পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৮০৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চৈত্র ব্যবসায় ব্যাপৃত থাকতেন। তেজারতী ব্যবসা; কেনা-বেচা, মাল চালান দেওয়া—বণিক, তিলি, তামুলি প্রভৃতি বৈশ্যদের হাতে ছিল। চাষীরা চাষ করতেন ; ছুতোর, কামার, স্বর্ণকার ও তাতীরা নিজ নিজ জাতীয় কৰ্ম্ম নিয়ে থাকতেন। ছোটখাট জাতিদের উল্লেখ করলাম না ; যথা— জেলেরা মাছ ধরত ও মাছ বিক্রয় করত। মোট কথা, সমাজের নিয়মের জন্ত সকলের ( এখন যেমন হয়েছে ), চাকরির দিকে ঝোক ছিল না। ইংরেজের রাজ্যে ব্রাহ্মণ, কায়স্থ ও বৈদ্য মহাশয়রা সহজেই একটু ইংরেজী শিখে ফেললেন ; কারণ লেখাপড় করা তাদের বংশগত অভ্যাস থাকায় সে কাজটা (ইংরেজী শেখাটা ) তাদের পক্ষে শক্ত হ’ল না । ইংরেজী শিক্ষার সঙ্গে সঙ্গে দরিদ্র ব্রাহ্মণ, কামুস্থ ও বৈদ্যরা বেশ মানসন্ত্রমের পদ পেতে লাগলেন। ওদিকে যারা নিজ নিজ ব্যবসা করতেন, তারা দেখলেন যে, বিলাতী মালের আমদানীতে আর তাদের অনেক মালেরই খরিদদার নাই । তাদের আয় কমে গেল। অপর দিকে র্তারা দেখলেন যে, তাদের ব্রাহ্মণ, কায়স্ক ও বৈদ্যদের মত লেখাপড়া শিখে চাকরি করতে কোনও বাধ৷ নাই। কাজেকাজেই সকল জাতেরই মা-বাপের ইচ্ছা হ’ল “সস্তানকে ইংরেজী পড়িয়ে চাকরিতে দি ” সে ইচ্ছা কিছুকাল সফল হ’ল । ফলে ঐ আকাঙ্ক্ষা প্রসার পেতে লাগল। এখন যত চাকরি তার চেয়ে অনেক বেশী চাকরিপ্রাণী। ডাক্তারী বা ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে যত ছেলে ধরে, তার চেয়ে বেশী ছাত্র সেখানে প্রবেশ চায় । এ-সৰ ছাড়া অল্পস্বল্প ইংরেজী লেখাপড়া জানা লোকের সংখ্যা এত বেণী, যে, তারা আপিসের চাকরিরও যোগ্য নম্ন, অথচ তারা অন্ত কোনও কাজ করতে নারাজ। ফলে ঘরে ঘরে এই সমস্যা, আমাদের ছেলেরা কি করবে ? এখন সমাজের আইনের যে অবস্থা তাতে বলা চলে না, যে, "ভাই তোর, তুমি ছুতোরের কাজ ছাড়া অন্য কিছু করতে পাৰে ন, ও ভাই র্তাতি, তুমি খালি তাতই চালাবে”—যার ষা ইচ্ছা তাই খুণী করবার অধিকার আছে। আমাদের দেশে এ অধিকার অনেক দিন ছিল না। তাতে ভাল হয়েছিল কি মন হয়েছিল আলোচনা করে সময় নষ্ট করা বৃথা। যাতে উপস্থিত সমস্তার সমাধান হয় সেই চেষ্টা করাই যুক্তিযুক্ত। बांडाजौब्र नूखकछां८लब्र विचका зве সমস্ত কঠিন সে-বিষয়ে বোধ হয় কারও সন্দেহ নাই। কঠিন বলেই এর সমাধান-বিষয়ে অনেক মতভেদ হতে পারে । আমার মনে বা উদয় হল তা আপনাদের কাছে উপস্থিত করছি ; আগেই বলা ভাল যে, আমার বলবার মৃত্তন কিছুই নাই। আমার কথা যাদের পছন্দ হয় তার কাজে আনবেন । র্যারা মনে করবেন যে আমার কথাগুলাকে ঘলে-মেজে নিলে, বা তাতে নানান কাটছাট করলে কাজে আসতে পারে তারা তাই করবেন। অন্যরা আমার বক্তব্যকে ইচ্ছামত ত্যাগ করবেন। চিন্তার আদান-প্রদান জিনিষটাই স্বাস্থ্যের লক্ষণ । আমার সেইটুকুই উদ্দেশু। পরের উপকার করবার ক্ষমতা রাখি, এরূপ ধারণা আমার নাই। . আমার প্রথম বক্তব্য এই যে, উচ্চশিক্ষা আমাদের মনে যে আদরের স্থান অধিকার ক'রে বসে আছে, সেটাকে তার উচুর আসন থেকে নামাতে হবে। শিক্ষা ভাল, জ্ঞান ভাল, সে-বিষয়ে কাহারও সহিত আমার মতভেদ নাই। কিন্তু ষে শিক্ষা আমাদের খঞ্জ ও পঙ্গু করে, আমি তার পক্ষপাতী নই। আমাদের ছেলেদের খানিকটা জ্ঞানের খুবই দরকার। যেমন— নিজের ভাষায় লিখতে পড়তে পারা, খাতাপত্র ঠিক্‌ ক’রে লিখতে ও রাখতে দান, ভূগোলের জ্ঞান, কোঙ্গদেশে কি জন্মায় সে-বিষয়ে জ্ঞান, কিছু দেশের ইতিহাস, এ-সব সৰ । ছেলেরই নিজের মাতৃভাষায় মোটামুটি রকম জানা দরকার। এর উপর ইংরেজীতে একটু-আধটু বলতে-কইতে ও পড়তেলিখতে জানাও ভাল। দেশীভাষা আমাদের দ্বিতীয় ভাষা ( second language ) ai kw @Rita efal (principal language ) হবে, ও ইংরেজী আমাদের দ্বিতীয় ভাষা কৰে। এটা আমাদের ধারণ হওয়া চাই যে, ইংরেজী কইতে বা লিখতে ভুল হ’লে তাতে অপমানের কোনও কারণ নাই। এখন নিজের ভাষায় লিখতে কইতে দোষ হ’লে সেটা অপমানের কথা হয় না, কিন্তু ইংরেজীতে ভুল হ’লে মনে হয় জীবনধারণই বুখ, পরের ভাষা কয় জন ভাল কইতে বা লিখতে পারে ? পার ভালই, না পার তাতে অগৌরবের কিছু মনে করে না। জ্ঞান অর্জন নিজের ভাষায় চলুক। অন্ত দেশের লোকের সঙ্গে পত্রাদি বিনিময়ের জন্তে ইংরেজী বা অন্য ভাষা সময়-মত শিখলেই হবে । তা হলে, এখনকার শিক্ষার চাপে স্বত ছেলে পিশে যাচ্ছে তা হবে না, স্বস্থ ও সবল শরীরে প্রায়