পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৬৫৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ফাগুন $3.3. বিলাতের অভিজ্ঞতা। আমি কেবল থাকিয়া খাৰিয়া হ দিতে লাগিলাম: আমরা যখন বেড়াইয়া ফিরিলাম, তখন সন্ধ্যা উত্তীর্ণ হইয়াছে। আমার বসিবার ঘরে জালো দেওয়া হইয়াছে। তিনি গাড়ী হইতে আমার সঙ্গে নামিয়া আসিলেন, এবং আমার বসিবার ঘরে আসিয়া একখানা ঈজীচেয়ারে বসিয়া পড়িলেন। পূর্বেই বলিয়াছি, তিনি প্রথম দিন আসিয়াই আমার গুইবার ও বসিবার ঘর আসবাবপত্রে ভরিয়া দিয়াছেন। তিনি ঈজীচেয়ারে বসিয়া একটা সিগারেট ধরাইয়া বলিলেন, “আপনার এ ঘরটি ছোট হ'লেও চমৎকার। আই লাইক সাচ এ কোজি লিট্‌ল কর্ণার (আমি এই রকম একটি ছোট আরামদামুক কোণ ভালবাসি ) । আপনি সামনের ঐ চৌকীটায় বহন । এই সময় এক পেম্বালা চা হ’লে বড় ভাল হ’ত ” আমি হাসিয়া বলিলাম, “সে আর বেশী কথা কি ? আমি দশ মিনিটের মধ্যে আনিয়ে দিচ্ছি।” তিনি বলিলেন, “না-না—আপনি যাবেন না, আপনার ঠাকুরকে বলুন, সেই নিয়ে আসবে।" আমি ঠাকুরকে জল গরম করিতে বলিয়া চায়ের সরঞ্জাম লইয়া আসিলাম। রাজা সাহেব বলিলেন, “সে দিন আপনার হাতের তৈয়েরি চা অতি স্বন্দর হয়েছিল। আমি সে লোভ সম্বরণ করতে পারছি নে ৷” আমি কোন কথা না বলিয়া একটু হাসিলাম। কিন্তু তাহার এই অপ্রত্যাশিত আগমন আমার আদৌ ভাল লাগিল না। কিন্তু বাধ্য হইয়া আমাকে তাহ সহ করিয়া যথারীতি অতিথি-সৎকার করিতে হইল। ঠাকুর কেটলিতে করিয়া জল গরম করিয়া আনিল, আমি চা প্রস্তুত করিয়া তাহার সামনে টিপাইয়ের উপর দিলাম। তিনি চা থাইতে খাইতে নানা গল্প আরম্ভ করিলেন । কিন্তু আমি তাহার কথোপকথনে যোগ দিতে পারিতেছিলাম না, আমার মনের ভাব— তিনি উঠিলেই আমি বাচি। চা খাওয়া শেষ হইলে তিনি বলিলেন, “আমার বোধ হচ্ছে আজ আপনি টায়ার্ড (ক্লান্ত ) হয়েছেন। আজ তবে আমি এখন আসি। গুড নাইট।” এই বলিয়া তিনি ছড়ি হাতে করিয়া বাহির হইলেন। তাহার কিছুক্ষণ পরে নিস্তারিণী আসিলেন। তাহাকে ५ गका cनषिद्र चांधि जखडे इहेणाय न ; डिनि यानिश বলিলেন, “আমি জার একবার এসেছিলাম, এসে দেখি রাজা সাহেব আছেন। কিন্তু আপনি এখানে একলা থাকেন, তা জেনে-ওনেও রাজা সাহেবের রাত্রে এখানে আসা কি ভাল ? লোকে কি বলয়ে ?” তাহার এই কথা গুনিয়া আমার আপাদমস্তক ক্রোধে জলিয়া উঠিল। আমি বলিলায়, “দিদি, আজও আপনার সেই কথা ? আমি কি অন্যায় কাজ করেছি, যে, লোকে আমার নিন্দ করবে ? একজন ভদ্রলোক আমার বাসায় এসেছিলেন, আমি কি করে তাকে নিষেধ করতে পারি ? জাপান কি পারতেন ?” 瞳 তিনি বলিলেন, “ভাই, রাগ করবেন না। আপনার কোন দোষ নাই আমি জানি। কিন্তু রাজা সাহেবের এভাৰে আসা একেবারেই উচিত হয় নাই। তিনি কি সমাজের নিয়ম-কামুন জানেন না ? আমাদের স্ত্রীলোকের দোষ ষে পদে পদে ” আমি বলিলাম, “আর পুরুষের বেলায় কোন দোষ নেই। সমাজের এই একচোখে বিচার, এই পক্ষপাতস্থচক আইনকামুন আমি ভাঙতে চাই । আর এখানে আমার সমাজ কোথায় ? আমি এখানে সম্পূর্ণ স্বাধীন।” তিনি বলিলেন, “সেই জন্যই আপনার আরও সাবধান হয়ে চলা উচিত। আজ যা হয়েছে হয়েছে, আর আপনি রাজা সাহেবকে সন্ধ্যার পর এখানে আসতে উৎসাহ দেবেন না।” আমি বলিলাম, “উৎসাহ আজ ত আমি দিই নাই, কিন্তু ভদ্রলোক ইচ্ছা ক’রে ঘরে এসে বসে পড়লেন, আমি কি ক’রে নিবারণ করি ? তাকে গলাধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়া কি সম্ভব ? একটা রূল অব এটিকেট (ভদ্রতার নিয়ম ) আছে ত?” তিনি আর কিছু না বলিয়া চলিয়া গেলেন। আমার মন নিতান্ত তিক্ত হইয়া পড়িল । আমার আর কিছু ভাল লাগিল না । আহারাদি করিয়া গুইয়া পড়িলাম। আমি বিছানায় গুইয়া চিন্তা করিতে লাগিলাম, রাজার সঙ্গে গাড়ীতে বেড়ান ও এখানে তার সঙ্গে মেলামেশা করার জন্ত আমাকে সকলে নিন্দ করিতেছে । আমার আচরণ কি যথার্থই নিলার উপযুক্ত ? রাজ ত এ-পর্যন্ত আমার সঙ্গে কোন অভত্র ব্যবহার করেন নাই, তিনি জামার সন্মান রক্ষা করিয়াই চলিতেছেন।