পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৬৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মাঘ যে-সব শ্রেণীর মধ্য হইতে সস্থাসকরা নিজেদের দল পুরু করে, সেই সকলু শ্রেণীর জনমত কখন পূৰ্ব্বোক্ত তথ্যগুলি উপলব্ধি করিবে এবং বুঝিবে, যে, সন্ত্রাসকরা তাঁহাদের দেশের সকলের চেয়ে বড় শ ক্ল : সন্ত্রাসকপ্রচেষ্টার উচ্ছেদের জন্য গবন্মের্ণটকে যে অনেক টাকা ব্যয় করিতে হইতেছে ও হইবে, ইহা সত্য কথা । দমন ও শাস্তি দ্বারা উচ্ছেদচেষ্টা ছাড়া আরও যাহা যাহ করা দরকার, জুহাতে গবন্মের্ণ যথেষ্ট মনোযোগী নহেন, সে-কথা অনেক বার বলা হইয়াছে । পুনরুক্তি না করিয়া এখন বড়লাটের উল্লিখিত বঙ্গের আয়ু ব্যয়ের কথাই বলি। বাংলা দেশের অবস্থা ঘে ভাল নয়, তাহ বড়লাট কি অর্থে বলিয়াছেন ? যদি তিনি বঙ্গের লোকসমষ্টি অর্থে “বাংলা দেশ” কথাটি ব্যবহার করিয়াছেন, তাঙ্গ হইলে জিজ্ঞান, বাংলার লোকসমষ্টির আর্থিক অবস্থা থারাপ জানিয়াও গবলোন্ট এই প্রদেশের লোকদের দেয় ট্যাক্স ও খাজনা কমান্‌ নাই কেন ? কিন্তু যদি বড়লাট “বাংলা দেশ" বাংল-গবর্ণমেণ্ট অর্থে প্রয়োগ করিয়া থাকেন, তাহ হইলে আমাদিগকে বলিতে হইবে, যে, বঙ্গদেশে মৃত সরকারী ট্যাক্স ও খাজনা আদায় হয় তাহার খুব বেশী অংশ ভারত-গবন্মের্ণ লইয়া থাকেন বলিয়াই বাংল}গবন্মেণট দরিদ্র । অন্যান্য প্রদেশে সরকারী রাজস্ব যত আদায় হয়, তাহার মত অংশ ভারত-গধন্মে ণ্ট গ্রহণ করেন, বাংলা দেশ হইতেও যদি তত অংশই লইতেন, তাহা হইলে বাংল-গবন্মেণ্ট দরিদ্র হইত না । বাংলা-গবন্মেণ্টের দারিদ্র্য কৃত্রিম, বানানো দারিদ্র্য ; এবং ভারত-গবন্মেণ্টই বাংলা-গবন্মেটিকে দরিদ্র করিয়া রাখিয়াছেন । বড়লাট বলিয়াছেন, সম্বাসকপ্রচেষ্টার উচ্ছেদ সাধনার্থ অতিরিক্ত অর্থব্যয় করিতে না হইলে সেই টাকা হিতকর সরকারী কাজে ব্যয়িত হইত। এ-বিষয়ে আমাদের সন্দেহ আছে । যখন সন্ত্রাসকপ্রচেষ্টা দমনের জন্য বেশী টাকা ব্যয় করিতে হইত না, তখনও, বঙ্গে শিক্ষা প্রভৃতি লোকহিতকর সরকারী বিভাগে অন্যান্য প্রদেশের তুলনায় কম ব্যয় হইত। সন্ত্রাসকপ্রচেষ্টা ও বেকারসমস্যা বড়লাট তাহার পূৰ্ব্বোল্লিখিত বক্তৃতায় ব্যবসা-বাণিজ্যের মন্দা ও বেকার-সমস্যার সহিত বৈপ্লবিক সন্ত্রাসকপ্রচেষ্টার সম্পর্কের উল্লেখ করেন এবং বলেন :- : বিবিধ প্রসঙ্গ-সন্ত্রাসকপ্রচেষ্টা ও বেকার-সমস্যা ●*。 তাৎপৰ্য্য। "এটা সত্য কথা, যে, বৰ্ত্তমান সময়ে জামাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলি হইত্ত্বে অত্যধিকসংখ্যক যুবক ও যুবতী তাহদের নামের শেষে "বি-এ’ উপাধি লইয়া বাহির হয়, এবং তাহারা যখন সরকারী বা সাৰ্ব্বজনিক কাজে প্রবৃত্ত হইতে চায় তখন যথেষ্ট কাজ খালি দেপিতে পায় না । ফলে, এই বেকার অবস্থা তাহাদের মনে বিরক্তি, নৈরাপ্ত ও প্রতিহিংসার উদেক করে, এবং সস্ত্রাসকপ্রচেষ্টার নেতার, যাহার গোপনে ওত, পাতিয়া বসিয়া থাক, তাহাদিগকে সহজেই শিকার করে (অর্থাৎ দলভুক্ত করে } ।” ব্যবসা-বাণিজ্যের মন্দা বলিতে যে অবস্থা বুঝায়, গবন্মেণ্ট তাহার উন্নতির জন্য ও বেকার-সমস্তার সমাধানের জন্ত প্রকত উপায় যদি অবলম্বন করেন, তাহার - সমর্থন আমরা করিব। কিন্তু যদি গবন্মের্ণ মনে করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার বা ইস্কুলের শিক্ষার সঙ্কোচন দ্বারা উদ্বেত সিদ্ধ হইবে তাহা হইলে সেটা ভ্ৰম । বি-এ পাস-করা বেকার যে, সে যেমন বেকার, সম্পূর্ণ নিরক্ষর বেকার যে, সেও তেমনি বেকার । প্রভেদ এই যে, শিক্ষিত বেকারদের মনের মধ্যে যতটুকু জ্ঞানালোক, যত আধুনিক ভাব ও চিন্তা আছে, অশিক্ষিতদের মনের মধ্যে তত নাই। শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা অপেক্ষাকত কম, কিন্তু তাহারা জাগিয়াছে এবং সরব ও সক্রিয় হইয়াছে বলিয়। গবন্মেণ্ট মনে করিতেছেন “ভদ্রলোক"দের শিক্ষার সঙ্কোচন করিলেই বুঝি তাহাদের সরবতার সঙ্গে সঙ্গে বেকার-সমস্তার ও বৈপ্লবিক প্রচেষ্টর ৪ ধিনাশ সাধিত হইবে । কিন্তু যাহারা “ভদ্রলোক” বলিয়৷ কথিত হয় না, যাহার শিক্ষা পায় নাই, যাহাদের ংখ্যা অনেক বেশী, যাহার। গরিব ও উপার্জনহীন বা অতি সামান্ত উপার্জন করে, যাহাদের মরীয় হইবার সম্ভাবনা ও ক্ষমতা অধিক, তাহারাও জাগিতেছে। তাহারা কি করিবে, গবন্মেণ্ট তাহার পূর্বাভাস কিছু পাইতেছেন কি ? তাহার প্রতিষেধক কি উপায় অবলম্বন করিতেছেন ? যাহার এখন বি-এ পাস করে, তাহাদিগকে অশিক্ষিত রাখিলেও তাহারা বেকার থাকিবে এবং “ভদ্রলোক” থাকিবে, রাস্তার, রেলওয়ের, জাহাজঘাটার, কারখানার কুলি-মজুর, অন্ততঃ সদ্য সদ্য, হুইবে না। সে অবস্থায় তাহারা কি সহজে সন্ত্রাসক-নেতাদের জালে পড়িবে না ? ইংলণ্ডেও ত শিক্ষিত বেকার বহুৎ আছে। তাহার সন্ত্রাসক হয় না কেন ? সন্ত্রাসকপ্রচেষ্টার উচ্ছেদ সাধন করিতে