হয়েছে।” হেমবালারও মনের এতদিনকার যতদিকের যত জমানে তাপ আজ একসঙ্গে কথার মুগে বাহির হইয়া আসিল, কহিলেন, “দেখ, তোকে কেউ কিছু বলে না ব'লে ভারি আস্কার পেয়ে গিয়েছিস । দুপাতা বই পড়ে দেমাকে মাটিতে পা পড়ে না মেয়ের । কি এমন কথা হয়েছে যে আমাকে এই রকম করে তুই বলবি ? আমার যোগ্য কথা হয়েছে মানে কি শুনি ?” ঐন্দ্রিলা বলিল, “নিজের দিকটা ছাড়া আর কারও দিকে তাকিয়ে দেখা তোমার স্বভাব নয়, তা না হলে দিদির বিপদের সময় তাকে একল ফেলে চলে যাবার কথাটা তোমার মনে আস্ত না " । হেমবালা বলিতে পারিতেন, এখনই চলিয়া যাইতে হইবে এমন কথা ত আমি বলি নাই, যাওয়া যতদিন শোভন দেখাইবে না ততদিন থাকিয়া গেলেই হইল। কিন্তু উত্তেজনার মুখে কথার স্রোত বক্র পথে বহিয়া গেল, কহিলেন, “অন্যের দিকূটা আমি দেখি না, তুই দেখিস, আর এ অপবাদ তুই আমাকে না দিলে চলবে কেন ? মানুষের কৃতজ্ঞতার বালাই বলেও একটা জিনিষ থাকে, তোর তাও নেই। তোর জন্তে পৃথিবীতে এমন কোন দুঃখ আছে যা নিজেকে আমি দিইনি?” ঐান্দ্রলা কহিল, “ম হয়ে পেটে ধরেছ সেজন্তে যতটা করবার তা করেছে, আর সেজন্তে সস্তানের কাছে সাধারণ কৃতজ্ঞতা হিসাবে ঘাঁ তোমুর পাওনা সে ত আছেই। কিন্তু তার বেশী কোনদিকে কি আর তুমি আমার জন্তে করেছ? প্রাণপণে হাড় জালিয়েছ ।” ঐন্দ্রিলা চলিয়া যাইতেছিল, হেমবালা প্রায় চীৎকার করিয়া কহিলেন, “কি করেছি, কি করেছি আমি তোর, না বলে এঘর ছেড়ে যাস্ যদি ত আমার অতি বড় দিব্যি রইল।” ঐন্দ্রিল ফিরিল, হেমবালার একেবারে সম্মুখে আসিয়া দাড়াইয়া চাপা গলায় কহিল, “কি করেছ তা তুমি বেশ ভাল ক'রে জানো। আমার কাছে কেন জানতে চাইছ ? আমি যদি জানতাম তবে ত কথাই থাকত না, কিন্তু জানতে দিতে তোমার সাহস হয়নি। কেন জানতে দাওনি ? কি অধিকার আছে তোমাদের আমার কাছ থেকে লুকোবার ? যদি পূরোপুরি লুকোতে পাৰ্বতে, কথা থাকৃত না। কিন্তু আমার ভালমন্দ বোঝবার বয়স হয়েছে, জানো সবটা লুকোতে পারনি এবং শেষ অবধি কিছুই লুকোতে পারবে না, তবু আমাকে সব বলনি কেন ? বললে তোমাদের কি ক্ষতি হত ?” হেমবালা রুদ্ধকণ্ঠে কহিলেন, “যদি কিছু লুকিয়ে থাকি, তোরই ভালর জন্যে লুকিয়েছি।” ঐন্দ্রিলা কহিল, "আমার ভালর জন্যে লুকিয়েছ। অস্ত মানুষের ভালমন্দ, তার নিজের চেয়ে বেশী বোঝে, কোনো মানুষেরই এতটা অহঙ্কার থাকা উচিত নয় ।” হেমবালা এবার কেবারেই ভাঙিয়া পড়িলেন, কাদিয়৷ কহিলেন, “তা বেশ, কি তুই জানতে চাস, উনি ত এখানেই রয়েছেন, ওঁকেই না-হয় গিয়ে জিজ্ঞেস কর, জামায় কেন সবাই মিলে জালাস্ ?” ঐন্দ্রিল তবুও কহিল, “আমাকে কিছু না বলবার ওঁর অধিকার আছে, সাক্ষাৎ সম্বন্ধে উনি আমার কিছু ক্ষতি করেন নি, কিন্তু পৃথিবীমৃদ্ধ লোকের কাছে তুমি আমার মাথা হেট করেছ, তুমি আমার নিজের প্রতি নিজের শ্রদ্ধা কেড়ে