পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৬২৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শসমূহের প্রতিনিধিদের সভায় আলোচনা দ্বারা তাহার মীমাংস করা বইতে পারে এবং তাই করা উচিত। তিনি পৃথিবীতে স্বামী শান্তি স্থাপনের এই যে উপায় নির্দেশ করেন, প্রায় এক শতাব্দী পরে প্রধানতঃ সেই উপায় অবলম্বন দ্বারা পৃথিবীতে শাস্তিরক্ষার জন্য লীগ অব নেগুপ্স স্থাপিত झुद्र ! - আধুনিক কালে অনেক মনীষী, রাষ্ট্রনীতিবিং ও অন্য অনেক লোক বুঝিয়াছেন সকল দেশের ও জাতির মঙ্গলমঙ্গল অন্ত সব দেশের মঙ্গলামঙ্গলের উপর নির্ভর করে, কেই সম্পূর্ণ অন্তনিরপেক্ষ স্বতন্ত্র জীবন যাপন করিতে পারে না। শতবর্ষ পূৰ্ব্বে রামমোহন রায় ইহা বুঝিয়াছিলেন বলিয় তাহার অন্তর্জাতিকতা (ইন্টারন্যাশন্তালিজম) প্রাণবান ছিল ও র্তাহার আচরণে প্রকাশ পাইত, এবং তিনি অতি দূরবর্তী দেশের লোকদেরও স্বখদুঃখভাগী হইতে পারিয়ছিলেন। মানুষের হৃদয় মনের ঐশ্বৰ্য-ভাব ও চিন্তা- তাহার শ্রেষ্ঠ সম্পদ। একজন মানুষ যেমন অন্ত এক জনকে নিজের এই সম্পদের অংশ করিয়া তাহাকে নিজের জ্ঞাতি বলিয়া স্বীকার করে, তেমনি দেশে দেশে জাতিতে জাতিতেও এইরূপ সম্পদের আদান-প্রদান দ্বারা তাহদের মধ্যে মৈত্রী স্থাপিত হয় । যখন রেল ষ্টীমার এরোপ্লেন ছিল না, তখনও, পুরাকালেও, এই আদান-প্রদান ছিল ;–তখনও দীনে আতিথ্য এবং গ্রহণে ওজাৰ্য ছিল। অন্ত প্রকার আতিথ্যের মত, এই মানস আতিথ্যও ভারতবর্ষের ছিল। কিন্তু এমন এক সময় আসিয়ছিল, যখন ভারতবর্ষ কেবল বিজেতার শক্তিতে পরাভূত হইয় কিছু লইতে ও কিছু দিতে বাধ্য হুইত—তাহাতে আদানপ্রদানের আনন্দ ও ঔদার্ধ ছিল না, এবং ইহা কেবল বিজেতার সঙ্গেই হইত। রামমোহন যে ইংরেজী ভাষার সাহায্যে পাশ্চাত্য শিক্ষা প্রবর্তনের চেষ্টা করেন, তাহ আপাতদৃষ্টিতে বিজেতার কুষ্ট স্বীকার বলিয়াই মনে হইতে পারে। কিন্তু এই ইংরেজী শিক্ষার দ্বারা ভারতবর্ষ জাগতিৰ ভাব ও চিন্তার । গ্রোন্তে আসি পড়িয়াছে এবং জগতকেও নিজৰ বাহা তাহ ড়ি সৰ্ব্ব ইতেছে। রামমােহন নিজেই ইংরেজীর সাহাযে, শুধু ব্রিটিশ নয়, জড় পাশ্চাত্য ভাব ও চিন্তার সম্পর্শে

  • ঞ্জ স্বাস- স্টং

ఏం8ం আসিতে সমর্থ হইয়াছিলেন এবং পাশ্চাত্য জগতকে ভারতের প্রাচীন ও আধুনিক চিন্তার অংশী কারতে পারিখছিলেন। র্তাহার সময়ে ভারতবর্ষ পৃথিবী নামক বৃহৎ জড়পিণ্ডের অংশ ছিল বটে, কিন্তু জাগতিক মানস ঐশ্বর্ঘ্যে ভারতীয়দের অধিকার ছিল না—তাহা হইতে তাহারা কিছু লইতে পারিত না ; সেই ঐশ্বর্ষ্যে কিছু রত্ন সংযোগ করিতেও তাহারা পারিত না । পাশ্চাত্য শিক্ষার দ্বারা আমাদের গ্রহণ ও দান উভয়ই সম্ভব হইয়াছে, এবং এই প্রকারে ভারতবর্ষ আধুনিক জগতের অংশ হইয়াছে, ভারতবর্ষের আধুনিকতা উৎপাদিত হইয়াছে । রামমোহনকে যে আধুনিক ভারতের জনক বলা হয়, তাহার এক কারণ, তিনি ভারতবর্ষকে আধুনিক হইবার পথে স্থাপন করেন, প্রাচীনের জরা পঙ্গুতা ও স্থাণুতার পরিবর্ভে তাহাকে নবীনের তারুণ্য, উদ্যম ও সচলতা দান করেন। অন্য কারণ, তিনি যুগপ্রবর্তক ; তিনি আধুনিক রাষ্ট্রনৈতিক, সামাজিক, শিক্ষাবিষয়ক, ধাৰ্ম্মিক, অর্থনৈতিক প্রভৃতি বহু প্রচেষ্টার প্রবর্তক । রামমোহন রায় শতবার্ষিকী এই মহাপুরুষের মৃত্যুর শত বৎসর পরে তাহার প্রতি শ্ৰদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা প্রদর্শনের জন্য ভারতবর্ষের নানা স্থানে যে-সকল অনুষ্ঠান হুইয়াছে, তাহার দ্বারা বুঝা যাইতেছে, যে, ভারতবর্ষের অন্ততঃ কতক লোক র্তাহাকে কিয়ৎ পরিমাণে বুঝিতে সমর্থ হইয়াছে। হয়ত যখন র্তাহার জন্মের দ্বিশতবার্ষিকী হুইবে, তখন আরও অনেক বেশী লোকে তাহার প্রতি আরও শ্রদ্ধাম্বিত ও কৃতজ্ঞ হইবে, এবং ২০ ১৩ খ্ৰীষ্টাব্দে যখন তাহার মৃত্যুর দ্বিশতবাৰ্ষিক শ্ৰাদ্ধাঙ্গুষ্ঠান হইবে, তখন ভারতবর্ষের অধিকতর স্থানে তাহ সম্পন্ন হইবে। . . যেখানে যেখানে শতবার্ষিকীর অনুষ্ঠান হইয়াছে, তাহা ভাল। কিন্তু কেবল সভাসমিতি, আলোচনা, স্মারকচিহ্ন স্থাপন, প্রভৃতিই যথেষ্ট নহে। রামমোহন যেমন দেশের সৰ্ব্বাঙ্গীন উন্নতি চাহিয়াছিলেন, সকলে নিজ নিজ শক্তি ও স্বযোগ অনুসারে তাহ সাধন করিতে চেষ্টা করিলে তবে শতবার্ষিকীর অনুষ্ঠান সার্থক হইবে। . . . রামমোহন বাঙালী ছিলেন, আফাজের প্রতিষ্ঠাত ছিলেন,