পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৫৮৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ཅེ་བ নিজের ধারকে সমর্থন করিবার জন্ত কোনও দিক্ হইতে, কোনও যুক্তির অবতারণা করিলেন না, দগু চাহিলেন না, ক্ষমাও চাহিলেন না । বীণা বলিল, “এ কি কাগু !” - একটা বড় গোছের স্কটকেসে আরও কিছু কাপড়-চোপড় ঠাসিম ভরিয়ু ঐন্দ্রিলা কহিল, “আমি চলেছি।” বীণা কহিল, “দে কি, কোথায় ? এ কি পাগলামি স্বরু করেছিস ? কি হয়েছে রে ইলু ?” ঐন্দ্রিলা কহিল “তোমার পায়ে পড়ি দিদি, আমাকে কিছু জিজ্ঞেস কোরো না, আমি কিছু বলতে পারব না।” বীণা কহিল, “আমাকেও বলতে পারবি না, এমন কি ব্যাপার হঠাৎ ঘটল ? লক্ষ্মীটি, বল কি হয়েছে।” ঐন্দ্রিল শক্ত হইয় বলিল, “বলতে পারব না, তার বেশী আর কিছু বল। আমার সাধ্যে নেই। তোমাকেও এই অবস্থায় ফেলে যাচ্ছি, তার থেকে যতটা বুঝবার বুঝবে।” ঐঞ্জিলাকে বীণা যত জনিত এত আর কেহ নহে, তাছাড়া ব্যাপার অনুমানে কতক বুঝিল, তাহার গলা শুকাইয়া উঠিয়াছিল, কহিল, " কিন্তু কোথায় যাচ্ছিল তা ত বলতে পারিস ?” ঐন্দ্রিলা কহিল, “স্বলতাদিদের ওখানে ৷” বীণা কহিল, “কিন্তু সুলতাদিরা এখানে নেই তা ত জানিল ।” ঐন্দ্রিলা কহিল, “জানি। তাদের দেশের বাড়ীতেই কিছুদিনের মত যাচ্ছি।” “তারপর ?” “তারপর যদি কপালে থাকে ত আবার দেখা হবে।” “বাব ! কি স্বদিনই যে চলেছে আমার ।" বলিয়া বীণা দুই করতলে মুখ ঢাকিয়া বিছানার পাশে মাটিতে বসিয়া পড়িল । তাহার পাশ ঘেসিয়া বসিয়া শাড়ীর আঁচলে তাহার উদগত অশ্রু মুছাইম দিতে দিতে ঐপ্রিল কহিল, “তোমার এমন দুঃখের দিনে আমি তোমার কোনো কাজে লাগলাম না এ ক্ষোভ আমার মর্লেও যাবে না। কিন্তু একটা কথা বলে যাচ্ছি, আমাকে খুব নিষ্ঠুর হয়ে বিচার করবার আগে সেই কথাটা শৃঙ্খল 680 মনে কোরো । তুমি যা হারিয়েছ তার তুলনা নেই, কিন্তু ৰে জিনিষ আজ আমার খোওয়া গেছে তার মূল্য, আমার কাছে অন্ততঃ খুব কম ছিল না। কিছুদিন একটু বাইরে কোথাও যেতে না পেলে আমি নিঃশ্বাস আটকে মরে যাব।” বীণ বলিল, “থাক, বলিস না, শুনতে চাই না, দরকারও নেই। তোকে নিষ্ঠুর হয়ে-বিচার আমি করব না তা তুই ভাল ক’রেই জানিস। যাচ্ছিল যে, কে তোকে নিয়ে যাচ্ছে ?” ঐঞ্জিলা বলিল, “স্বভদ্রবাবুকে বলব, আমাকে পৌছে দিয়ে আসতে।” - বীণা একটুক্ষণ চুপ করিয়া রহিল, কহিল, “তা নিয়ে যে কথা উঠবে ।” ঐন্দ্রিলা কহিল, “কথা এমনিতেও কত ওঠে। আর সেইজন্যেই বিশেষ করে আরও ওকে আমি নিয়ে যাচ্ছি।” বীণা কহিল, “তুই বলেই বলছি। যদিও আমার নিজেরও এতটা সাহস হত কিনা সন্দেহ। আগুপিছু ভাল করে ভেবে দেখেছিস্ ?” ঐন্দ্রিলা কহিল, “পরে ভাব ব । ভাববার অবস্থায় আমার মনটা এখন নেই।” বীণা কহিল, ‘ সেইজন্যেই ত আরো বেশী ভয় পাচ্ছি।” ঐন্দ্রিলা কহিল, “তুমি বৃথাই ভয় পাচ্ছ, আমার মনে সাহসের অভাব নেই তাত জানে। দরকার হয়, প্রতিকারের জন্তে শেষ পর্যন্ত যেতেওঁ আমি পেছপা হব না। তোমার গাড়ীটাকে একটু বলে দাও দিদি।” • পিসীম, পিসে-মশায় ?” “র্তাদের কাছে আমি বিদায় হয়ে এসেছি। মাকে তুমি একটু দেখো । তুমি দেখবেই জানি, তৰু বলছি।” “বাবা ?” “ঐ একটি মানুষ পৃথিবীতে আছেন, র্যাকে এ মুখ আমি এখন দেখাতে পারব না। আমার হয়ে তুমিই তাকে যা বলবার বোলে৷ ” রাত দশটায় শিয়ালদহের ওয়েটিং রুমে বীণার সঙ্গে আবার ঐন্দ্রিলার সাক্ষাৎ হইয়া গেল। এবার ঐন্দ্রিলারও অশ্রু বারণ মানিল না, বীণার বুকে মুখ লুকাইয়া বলিল, “দিলি, আবার তুমি আমার কাছে কেন এলে ? তোমাকে ছেড়ে যেতে