পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৮০৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

чеа ় প্রবাসী ; この○8○ মাৰি বলিল-কত্তা, বলেন ত আমার আঁখাটী -জেলে দি, ভাত-ঠাত যা হয় চারটি রোধে নিয়ে নৌকোতেই আজকের রাত কাটাবার ব্যবস্থা করুন। তারপর করুশার দিকে ফিরিয়া বলিল-মা'ঠান, জমন মুখ গুজে বসে থাকলে ত চলবে না। ধ-হয় একটা ব্যবস্থা করতেই হবে । করুণা মুখ তুলিল না। আমিই উঠিয়া দাড়াইয়া বলিশম— দেখি, বাজারটা একবার ঘুরে আসি । তারপর কি পাওয়া যায়, না-পাওয়া যায় দেখে একটা ব্যবস্থা যা-হয় করা যাবে। পাড়ে দাড়াইয়া সামান্ধকারে অস্পষ্ট ও-পারের পানে তাকাইয়া মনে হইল, আজ যেন করুণা ও আমার মধ্যে এপার ওপার ফারাক্ দেখা দিয়াছে, কিন্তু পূৰ্ব্ব দিনের দু-এর মাঝের মধুস্রোত কলহাসিনী যোগাযোগের নদীটি একেবারে চিরদিনের মত শুকাইয়া মরিয়া গিয়াছে। বাজার হইতে ফিরিয়া আসিতে অধিক বিলম্ব হয় নাই । প্রয়োজনাতুযায়ী সকল জিনিষই বাজারে পাওয়া যাইবে, এমন কি হোটেল হইতে ভাত আনাইয়াও রাত কাটাইবার ব্যবস্থা করিতে পারিব জানিয়া আশ্বস্ত হইলাম। বুঝিলাম, তাড়াহুড়া করিবার কিছু নাই । নৌকার কাছে আসিয়া দাড়াইতেই করুণা ভিতর হইতে কেমন অপরিচিত কণ্ঠে বলিয়া উঠিল—দে—খু-ন... কণ্ঠ তাহার স্বম্পষ্ট দুর্বলভায় কঁাপিতেছিল । আমি তাহার এই সম্পূর্ণ অপরিচিত সম্ভাষণে বিশেষ বিস্থিত হইলাম। করুণার হইল কি ? করুণ কি জোর করিয়া আমাকে অপরিচিত করিয়া তুলিতে চায় ? পরক্ষণেই করুণ নিজেকে সামূলাইম্বা লইয়া বুলিল -- না,...দেখ, নৌক’য় দোলা পেয়ে পেয়ে গা আমার কেমন করচে। অামাকে পাড়ে তোল, নৌকায় আর আমি এক মুহূৰ্ত্তও বসতে পারচি নে । তাড়াতাড়ি আগাইয়া গিয়া বলিলাম—উঠে এস, আমি হাত ধ’রে তোমকে পাড়ে তুলে নিচ্চি। করুণ উঠিয়া হাত বাড়াইয়া দিতেই তাহাকে ধরিয়া পাড়ে তুলিলাম। ছোট বাদাম খাটাইয়া একটি ফাজিল ছোরা নৌকার হাল ধরিয়া বসিয়া গান ধরিয়াছিল,— আমার এ ঘর খালি, e षग्न थालि, রস্থই ঘর ক্যান খালিরে—এ-এ - ? অফুরন্ত এ-এ-এ...যোগ করিয়া কেমন করুণ মর্শ্বাস্তিক একটি স্বরের আবহাওয়া স্বজন করিয়া সে নৌকা বাহিম চলিয়াছিল। তাহার ছোট নৌকার পিছনে স্বরের তালে তালে যেন জলের মূর্ছনা জাগিতেছিল । করুণ পাড়ে উঠিয়া বলিল—আমার যেন শরীর কেমন করচে | তাড়াতাড়ি তাহার ছাড়িয়া-দেওয়া হাতটা আবার ধরিয়া ফেলিয়া বলিলাম—তবে উঠে এলে কেন ? নৌকোতে শুয়ে থাকাই ত উচিত ছিল তোমার । করুণার কণ্ঠ ক্রমেই করুণ হইয়া উঠিতে লাগিল । সে বলিল-আম এর কিছুই এখন বুঝতে পারছি নে। এই যে আমাদের চিরদিনের মত ছড়াছাড়ি—এ কেমন ক’রে সম্ভব হ’ল ? আমাকে আর একবার সব বুঝিয়ে বলতে পার ? আমার আগাগোড়া কিছুই যে এখন আর মনে পড়চে না। আমি বিস্থিত হইয়া বলিলাম— তোমার শরীর খারাপ ব’লেই হয় ত এ কথা এখন মনে হচ্ছে। আবার ভাল হ’লেই সব স্মরণ হবে । করুণা তাড়াতাড়ি বলিল-না গো না, এ শরীর আর আমার কোনদিনই ভাল হবে না । অনস্ত নিঃসঙ্গতা... এ কি মানুষ কখনও ভাবতে পারে ? সত্যি, আমি এখনও ঠিক বুঝে উঠতে পারটি নে, আমাকে ভাল করে সব বুঝিয়ে বল। আমরণ কি আমাকে এই পদ্মার মত নিঃসঙ্গ জীবন যাপন করতে হবে ? অার এই পদ্মারই মত সৰ্ব্বগ্রাসী ব্যাকুলত৷ বুকে নিয়ে এপাশ-ওপাশ অনন্ত ব্যথায় ফিরতে হবে ? কেন ? কেন ? অদ্ভুত তাহার এই জিজ্ঞাসা । বলিলাম-চল, নৌকোতেই তোমাকে নিয়ে আবার গুইয়ে দি, তোমার শরীর বা মন কোনটাই সত্যি ভাল নয়। - করুণা নীরবে আত্মসমর্পণ করিল। তাহাকে আবার নৌকায় তুলিয়া শোয়াইম দিয়া বলিলাম—এখন কোন কথা ক’লো না, কথা কওয়ার সময় পরেও পাৰে । করুশ অতি ৰণতর ভাবে বলিল—জায় কৰে পাৰ কৰে ?