পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৬৬৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ফান্তন ప్ర్రt এই আপদকে নীয় দূর করিবার জন্ত আমি শান্তভাৰে বলিলাম, “দেখুন, রাজা সাহেব, আপনার রাণী হওয়া যে কত সৌভাগ্যের বিষয়, আমি কি তা বুঝি নে ? কিন্তু আমার বড় ভাই আছেন, তিনিই আমার অভিভাবক। তার অমতে আমি কোন কাজ করতে পারি নে ৷”

  • ful bonifos ool of coa, “Oh certainly— you must -consult your brother (fā’so winfa আপনার ভাইয়ের মত নেবেন ) । আপনি তাকে টেলিগ্রাম করুন, বা সব কথা বুঝিয়ে চিঠি লিখুন। সাত দিনের মধ্যে তার উত্তর নিশ্চয়ই পাবেন । এই সাত দিন পরে আমি আবার আসব। আমি এই ব্রেসলেট আর ফেরত নেব না। হা আমি আপনাকে উপহার দিয়েছি, উহ। আপনার কাছেই থাকুক। গুড নাইট ।”

এই বলিয়া সেই ব্রেসলেট জোড়া টেবিলের উপর রাথিয় রাজা সাহেব প্রস্থান করিলেন । আমি এই আকস্মিক বিপৎপাতে একেবারে ভাঙিয়া পড়িলাম। আমি চৌকীতে বসিতে না পারিস্থ সেই বসিবার ঘরেই মেঝের উপর গুইয়া পড়িলাম। আমি শুইম্বা গুইয়া ভাবিতে লাগিলাম,~~ হায় হায়, আমার আবার এ কি বিপদ উপস্থিত হ’ল ! আমাকে এ বিপদ হতে কে রক্ষা করবে ? আমি কাহার সঙ্গে এখান হতে পালিয়ে যাব ? আমার আর এক মুহূৰ্ত্তও এখানে থাকা হবে না। দাদাকে টেলিগ্রাম করলে নিশ্চয়ই সে আসবে। কিন্তু রাজা যদি আমাদিগকে যেতে না দেয় ? মুখে ভদ্রভাব দেখালেও তার অন্তঃকরণে কি আছে, কে জানে ? এতদিন সে যে-ভাবে আমার সঙ্গে ব্যবহার করেছিল, তাহাতে কে জানত, তার ভিতরে এত সব কুমতলব বাসা বেঁধে আছে। নিস্তারিণী আমাকে পূৰ্ব্ব হতে সতর্ক করেছিল। পণ্ডিত মশায়ও আমাকে যথার্থ কথাই বলেছিলেন। আমি তাহদের হিতোপদেশে কর্ণপাত না করে নিতান্ত অঙ্গায় কাজ করেছি। কিশোর যথার্থই বলেছিল— স্বামীই স্ত্রীলোকের রক্ষাকৰ্ত্তা, স্বামীগৃহই তার আশ্রয়স্থল। কিশোর আমাকে প্রাণ দিয়ে ভালবেসেছিল, আমি নিতান্ত নিষ্ঠুর হয়ে ক্টিা’কে প্রত্যাখ্যান করেছি। আমি তাকে প্রত্যাখ্যান করে আমার মায়ের আদেশ লঙ্ঘন করেছি। আমার সেই পাপের প্রায়শ্চিত্ত অবশুই হবে। আমার মনে অভ্যন্ত রূপ হয়েছিল, পানী ভগবান আমার ক্ষেপচু না করে ছাড়বেন না। আমি অহঙ্কারে মত্ত হয়ে, এপর্যন্ত এক দিনও ভগবানের নাম করিনি। শুনেছি, তাকে আনে প্রাণে ডাকলে তিনি বিপদ থেকে উদ্ধার করেন। ছে ভগবান, আমাকে উদ্ধার কর, আমার যে রক্ষাকৰ্ত্তা জায় কেউ নেই। - আমি এইরূপ চিন্তা করিতে করিতে অশ্রুবিসর্জন করিতে লাগিলাম। একবার অফুট স্বরে বলিয়া উঠিলাম—“কিশোর, তুমি কোথায় ?” কত ক্ষণ এই ভাবে কাটিয়াছিল জানি না, হঠাৎ চক্ষু মেলিয়া দেখি, কে একজন আমার শিয়রে বসিয়া আছে । আমি তাহাকে দেখিয়া চমকিয়া উঠিলাম, জামার চক্ষুকে বিশ্বাস করিতে পারিলাম না। এই মূৰ্ত্তি কি আমার মানসকল্পিত ? আমি যাহার কথা ভাবিতেছিলাম, হঠাৎ সে কিরূপে আমার শিমুরে আসিয়া বসিল । * . আমাকে ভীতচকিত দেখিয়া সেই মূৰ্ত্তি কথা কহিল। সে বলিল, “তুমি ভয় পেয়ে না, নীরু। আমি কিশোর ।” “কিশোর। কিশোর! তুমি ঈশ্বরের প্রেরিত দূত ? তুমি অামাকে বিপদ হতে উদ্ধার করতে এসেছ ? এস, এল, আমার হারানো মাণিক এস-আমি তোমাকে অনেক দুঃখ দিয়েছি, আর আমি তোমাকে দূরে ঠেলব না—” : আমি আবেগ ভরে এই বলিয়া কিশোরের কণ্ঠলিল্পন করিলাম। কিশোর আমার হাত ধরিয়া তুলিয়া আমাকে সেই ঈজি চেয়ারের উপর শোয়াইয়া দিল। আমি চক্ষু মুছিয়া তাহাকে ভাল করিয়া দেখিতে লাগিলাম, তখনও যেন আমার স্বপ্নের ঘোর কাটে নাই। কিশোরও তাহার মনের আবেগ চাপিতে না পারিয়া চক্ষু মুছিতে লাগিল । কতক্ষণ এই ভাবে কাটিল, বলিতে পারি না। অবশেষে কিশোর বলিল, “আমি কলকাতায় এসে স্বকুমারের কাছে গুনলাম তুমি এখানে আছ । তোমাকে না দেখে আমি ক'দিন থাকতে পারি ? তাই আজ সকালে এখানে এসে পৌঁছেছি। এখানকার হাই স্কুলের মাষ্টার যুগল বাৰু আমার সহপাঠী বাল্যবন্ধু ; তার সঙ্গে দেখা হ’ল, তিনি আমাকে উার বাসায় নিয়ে গেলেন। তিনি তোমার সম্বন্ধে অনেক কথা বললেন। শুনলাম, এখানকার রাজা নাকি তোমাকে নাগপাশে বন্ধন করবার চেষ্টায় আছেন।” - -