পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৬৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

eே.ை হুইলে বড় মন, নিঃস্বার্থ মন, সাহসী মন ও উদার রাজনীতিজ্ঞতা চাই, এবং এই দৃঢ় বিশ্বাস অনুসারে কাজ করা চাই, যে, ভারতীয়ের ঠিক সভ্যতম দেশের মানুষদেরই মত প্রকৃতিবিশিষ্ট মানুষ । বিহারে বাঙালী বিহার-উড়িষ্যার লাটসাহেব গত ডিসেম্বর মাসের গোড়ায় ভাগলপুর যান। তথাকার বাঙালী অধিবাসীরা তাহাকে অভিনন্দিত করিয়া বিহারের অধিবাসী বাঙালীদের বিরুদ্ধে যেসব রকম পক্ষপাত করা হয়, তাহার উল্লেখ করিয়া প্রতিকার চান । লাটসাহেব দুটি বিষয়ের উল্লেখ করিয়া বলেন, যে, তিনি অনুসন্ধান করিম জানিয়াছেন, যে, ঐ দুই বিষয়ে বাঙালীদের অভিযোগের কোন ভিত্তি নাই। একটি এই, যে, যে-সব বাঙালী বিহারের স্থায়ী বাসিন্দা ( "domiciled" ) বলিয় গণিত হইবার সার্টিফিকেটের দরখাস্ত করে, নানা তুচ্ছ ও বাজে ওজুহাতে তাহাদের অনেকের দরখাস্ত না-মঞ্জুর হয় । লাটসাহেবের নিজের উত্তরেই দেখিতেছি, গত তিন বৎসরে ভাগলপুর জেলায় যতজন দরখাস্ত করিয়াছিল, তাহদের দুই-তৃতীয়াংশের দরখাস্ত মঞ্জুর হইয়াছে, কেন-ন, কোন কারণে বাকী এক-তৃতীয়াংশের দরখাস্ত মঞ্জুর হয় নাই। পাটনার বেহার হেরাল্ড' বলেন, এক এক জেলার কৰ্ত্ত এক এক রকমের কারণ দেখাইয়া দরখাস্ত ন-মঞ্জুর করেন, এবং এ-বিষয়ে বাঙালীদের অভিযোগের যথার্থ কারণ আছে । আমরা বলি, ডোমিসাইল্ড হওয়ার, স্থায়ী বাসিন্দা বলিয়া গণিত হওয়ার, সার্টিফিকেট চাওটাতেই ষে বাঙালীদের প্রতি অবিচার করা হয়। বাংলা দেশে ত কোন বিহারীর কাছ থেকে ডোমিসাইল্ড হওয়ার সার্টিফিকেট চাওয়া হয় না, অথচ সরকারী পুলিস-বিভাগে ও অনেক মিউনিসিপালিটিতে বিস্তর বিহারী চাকরি পাইয়া আসিতেছে। অতি অদ্ভুত, হান্তকর ও অন্যায় ব্যবস্থা এই, যে, মানভূমের বাঙালীদের কাছ থেকেও এইরূপ সার্টিফিকেট চাওয়া হয় । মল্লভূম ( বর্তমান বাঁকুড়া জেলার বৃহৎ অংশ) ও বীরভূম যেমন ও যতদিন বাংলা দেশের অংশ, মানভূমও ততদিন বাংলাদেশের অংশ, এবং তাহা যে কত শতাব্দী কেহ ঠিকৃ করিয়া বলিতে পারে না। যদি অন্ত কিছু জানা না-থাঙ্কিত তাহা SO8O হইলেও মানভূম, শিখরভূম, ধলভূম, মল্লভূম, বীরভূম— ইত্যাকার নাম হইতেই ঐ সব অঞ্চলকে একই দেশ বা প্রদেশের অংশ বলিয়া অনুমান করা চলিত। মানভূমের আন্তর্গত কমুলার খনি প্রভৃতিতে বিস্তর হিন্দীভাষী লোকের আগমন সত্ত্বেও এখনও মানভূম প্রধানত: বাংলা-ভাষী জেলা। তা ছাড়া, সিংহভূম, ধলভূম, সাওতাল পরগণা, রাচী প্রভৃতি জেলায় অনেক বাঙালী পরিবার আছে যাহারা অন্তভঃ কয়েক শতাব্দী তথাকার অধিবাসী। চৈতন্যদেব ঝাড়খণ্ডের মধ্য দিয়া যাইবার সময় অনেক বাঙালী দেখিয়াছিলেন। বিহারে বাঙালীদিগকে ডোমিসাইল্ড হইতে বলা হয়, কিন্তু পঞ্জাবী, দিল্লীওয়াল, আগ্র-অযোধ্য-বাসী ও মধ্যপ্রদেশবাসীদের নিকট হইতে স্থায়ী-অধিবাসিত্বের সার্টিফিকেট চাওয়া হয় কি ? বিহারের লাটসাহেব বিহারের অধিবাসী বাঙালীদিগকে বলিয়াছেন :– 'ಸಿ', 'ಘೀ'...!"..$$.'" more closely you identify yourselves with the native born Bihari, the better it will be in the long run.” তাৎপৰ্য্য : “আমার বোধ হয় আপনারা আপনাদের সমাজ বা সম্প্রদায়কে স্বতন্ত্র বিবেচনা করাইবার জেদ যন্ত কম কfরবেন এবং ‘নেটিঙ বিহারীদের সঙ্গে যত ঘনিষ্ঠভাবে এক হইতে চাহিবেন, চরমে তন্তই শুল হইবে ।” লাটসাহেবের, অন্য রাজপুরুষদের এবং বিহারীদের কয়েকটি কথা মনে রাখা দরকার। বিহারবাসী বাঙালীদের একটি আলাদা মাতৃভাষা আছে ও তাহার সাহিত্য আছে, এবং তাহদের ঔদ্বাহিক আদান-প্রদান বঙ্গনিবাসী ও বঙ্গের বাহিরের বাঙালীদের সঙ্গেই হয় । স্বতরাং তাহারা তাহদের মাতৃভাষা ও তাহার সাহিত্য, পরিচ্ছদ, খাদ্য, আচার-ব্যবহার প্রভৃতি ছাড়িতে পরিবে না। আর সব বিষয়ে তাহার যেযে প্রদেশে থাকে, তথাকার লোকদের সঙ্গে এক । সেই সব প্রদেশের মঙ্গলামঙ্গলের ও স্বার্থের দিকে তাহারা লক্ষ্য রাখে । বিহারের কথাই ধরুন । বিহারের অধিবাসী বাঙালীর বিহারের কোন সেবা কি করে নাই ? নিশ্চয়ই করিয়াছে। স্বতরাং ভাষা প্রভৃতিতে আলাদা হুইলেও তাহার রাষ্ট্ৰীয় ও নাগরিক সব ব্যাপারে এক। মাগ্রাজ প্রেসিডেন্সীতে তামিল তেলুগু কয়াড় মালয়ালম প্রভৃতি ভাব, এবং বোম্বাই প্রেসিডেন্সীতে মরাঠা গুজরাট কন্নড সিন্ধী প্রভৃতি ভাষা