পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৮৪১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ੇ - বকৃবেন, মা-ও বকুনি খাবেন । বনজঙ্গলের পথ হ'লেও আরও অনেক বার আমরা মাদীমার এখানে এসেচি । আমি একাই কতবার এসেচি গিয়েচি। আমরা যখন রওনা হুই তখন বেলা খুব কম আছে। অন্ধকার এরই মধ্যে নেমে আসচে—আকাশ মেঘাচ্ছন্ন, ঝড়বৃষ্টির খুব সম্ভাবন । পচাং বাগান থেকে আধ মাইল যেতেই ঘন জঙ্গল—বড় বড় ওকৃআর পাইন—আবার উৎরাইয়ের পথে নীমলেই জঙ্গল অন্য ধরণের, আরও নিবিড়, গাছের ডালে পুরু কম্বলের মত শেওলা ঝুলচে, ঠিক যেন অন্ধকারে অসংখ্য ভূত প্রেত ডালে ডালে নিঃশব্দে দোল খাচ্চে। সীতা খুশীর স্বরে বললে- যদি দাদা আমাদের সামূনে ভালুক পড়ে ?...হি হি— সীতার ওপর আমাদের ভারি রাগ হ’ল, সবাই জানে এ পথে ভালুকের ভয়, কিন্তু সে-কথা ওর মনে করিয়ে দেওয়ার দরকার কি ছিল ? বাহাদুরী দেখাবার বুঝি সময় অসময় নেই ? অন্ধকার ক্রমেই খুব ঘন হয়ে এল, আর খানিকট গিয়ে সরু পাম্নে-চলার পথটা বনের মধ্যে অন্ধকারে কোথায় হারিয়ে গেল—সঙ্গে সঙ্গে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি স্বরু হ’ল— তেমুনি কন্‌কনে ঠাণ্ডা হাওয়া ! শীতে হাত পা জমে যাওয়ার উপক্রম হ’ল...গাছের ডালের শেওলা বৃষ্টিতে ভিজে এক ধরণের গন্ধ বার হয় এ আমরা সকলেই জানতাম, কিন্তু সীতা বার-বার জোর করে বলতে লাগল ও ভালুকের গামের গন্ধ ।--দাদা আমাদের আগে আগে যাচ্ছিল, মাঝখানে সীতা, পেছনে আমি—হঠাৎ দাদা থম্কে দাড়িয়ে গেল। সাম্নে একটা ঝর্ণ—তার ওপরটায় কাঠের গুড়ির পুল ছিল— পুলটা ভেঙে গিয়েচে । সেটার তোড় যেমন বেশী, চওড়াও তেমনি। পার হতে সাহস করা যায় না। দাদা বললে—কি হবে জিতু ...চল পচাঙে মাসীমার কাছে ফিরে যাই । সীতা বললে—বাবা পিঠের ছাল তুলবে আজ না ফিরে গেলে বাসায় । মা দাদা, বাড়িই চলে। দাদা ভেবে বললে--এক কাজ করতে পারবি ? পাকদণ্ডীর পথে ওপরে উঠতে যদি পারিস– ওখান দিয়ে লিণ্টন বাগানের রাস্তা। আমি চিনি, ওপরে वणलe कय । शांति ? • দাদা তা হলে খুব ভীতু তো নয় । পান্ধনীর সে পথটা তেমনি স্বৰ্গম, সারা পথ শুধু ۹سے 8 م? इ8ि-अकौनं ه به বনজঙ্গল ঠেলে ঠেলে উঠতে হবে, প একটু পিছলে গেলেই, কি বড় পাথরের চাই আলগা হয়ে খসে পড়লে আট শ কি হাজার ফুট নীচে পড়ে চুরমার হতে হবে। অবশেষে ঘন বনের বৃষ্টিভেজা পাতালত, পাথরের গায়ের ছোট ফার্ণের ঝোপ ঠেলে আমরা ওপরে ওঠাই স্বরু করলাম-অন্ত কোনু উপায় ছিল না। কাপড়চোপড় মাথার চুল বৃষ্টিতে ভিজে একাকার হয়ে গেল—রক্ত জমে হাত-পা নীল হয়ে উঠল । পাকদণ্ডীর পথ খুব সরু, দু-জন মানুষে কোনোগতিকে পাশাপাশি যেতে পারে, বায়ে হাজার ফুট খদু, ডাইনে ঈষৎ ঢালু পাহাড়ের দেওয়াল খাড় উঠেচে তাও হাজার-বার-শ ফুটের কম নয়। বৃষ্টিতে পথ পিছল, কাজেই আমরা ডাইনের দেওয়াল ঘেসে ঘেসেই উঠচি। পথ মানুষের কেটে তৈরি করা নয় বলেই হোক, কিংবা এ-পথে যাতামাত নেই বলেই হোক –ছোটখাট গাছপালার জঙ্গল খুব বেশী কিন্তু ডাইনের পাহাড়ের গায়ের বড় গাছের ডালপালাতে সারা পথটা ঝুপসি ক’রে রেখেচে, মাঝে মাঝে সেগুলো এত নিবিড় যে সামনে কি আছে দেখা যায় না। হঠাৎ একটা শব্দ শুনে আমরা ক’জনেই থমকে দাড়ালুম। সবাই চুপ করে গেলাম। আমরা বুঝতে পেরেছিলাম শব্দটা কিসের । ভয়ে আমাদের বুকের স্পন্দন বন্ধ হয়ে যাবার উপক্রম হ’ল । সীতাকে আমি জড়িয়ে ধরে কাছে নিয়ে এলুম। অন্ধকারে আমরা কিছু দেখতে পাচ্ছিলাম না বটে, কিন্তু আমরা জানতাম ভালুক যে পথে আসে, পথের ছোটখাট গাছপালা ভাঙতে ভাঙতে আসে। একটা কোনো ভারী জানোয়ারের অস্পষ্ট পায়ের শব্দের সঙ্গে কাঠকুটো ভাঙার শব্দে আমাদের জার সন্দেহ রইল না থে, আমরা যে-পথ দিয়ে এইমাত্র উঠে এসেচি, সেই পথেই ভালুক উঠে আসচে আমাদের পেছনে পেছনে। আমরা প্রাণপণে পাহাড় ঘেসে দাড়ালাম, ভরসা যদি অন্ধকারে না দেখতে পেয়ে সামনের পথ দিয়ে চলে যায়---আমর কাঠের পুতুলের মত দাড়িয়ে আছি, নিঃশ্বাস পড়ে কি না-পড়ে— এমন সময়ে পাকদণ্ডীর মোড়ে একটা প্রকাগু কালে জমাট অন্ধকারের শুপ দেখা গেল--"পটা একবার ডাইনে একবার বায়ে বেঁকে বেঁকে আসচে—যতটা ডাইনে, ততটা বায়ে নয়—আমরা যেখানে দাড়িয়ে আছি সেখান থেকে দশ গজেক্ক ,