কাতিব দেবীলঙ্গ রায়ের দিল্লুক 3& মধ্যে ক্ষেত্তের-দ আপনাকে সাক্ষী মেনে বসেছেন। এইবার ক্ষেত্রনাথ গর্জন করিয়া উঠলেন–মিথ্যে কথাআপনি সব কথা বলুন গিয়ে--- বিপিন চক্রবর্তী বলিলেন তা হলে তুমি স্থা বলবে, বল ক্লান্তকণ্ঠে জগদ্ধাত্রী বলিল-ওর মধ্যে আর আমাকে কেন ? আমি বাইরের দিকে থাকব। তুমি ঘা হয় কর গিয়ে হৃদয়, ঐ গণ্ডগোলে আমাকে টেনেন।-- —সে কি ? হৃদয় আশ্চৰ্য্য হইয় কহিল—গণ্ডগোল কোথায় ? এত ঠিকঠাক ক’রে শেষকালে পিছিয়ে গেলে চলে ? বলিয়া তাহার মুখের দিকে তাকাইয়া দেখিল। বলিতে লাগিল আমার দিদি, এক কথা। যাটটি টাকা দেব, নগাই দেব, কাল চান কালই পাবেন । আপনি গিয়েই ঘর মেরামত আরম্ভ করতে পারবেন । কিন্তু দশ জনের মোকাবেল জমিটা নির্গোল হওয়া চাই একটু চুপ থাকিয় মৃদু মুক্ত হাসিয়া আবার বলিল বাপের বাড়ির গ্রাম -কার সামনে বেরুতে লজ্জ হচ্ছে বলুন স্ত ? . ক্ষেত্তোর-দা রয়েছেন বলে বুঝি তাই জগদ্ধাত্রী তীক্ষশ্বরে বলিল - আমি কাউকে গ্রাহ করি না, চল গ্রামের অনেকেই আসিয়াছেন। বিপিন চক্রবর্তী মহাশয় বয়সে সকলের বড় ; এতক্ষণ যা কথাবাৰ্ত্ত হইয়াছে জগদ্ধাত্রীকে সংক্ষেপে বুঝাইয়া দিলেন। মাঝখানে হৃদয় বাধা দিয়া বলিল-ও সেটেলমেন্টের কথা ধরবেন না আপনার, ট্যাকে দু-পয়সা গুজতে পারলে ‘হয়’কে সচ্ছন্দে নয় করা যায়। সহায়রাম জেঠীর বসতবাড়ি ছিল সিদ্ধ নিষ্কর। তিনি মারা যাবার পর ঘরদোর পড়ে গেল, ভিটের উপর এক হাটু জঙ্গল হয়ে পড়ল । তারপর ক'বছর পরে ক্ষেত্তোর-দ৷ ষ্ট্রর উত্তর-বাগের বেড়াটা ঘুরিয়ে ও জমিটাও ঘিরে ফেললেন । আমি বললাম-ক্ষেত্তেীর-ধা, কাগুটা কি ? জবাব দিলেন ওরা দেশে ঘরে এসে যখন দাবি করবে তখন ছেড়ে দেব ; পোড়ো জায়গাটুকু বেড় দিয়ে নিলে ওদিকে মজ দীঘি পড়ে যায়, দু-পাশে জার বেড় বাধতে হয় না, অনেক খরচ আসান হয়।. তখন কেউ বাণী হয় নি, ঝগড়া করতে কার মাথ৷ বাথ পড়েছে ? এবার জগদ্ধাত্রী দিদি এসে তার পৈতৃক ভিটে চাচ্ছেন -অনাথ বেওয়া মানুষ, আপনার দশ জনে বিচার করুন । ক্ষেত্তোরনাথ ক্ষেত্রনাথ ক্রুদ্ধ কণ্ঠে ঘাড় নাড়িয়া বলিলেন -আমি কিছু বলব না চক্ষেত্তি মশায়, আমি ত বলেছি-আমি এক কথাও বলব না। ও-ই বলুক। উত্তেজনার বশে স্বর কঁাপিতে লাগিল, বলিলেন - হৃদয়ের সঙ্গে যোগ-সাজস করে বড় আজি বাদী হতে এসেছে, ও বলুক আজ আপনাদের দশজনের সামনে ওর বিয়ের পরদিন, ফাল্গুন মাসের সতেরই তারিখ– তারিখটা পৰ্যন্ত বলে দিলাম, কুলীন বরযাত্রীরা বেঁকে বলল, মর্যাদা না পেলে খাওয়-দাওয়া করবে না, সহায়রাম খুঁড়ো চোখে অন্ধকার দেখলেন—সেই সময় কে রক্ষে করলে ? আমার মা'র বাজুবন্দ কেশব দত্তের কাছে বন্ধক দিয়ে চল্লিশ টাকা এনে দিলাম, খুড়ো আমার হাতখানা ধরে কেঁদে ফেল্পেন। বললেন, মেয়ে আমার রাজার ঘরে গেল—সে কিছু নিতে খুতে আসবে না। তোমার এ টাকা শোধ করতে পারি ভাল, না পারি জমাজমি বাড়ি ঘর-দোর সমস্ত তোমার । । থাকত যদি কেশব দত্ত বেঁচে, সে বলত ; এখন ও-ই বলুক— জগদ্ধাত্রী আগড়ের বঁাশ ধরিষ্ক৷ অন্য দিকে চাহিয়াছিল, তাহাকে উদ্দেশ করিয়া বলিতে লাগিলেন- বল সব । সহায়রাম কাক মাছুরে বসে, তুমি খাটের পাশে দাড়িয়েছিলে লাল বেনারসী পরে। অনেক বরযাত্রী বউ দেখতে এল সেই সময় বল তুমি, যে সত্যি নয় ; আমি এক কথায় সমন্ড ছেড়ে দিচ্ছি। জগদ্ধাত্ৰী কথা বলিল না, তেমনি মুখ ফিরাইয়া দাড়াইয়া রহিল। জবাব দিল হৃদয় । বলিল--কিন্তু আমরা গুনেছি সে টাকা শোধ হয়ে গিয়েছে ; তা ছাড়া চল্লিশ টাকায় অতটা নিষ্কর জমি হতে পারে না । ক্ষেত্রনাথ বলিলেন---তোমরা স্বপ্নে গুনেছ। চল্লিশ টাকা কি বলছ---কেশব দত্তের কাছ থেকে বন্ধক ছাড়িয়েছিলাম তার ডবল আশী টাকা দিয়ে। তার উপর আরও কত বছর হয়ে গেল, স্বদের স্বদ তস্য মদ ধরব না ? কত টাকা হয় তা হলে ? সিকি পয়সা রেহাত দিচ্ছিনে। একটু খামিয়া বলিতে লাগিলেন--আজি হৃদয় তোমার বড় আপনার হ’ল জগদ্ধাত্রী, কোথায় ছিল সেদিন ওরা ? ওর বাপ বরদাকাণ্ড
পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৬৫
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।