পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭৬৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভারত-জাপানী চুক্তি লণ্ডনে স্বাক্ষরিত হইবে জাপান ও ভারতবর্ষের মধ্যে যে চুক্তি হইয়াছে, তাহ লগুনে স্বাক্ষরিত হইবে স্থির হইয়া গিয়াছে । লগুনে স্বাক্ষরিত হইবার বিরুদ্ধে ভারতীয় ব্যবস্থাপক সভায় তর্ক উত্থাপিত হইয়াছিল। ব্যাপারটি যখন সম্পূর্ণরূপে জাপান ও ভারতবর্ষের মধ্যে বাণিজ্য-সম্পর্কিত, তখন চুক্তিটি ভারতবর্ষে স্বাক্ষরিত হওয়াই উচিত ছিল। ভারতবর্ষ ইংলণ্ডের অধীন, সত্য : কিন্তু সেই কথাটা অকারণ উত্তমরূপে সমঝাইয়া দিবার চেষ্ট করা অনাবগুক, ও অনুচিত এবং ভারতবর্ষের স্বাধীন হওয়া যখন প্রার্থনীয়, তখন বিন-রক্তপাতে, উপলক্ষ্য ঘটিলেই, ভারতবর্ষের আত্মকর্তৃত্ব স্বীকৃত হওয়া উচিত। ভারতে বিলাতের ক্রিকেট খেলোয়াড়দল কিছুদিন পূৰ্ব্বে হিমালয়ের সৰ্ব্বোচ্চ শৃঙ্গে আরোহণ করিবার জন্য ইংলণ্ডের পক্ষ হইতে ইংরেজদের যে ক্ষুদ্র দল চেষ্টা করিয়াছিল, তাহার ব্যয় নির্বাহ করিয়াছিলেন একজন ইংরেজ মহিলা । তিনি যে এত টাকা খরচ করিয়াছিলেন, তাহার উদ্দেশু বলিয়াছিলেন ইহা ভারতীয়দিগকে দেখান, যে, ইংরেজদের এখনও পৌরুষ, দুঃসাধ্য কাজ করিবার সাহস এবং কষ্টসহিষ্ণুতা আছে। অর্থাৎ তিনি পরোক্ষভাবে ভারতবর্ষের লোকদিগকে বলিতে চাহিয়াছিলেন, “তোমরা ভারতের ইংরেজাধীনতা বাড়িয়া ফেলিতে চাহিতেছ হয়ত এই মনে করিম, যে, ইংরেজরা পৌরুষহীন নিবাঁধ্য হইয়াছে ; কিন্তু দেখ, সে ধারণ সত্য নহে।” ভারতবর্ষে যে ইংরেজ ক্রিকেটারদল খেলায় ভারতীয়দিগকে বিশেষ রকম পরাজয় স্বীকার করাইতে আসিয়াছে এবং তাঁহাতে সকলকামও হইতেছে, সেই খেলার অভিধানের মধ্যেও ঐ রকম মতলব আছে কিনা, কে জানে। ইংরেজদের খেলায় ইংরেজরা ওস্তাদ হইবে, তাহাতে আশ্চর্যের বিষয় কিছু নাই। কিন্তু রণজিৎসিংহজী, দলীপ সিংহজী প্রভৃতি ভারতীয় ক্রিকেটার ইংলণ্ডেও খুব কৃতিত্ব দেখাইয়াছিলেন, স্বতরাং অবসরবিশিষ্ট বলিষ্ঠ লোকদের লইয়া দল বাধিতে পারিলে ক্রিকেটে ভারতীয় দলও যশস্বী হইতে পারে। তাহার পরোক্ষ প্রমাণ, ধাননিপ্রমুখ ভারতীম হকীর দল জগতে শ্রেষ্ঠ বলিয়া স্বীকৃত হইয়াছে। বিজয়নগরমের মহারাজকুমারের দল যে কাশীতে ইংরেজ ক্রিকেটারগিকে পরাজিত করিয়াছে, ইহা আর একটা প্রমাণ। ইংরেজরা ও ইউরোপীয়রা তাঁহাদের পুরুষোচিত খেলায় প্রতিযোগিতা করিতে আমাদিগকে আহান করে। ভারতীয়দের উচিত ভারতীয় পুরুষোচিত কোন খেলায় তাহাদিগকে প্রতিযোগিতা করিতে আহবান কর । বাংলা দেশে ও অন্যান্ত প্রদেশে অনেক ধনীর সস্তান বিলাসে ব্যসনে বা তাহ অপেক্ষ গহিত ব্যাপারে দেহ-মন নষ্ট করেন, কাজ কিছু না করিয়া অকাজ করেন। র্তাহারা ইচ্ছা করিলে দেশী-বিদেশী সব পুরুষোচিত ক্রীড়ায় পারদর্শী হইতে পারেন । - পোষে নানা স sার অধিবেশন বহু বৎসর ধরিয়া পৌষ মাসে ভারতবর্ষে নানা রাজনৈতিক, সামাজিক, বৈজ্ঞানিক, প্রাচ্যবিদ্যাবিষয়ক, শিক্ষাবিষয়ক ও অন্যবিধ সভার অধিবেশন হইয়া আসিতেছে। সবগুলির বিবরণ দেওয়া এবং তাঁহাদের কার্য্যাবলীর আলোচনা করা মাসিক কাগজের পক্ষে অসম্ভব, এবং শুধু তাহাদের নাম করিয়া বিশেষ কিছু লাভ নাই। এত রকমের এত সভার অধিবেশন যে হয়, তাহা হইতে বুঝা যায় যে, নানাদিকে উন্নতি ও প্রগতির ইচ্ছা ভারতীয়দের জঙ্কিয়াছে। সকল চেষ্টায় সকলের যোগ দেওয়া অসাধ্য। কিন্তু যে-সব চেষ্টা আন্তদিগকে দাবাইয়া ব৷ বঞ্চিত রাখিয়া নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্ত অভিপ্রেত, সেগুলি