পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৬৫২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Q ess লোক হারিকেন লণ্ডন নিয়ে ওদের জাগিয়ে নিতে এসেছিল, ওরা তার সঙ্গে টেশনের বাহিরে যেতে গিয়ে ফটক খোল না পেয়ে দ্বাড়িয়ে রইল, কারণ ধিনি ষ্টেশন মাষ্টার, তিনিই বোধ হয় টিকিট নেবেন যাত্রীদের কাছ থেকে— ফটকে চাৰী দিয়ে তিনি গার্ডকে দিয়ে প্লাটফর্ণের মধ্যে ষ্ট্ৰাধারে লন্ঠনের আলোয় কি কাগজপত্র সই করাচ্ছিলেন। তারপর ট্রেন আবার চলতে লাগল-জাবার সেই রকম ঝোপ-ঝাপ অন্ধকারে ঢাকা ছোট-খাট গ্রাম, বড় বড় বিল, বিলের ধরে বাগীদের কুঁড়ে। আমার ভারি ভাল লাগছিল— এই সব জঙ্গন ক্ষুদ্র গ্রামে ঘরে ঘরে অবনীর বেয়ের মত কত গৃহস্থবধূ ভারবাহী পশুর মত উদয়াস্ত খাইচে হয়ত পেটপূরে ভূ-বেলা খেতেও পায় না, ফসর্ণ কাপড় বছরে পরে হয়ত স্থ-দিন কি তিন দিন, হয়ত সেই পুজোর সময় একবার, কোন সাধ-জাহলাদ পূরে না মনের, কিছু দেখে না, জানে ন, বোঝে না, মনে বড় কিছু আশা করতে শেখেনি, বাইরের জুনিয়ার কোনো খবর রাখে না—পাড়াগায়ের ডোবার ধারের বঁাশবাগানের ছায়ার জীবন তাদের আরম্ভ, তাদের সকল স্বৰ্ধ-দুঃখ, আনন্দ, আশা-নিরাশার পরিসমাপ্তিও ঐখানে । অবনীর বে গৃহস্থ বধূদেরই একজন। অন্ততঃ ওদের একজনও তার সাধের স্বৰ্গকে হাতে পেয়েচে । অন্ধকারের মধ্যে আমি বসে বসে এই কথাই ভাবছিলাম। আমি কল্পনা করবার চেষ্টা করলাম অবনীর বৌকে, যখন সে প্রথম নিম্ন চৌধুরীর বাড়িতে এল—কি ভাবলে অত বড় বাড়িটা দেখে, . অত ঘরদোর ...যখন প্রথম জানলে যে সংসারের দুঃখ দূর হয়েছে, প্রথমে যখন সে তার ছেলেমেয়েদের ফল কাপড় পরতে দিতে পারলে, আমি কল্পনা করলাম দশঘরার হাট থেকে অবনী বড় মাছ, সন্দেশ, ছান। কিনে বাড়িতে এসেচে... অৰনীর বে। এই প্রথমে সচ্ছলতার মুখ দেখলে তার সে খুণী-ভরা চোখমুখ অন্ধকারের মধ্যে দেখতে পাচ্চি।... ট্রেন আর একটা ষ্টেশনে এসে দাড়িয়েছে। শাভিরাম আলোয়ান মুড়ি দিয়ে জড়সড় হয়ে বসে আছে, মাঝে মাঝে বললাম-শাভিরাম সুমুক্ত নাকি? আমি একটা গল্প জানি এই রকমই জোর পরটা জলে আমার মনে পড়েচে ক্টে* . . - هه ها هي به { শবাসনা শুs Sల8ం কিন্তু শাভিরাম এখন গল্প শুনার মেজাজে নেই। সে আরামে ঠেস দিয়ে আরও ভাল করে মুড়িহুড়ি দিয়ে বসলো। সে একটু ঘুমুবে । - পূৰ্ণবাবুর কথা আমার মনে পড়েচে শক্তিরামের গল্পটা শুনার পরে এখন। পূৰ্ণবাৰু আমীন ছিল, পাটনায় আমরা একসঙ্গে কাজ করেছি। পূৰ্ণবাবুর বয়স তখন ছিল পঞ্চাশ কি বাহান্ন বছর । লম্বা রোগা চেহারা, বেজায় আফিম থেতে— দাত প্রায় সব পড়ে গিয়েছিল, মাথার চুল প্রায়ই শাদানাক বেশ টিকল, অমন স্বন্দর নাক কিন্তু আমি কম দেখেছি, রং না-ফস1ন-কালো। পূৰ্ণবাৰু খুব কম মাইনে পেত, এখানে কোন রকমে চালিয়ে বাড়িতে তার কিছু টাকা না পাঠালেই চলবে না—কাজেই তার পরনে ভাল জাম-কাপড় এক দিনও দেখিনি । পূৰ্ণবাবু নিজে রোধে খেত। এক দিন তার খাবার সময় হঠাৎ গিয়ে পড়েচি– দেখি পূর্ণবাৰু থাচ্চে শুধু ভাত— কোন তরকারী, কি শাক, কি জালুভাতে কিছু না-কেবল একতাল সবুজ পাতালত বাট-ওবুধের মত দেখতে—কি একটা দ্রব্য ভাতের সঙ্গে মেখে মেখে খাচ্চে । জিজ্ঞাসা করে জানলাম, সবুজ রঙের দ্রব্যটা কাচ নিমপাতা-ৰাট । পূৰ্ণবাবুর বিবাহ হয় বাগবাজারে বেশ সম্রাম্ভ বংশের মেয়ের সঙ্গে—তবে তখন তাদের অবস্থা খুব ভাল ছিল না। পূর্ণ বাবুদের পৈতৃক বাড়িও নেই কলকাতায়, ভবানীপুরে খুব জাগে নাকি প্রকাও বাড়ি পুকুর ছিল, এখন তাদের দু-পুরুষ ভাড়াটে বাড়িতে থাকে। পূৰ্ণবাবুর আঠার উনিশ বছর বয়সে পিতৃবিয়োগ হয়, তিনি ছেলের জন্তে শুধু যে কিছু রেখে যাননি তা নয়, ছেলেটিকে লেখাপড়াও শেখান নি। কারণ তিনিও জানতেন এবং সবাই জানত যে তার দরকার নেই, অত বড় সম্পত্তির যে মালিক হবে দু-দিন পরে তার কি হৰে লেখাপড়ায় ? - ছেলেটিও জ্ঞান হয়ে পৰ্যন্ত তাই জানত বলে লে শেখবার কোন চেষ্টাও ছিলনা। পূৰ্ণবাবুর খণ্ডর আইঞ্জি মেয়েকে ওই গরিব রে দিয়েছিলেন। * পূৰ্ণবাবুর বাবা তো মারা গেলেন, পূর্বাবুর বড়ে রেখে গেলেন সসা, নৰিবাতি পুৰন্থ সন্ন দি