পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৮২৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

रीत्र श —উ, কি স্তি মেয়ে। দেখ তো কি রকম লাল হয়ে ফুলে উঠেছে ? r —ও ত কিছুই হয়নি, কথা না শুনলে আর একটা এমন জোরে—যে কেটে রক্ত বেরিয়ে যাবে... তারপরেই খিলখিল করে হালি। সত্যি দেবী-দ, এতও জানেন আপনি, মা গো! আচ্ছ বেশ, তাই হবে। এখানে যা খাচ্ছেন আপনি, আমরাও আপনার জন্তে তাই-ই জোগাড় করব, না-হয় হাসপাতালের সঙ্গেই বন্দোবস্ত করে নেব। আর বাবা নিজেই যখন রয়েছেন আপনার ভাবতে হবে না— মধু দেবিদাসকে প্রায় আন্দেক পথে বাগিয়ে নিয়ে এল। যাবার সময়ে জিজ্ঞেস করল,—এখন কি করবেন দেবী-দা ? দেবিদাস বলল,—এখন আধঘণ্টাখানেক একটু বিশ্রাম নেবো। তারপরে ভাবছি খান-জুই চিঠি লিখব। —কার কাছে লিখবেন চিঠি, খাড়িতে ? —হা, বাড়িতে তো একখানা লিখবই। আর লিখব লাহোরে আমার এক বন্ধুর কাছে । মধু একটু চমকে ওঠে। জিজ্ঞেস করে-পাঞ্জাবী বুঝি ? --না, ন, বাঙালী । আমারই ক্লাস ফ্রেও। ওর কাছে অনেক দিন চিঠি দিই নি, একটা খবর দেওয়া উচিত। বিশেষ ক’রে— দেবিদাস থেমে হাসল। মঞ্জুর মুখখানা অল্প একটু শুকিয়ে উঠেছে। কবুল, কি বিশেষ করে ? —ওর এক বোনকে, শুক্ল নাম করে, আমি বেশ ভালবাস্তাম। তার খবরটাই পেতে ইচ্ছে হচ্ছে বড়। —দেখুন দেবী-দা, কিছু মনে করবেন না, আমি আপনাকে একটি কথা বলতে চাই । —কি কথা বল। মনে আবার কি কল্পৰ ? —দেখুন যদিও আমার বলাটা উচিত নয়, তবুও— —জা, ঐ সব গৌরচজিক ছেড়ে দিয়ে... . —বেশ, বলছি। আপনি এটা হয়ত জানেন না, এই অস্থখ যার হয়েছে, স্বস্থ লোকেদের শতকরা নিরনব্বই জন তাকে কি রকম ঘৃণা আর ভয়ের চোখে দেখে, বুঝেছেন । তা লে বন্ধুই হোক, আত্মীয়ই হোক, ইটুম্বই হোক, পরিচিতই হোক জার অপরিচিতই হোক। জিজ্ঞেস बघू ቅላ¢ এই হাসপাতালের একটি পেশেন্ট এক দিন বাবার কাছে দুঃখ করছিল। সে তার নিজের বড় ভায়ের কাছে চিঠি লেখে —সেই চিঠি নাকি ডাকঘরের ছাপ দেখেই পড়া তো দূরে থাক একেবারে না খুলেই উন্থনের ভিতরে দিয়ে তার দাদা পুড়িয়ে ফেলেন। শুধু এটা বলে নয়, আরও আমি এমন সমস্ত ঘটনা জানি, যাতে করে আমার-মনে হয় বাইরের লোকের সঙ্গে আপনাদের কোন সংস্রব না রাখাই ভাল। অনেক বিষয়েই তাদের কাছ থেকে আপনাদের আঘাত পেতে হবে। কেন মিথ্যে- - একটু বাধা দিয়ে দেবিদাস বলল,—জবিপ্তি তুষি বা বলেছে , ঠিকই। আমিও যে একটু একটু না জানি ত৷ নয় । তবে এর সে রকম নয় । আমার সঙ্গে-- ঘাড় নেড়ে মঞ্জু বলল,-মুখে কেউই হয়ত কিছু বলবে না, চক্ষুলঙ্গাও ত আছে । কিন্তু আপনাকে এড়িয়ে চলবার জন্যে কেউই কোন চেষ্টার ত্রুটি করবে না। আপনার অল্পদিন হ’ল অস্বখ হয়েছে, এখনও হয়ত অনেকের সহানুভূতি পাবেন, কিন্তু দিন যাবার সঙ্গে সঙ্গে দেখতে পাবেন সবাই— এমন কি নিজের পরমাত্মীয়রাও এক এক করে কেমন সরে পড়ে। সেরে উঠুন দেবী-দ, ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি, বন্ধুদের সঙ্গে বন্ধুত্ব তখন করবেন—অটুট থাকবে । ওসব কষ্টকর বন্ধুত্ব রক্ষার এখন কিছু দরকার নেই। তারপরে হাসতে হাসতে—এমন কি কোনো শুক্লারো তখন অভাব ঘটবে না— দেবিদাসও হাসতে লাগল। বাড়াল না । আর কোনো কথা অনেক দিন পরে শুক্ল কলকাতায় । শুক্ল একেবারে বিরক্ত হয়ে উঠেছে—দিবারাত্তির স্কুলকর্তাদের কাছ থেকে ট্রেনিং পড়বার তাড়নাম। ট্রেনিং না পাস করে এলে চাকুরি থাকে না। কিছু দিন এক রকম করে এড়িয়ে চলে যখন আর কিছুতেই পারা যায় না, অবশেষে শুক্ল ট্রেনিং পড়ারই বন্দোবস্ত করে । পাস ক’রে বেরিয়ে আসতেই লাহোর থেকে আসে ওর দাদার একখানা চিঠি।