পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭৪৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মলন্তন মতের অমুকুল ভাবে তেমন তেমন পদবাক্যের সমাবেশ করা হইয়াছে। সম্মেলনের কার্য্যপদ্ধতি যে-প্রকার ছাপা হইয়াছিল, তাহার কিছু ব্যতিক্রম করা হইয়াছিল। মুত্রিত কার্যক্রম এখন খুজিয়া পাইতেছি না, ব্যতিক্রমগুলিও আমার মনে নাই। অতএব কালক্রমের দিকে লক্ষ্য না রাখিয়া অভিভাষণ গুলির কিঞ্চিৎ আভাস দিয়া যাইতেছি, কোন কোন অভিভাষণে ভাল কথা থাকিলেও তাহা হইতে খাপছাড়া ভাবে কিছু উদ্ধৃত করা কঠিন । অর্থনীতি ও সমাজতত্ত্ব শাখার সভাপতি অধ্যাপক যোগেশচন্দ্র মিত্র বাংলা দেশের দুটি প্রধান সমস্তার আলোচনা করেন। প্রথমটি মধ্যবিত্ত শ্রেণীর বিত্তহীনতা—যাহাকে চলিত কথায় ভদ্রলোকদের মধ্যে বেকার সমস্ত বলে। এই সমস্যার সমাধানকল্পে যে-সব প্রস্তাব করা হইয়া থাকে, তিনি স্বীয় অভিভাষণে তাহার প্রতিকূল সমালোচনা করেন। প্রথম প্রস্তাব “যুবকদিগকে কার্যকরী বৃত্তি শিক্ষা দিয়া ফুটারশিল্পে লাগাইয়া দাও।” “ভদ্রলোকের ছেলেদিগকে কেবল কুটার-শিল্প শিক্ষা দিলেই বৃত্তিহীনতার সমস্যার সমাধান হইবে না," কেন, তাহা তিনি দেখাইয়াছেন। “তার পর একটা উচ্চ রব উঠিয়াছে—গ্রামে অর্থাৎ ufos forfosi ots (back to the village ) " এই পরামর্শের অমুসরণ যে দুঃসাধ্য এবং অমুসরণ করিলেও যে তাহার দ্বারা বেকার সমস্তার সম্যকৃ সমাধান হইবে না, তাহ তিনি দেখাইতে চেষ্টা করিয়াছেন । উচ্চশিক্ষিত যুবকদিগের কৰ্ম্মাভাব দূর করিবার জন্য প্রস্তাবিত তৃতীয় উপায় বহুসংখ্যক বৃহৎ কারখানা স্থাপন । সে বিষয়ে যোগেশ বাবু বলেন :– যথেষ্ট পরিমাণে কলকারখানা স্থাপন করিয়া যে-সব পণ্যের বেলায় আমাদের বিদেশীর সহিত প্রতিযোগিতা করিবার সুবিধা আছে, সেই সমস্ত পণ্য দেশে উৎপাদন কঃিখার ব্যবস্থা করা যাইতে পারে এবং তাঁহাতে কৰ্ম্মচারীরূপে অনেক শিক্ষিত যুবকের কৰ্ম্মসংস্থানও হইতে পারে। বিস্তু সৰ্ব্বাবস্থায়ই এইরূপ কৰ্ম্মচারীর সংখ্যা সীমাবদ্ধ হওয়া ভিন্ন উপায় নাই । তাহাতে বহুসহস্ৰ যুবকের কৰ্ম্মসংস্থান হইতে পারে না। বিশেষ বৃহদাকারের শিল্পপ্রতিষ্ঠান বর্তমান অবস্থার ভারতবর্ষে, বিশেষ বঙ্গদেশে, কতদুর বাড়াইবার সুযোগ ও হবিধা আছে, তাহা চিন্তার বিষয়।” ভদ্রলোকদের মধ্যে বেকার-সমস্যার সমাধানের জন্য যোগেশ বাবুর নিজের প্রস্তাব নিম্নলিখিত বাক্যগুলির মধ্যে পাওয়া যায়ঃ গোরখপুরে প্রবাসী-ব্ৰজ-সাহিত্য-সম্মেলন বদল ও নূতনের সমাবেশ দেখা যায়। যখন যেমন দরকার পড়িয়াছে, স্ব স্ব ఆ33, “চাষীর কৃষিজাত দ্রব্য উৎপন্ন করিবে, কারিকর শিল্পোৎপন্ন স্নক প্রচুর পরিমাণে সরবরাহ করিবে, এবং দেশেরই মধ্যবিত্ত শ্রেণীর লোকে, উহার সংগ্রহ ও বন্টনের ভার লইবে, পৃথিবীর বর্তমান অবস্থায় ইহাই স্বাভাবিক কৰ্ম্মধারা বলিয়া মনে হয়। বাংলা দেশে এই কৰ্ম্মধারা প্রবর্তিত, ঐযুক্ত যোগেশচন্দ্র মিত্র করিতে পারিলেই বহুসহস্ৰ শিক্ষিত যুবকের বৃত্তিহীনতা দূর হইতে পারে। এবং তাহাদিগের অর্থসাচ্ছল্যের ফলে প্রচুর পরিমাণে মূলধন সঞ্চিত হইয়া দেশে শিল্পপ্রতিষ্ঠানের সর্ব প্রকারে সুবিধা হইতে পারে।” র্তাহার অভিভাষণে সাক্ষাৎ ও পরোক্ষ ভাবে এই প্রস্তাবের সমর্থক যে-সব কথা আছে, তাহার কিয়দংশ উদ্ধৃত করা আবগুক । কোন দেশেই অস্তবাণিজ্য ও বহিবাণিজ্যের দ্বারা দেশে যথেষ্ট পরিমাণে মূলধনের সংস্থান এবং চাহিদার পরিমাণ ও পণ্য ধন্টনের ধারা বিষয়ে একটা ধারণা হইবার পূর্বে সেই দেশে যথেষ্ট পরিমাণে পণ্যউৎপাদক বৃহৎ কলকারখানা স্থাপিত হইয়াছে এরূপ বড় দেখা যায় মা। কারণ বাণিজ্য ভিন্ন আবশ্যকীয় অর্থাগম ও বাজারের চাহিদা ও রুচির সন্ধান সাধারণতঃ হয় না। ইতিহাস এই কথার সাক্ষ্য দেয়। ইলেণ্ডের কলকারখানার যুগ আরম্ভ হওয়ার পূর্বে বাণিজ্য, বিশেষ বহিবপণিজ্যঅতিশয় ৰিক্ত হইয়াছিল; এমন কি প্রাচ্যদেশের সহিত বাণিজ্যে ইংলণ্ডের ধনাগমের প্রচুর পরিমাণে সুবিধা হইতেই তথাকার পণ্য-উৎপাদক শিল্পপ্রতিষ্ঠানের আরম্ভ বলিতে হইবে। স্বাধীনতা যুদ্ধের পর আমেরিক ইলেণ্ডের সহিত বাণিজ্যশৃঙ্খলমুক্ত হইয়া পৃথিবীর সহিত ব্যবসা বাণিজ্যে প্রচুর পরিমাণে ধনলাভ করার পরেই তথায় কলকারখানার প্রতিষ্ঠার স্বত্রপাত হইয়াছিল। জাতীয় মূলধন অন্তর্বাণিজ্যে ও বহির্বাণিজ্যে সঞ্চিত হইয়া থাকে। প্রাদেশিক হিসাবে খঙ্গিতে গেলে বম্বের সুবিধাজনক ভৌগোলিক অবস্থান উহাঙ্কে কিয়ৎপরিমাণে ঐ