পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৮২৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চৈত্র दङ्क qore ঠিক এই নামের ভয়টাই মঞ্জু করছিল। . শুক্লা একটু মুচকি হেসে বলছে,-দেখ মঞ্জু—কি ? কাল রাত্তিরে দেবী-দাকে স্বপ্নে দেখেছিলুম! মঞ্জু এই নিয়ে একটু রসিকতা করতে চেষ্টা করে, শুক্লাকে একটু ঠাট্টা করতে চায়। কিন্তু জিবটা যেন কেমন আড়ষ্ট হয়ে এল । শুক্লার এখন চুপ করাই উচিত। কিন্তু শুক্ল বলছে,— আচ্ছা বলত মঞ্জু, দেবী-দ্বার সঙ্গে আবার কবে আমার দেখা হবে ? একটু কাষ্ঠ হাসি হেসে মঞ্জু বলল,—বা রে, তা আমি কি করে বলব ? আমি ত আর গণকঠাকুর নই ! মঞ্জু কোনোমতে সায় দিয়ে চলেছে। কিন্তু শুক্লার তাতে যেন মোটেই ভাল লাগছে না । মঞ্জুট বডড গম্ভীর হয়ে গেছে আজকাল । দেবী-দাকে আর ওকে নিয়ে আর একটু জোরালো ঠাট্টাও করতে পারে না ? ও তাকে দিতে পারে না আরও একটু স্বখের আঘাত ? গায়ে পড়ে শুক্লা মঞ্জুকে উস্কে দিতে চেষ্টা করে— কিন্তু মঞ্জু জোর করে ছটো-একটা কথা মাত্র বলছে, হাসছেও যেন ইচ্ছার বিরুদ্ধে। অধিকাংশ সময়েই নিজে বোবা সেজে শুধু শুনেই যাচ্ছে, প্রসঙ্গটাকে এড়িয়ে যাবার একটা প্রচ্ছন্ন প্রয়াস ! শুক্ল তিন দিনের বেশী আর কিছুতেই রইল না। কাকীমাকে তৰু যাহোক ক’রে বোঝান গেল, কিন্তু রাণুকে নিয়েই হ’ল মুঞ্চিল। রওনা হবার সময়ে সে যে শুক্লার আঁচলের কোণটা শক্ত করে ধীরে রাখল আর কিছুতেই ছাড়ে না। অগত্যা ওর মা লাগালো একটা ধমক ৷ গুয়ার দিকে একবার ছল ছল চোখে তাকিয়ে রাণু তার কাপড়ের আঁচলটা ছেড়ে দিল। তার পর হঠাৎ এক দৌড় মেরে বাড়ির ভেতরে ঢুকে দরজার আড়ালে লুকিয়ে রইল। শুক্লার ভারি কষ্ট হয় ওর জন্তে, কিন্তু না গিয়ে উপায় নেই। চেচিয়ে বল্ল-রাণু, আবার জাসব আমি, লক্ষ্মীটি রাগ করে না, কেঁদে না । বুঝেছ তো ? মঞ্জু বলল,—তোরও ষে তাড়াতাড়ি। কোথায় থেকে বাৰি পাচ-সাতটা দিন- ” - . মজু এ কথা বলল বটে, কিন্তু ওটুকু হ’ল নিতান্তই ভদ্রত আর বন্ধুত্বের খাতিরে আন্তরিকতার বাষ্প কিছু আছে বলে মনে হয় না। চলে যাবে এটা নিশ্চিত জানে বলেই যেন মঞ্জু ও কথাটা বলল, কিন্তু শুক্লা যদি সহসা তার মত পরিবর্তন করে থেকেই যেতে চায় আর কয়েকটা দিন, তাহলে মঞ্জু হয়ত এক্ষুণি চম্কে উঠবে, মুখে কিছু বলতে পারবে না, মনে মনে হয়ে উঠবে বিব্রত ! চারিটি দিনের পরে। মঞ্জু পা টিপে টিপে দেবিদাসের ঘরে ঢুক্ছে। শব্দ পেয়ে দেবিদাস তাকাল। মঞ্জু এসে দেবিদাসের বিছানার ওপর ব’লে—পড়ে, দেবিদাসের হাতখানা নিজের হাতের ভেতরে টেনে নেয়। সারা মুখে চোখে একটু দুষ্ট হাসি। দেবিদাস তার হাতখানা ছাড়িয়ে নিতে চেষ্টা করে, কিন্তু মঞ্জুর জোরের সঙ্গে পেরে ওঠে না। বলে, তোমার সঙ্গে আর আমি কথা কইব না । বড় বড় স্বন্দর দুটি চোখ দেবিদাসের মুখের পরে তুলে মুখ টিপে টিপে মঞ্জু জিজ্ঞেস করে-কেন ? —ছেড়ে দাও বলছি, লাগছে— —ছাড়ব না, লাগুক্ । —এ কমদিন কেন আসনি, শুনি ? —রাগ হয়েছে ? —হয়েছেই তো ! মঞ্জু দেবিদাসের গভীর মুখের দিকে তাকিয়ে হেসে ফেলল। বললে,—সত্যি রাগ করবেন না, দেবিদাস-দা। অস্কখ করেছিল বলে আসিনি। একটু উদ্বিগ্ন স্বরে দেবিদাস জিজ্ঞেস করল,—অস্থখ করেছিল । এর ভিতরে আবার কি অমুখ করল ? —সেই দিন আপনার কাছ থেকে গেলাম না? রাত্তিরে খেয়ে উঠবার পরে হঠাৎ কি রকম একটা যে পেটের ব্যথা স্বল্প হ’ল, এত কষ্ট পেয়েছি যে তা আর কি বলব। সে রাত্তিরে তো ঘুমুতে পারলুম্বই না, তার পরের ছটে নিও ঠিক একই রকম চলল। সত্যি দেবী-দ, এত ভয় হয়েছিল— আমি তো মনে করেছিলুম ম্যাপেণ্ডিসাইটিস্টাইটিলই হ’ল