পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৮৪৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চৈত্র আবার দেশ থাকা সম্ভব । তা ছাড়া সমাজের মধ্যে কোন দিন মানুষ হইনি বলে আমরা কোন বন্ধনে অভ্যস্ত ছিলাম না, সামাজিক নিয়ম-কানুনও ছিল আমাদের সম্পূর্ণ অজানা। মানুষ হয়েচি এরই মধ্যে, যেখানে খুণী গিয়েচি, যা খুণী কয়েচি । কাজেই বাংলা দেশে ফিরে যাওয়ার কথা যপন উঠল, তথন এক দিকে যেমন অজানা জামুগা দেখবার কৌতুহলে বুক টিপ ঢিপ করে উঠল, অন্য দিকে মনটা যেন একটু দমেও গেল। ২াপাকে বিদায় দেওয়া হ’ল । সে আমাদের মানুষ করেছিল, বিশেষ ক'রে সীতাকে । তাকে এক মাসের বেশী মাইনে, দুখান কাপড় আর বাবার একটা পুরোনো কোট দেওয়া হ’ল । থাপ বেশ সহজ ভাবেই বিদায় নিলে, কিন্তু বিকালে আবার ফিরে এসে বললে সে আমাদের যাওয়ার দিন শিলিগুড়ি পৰ্য্যন্ত নামিয়ে দিয়ে তবে নিজের গায়ে ফিরে যাবে। শিলিগুড়ি ষ্টেসনে সে আমাদের সবাইকে সন্দেশ কিনে খাওয়ালে—ওর মাইনের টাকা থেকেই বোধ হয় । মা রাধলেন, সে সব জোগাড় ক’রে দিলে। ট্রেন যখন ছাড়ল তখনও থাপা প্লাটফৰ্ম্মে দাড়িয়ে বোকার মত হাস্চে । কাঞ্চন কুঙঘাকে ভালবাসি, সে যে আমাদের ছেলেবেলা থেকে সার্থী, এই বিরাট পৰ্ব্বতপ্রাচীর, ওকৃ পাইনের বন, অৰ্কিড, শেওলা, ঝর্ণা, পাহাড়ীনী, মেঘ-রোদ-কুয়াসার খেলা— এরই মধ্যে আমরা জন্মেচি—এদের সঙ্গে আমাদের বত্রিশ নাড়ীর যোগ। ..তখন এপ্রিল মাস, আবার পাহাড়ের ঢালুতে রাঙা রডোড়েওন ফুলের বন্যা এসেচে-সারা পথ দদা বলতে বলতে এল চুপিচুপি—কেন বাবা অত মদ খেতেন, তা না হলে ত আর চাকরি যেত না-বাবারই ত দোষ । দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ S আমাদের দেশের গ্রামে পৌছয়াম পরদিন বেলা ন’টার সময়ে। বাবার মুখে শুনেছিলাম গ্রামের নাম আটঘর, ষ্টেশন থেকে মাইল দুই-আড়াই দূরে, জেলা চব্বিশ পরগণা। এত বাঙালী পরিবারের বাস একসঙ্গে দেখে মনে বড় আনন্দ হ'ল। আমরা কখন ফসলের ক্ষেত দেখিনি, বাবা চিনিয়ে দিলেন পাটের ক্ষেত কোনটা ধানের ক্ষেত কোনট। ५ शूद्रंशंब्र लिङ्गिशि चाषद्म। ८शशिनि बध्न७-८व्रणि দৃষ্টি-প্রণীপ ૧-૧ আসবার সময়ে মনের অভালে কেবলই ভাবছিলাম এই বড় মাঠটা ছাড়ালেই বুঝি পাহাড় আরম্ভ হবে। সেট পার হয়ে গেলে মনে হচ্ছিল এবার নিশ্চয়ই পাহাড়। কিন্তু পাহাড় ত কোথাও নেই, জমি উচু নীচুও নয়, কি অদ্ভুত ধরণের সমতল ! যতদূর এলাম শিলিগুড়ি থেকে সবটা সমতল-ডাইনে, ব য়ে, সামূনে সবদিকে সমডল, এ এক আশ্চৰ্য্য ব্যাপার । দাদা এর আগে সমতলভূমি দেখেচে, কারণ সে জন্মেছিল হনুমান নগরে—নতুন অভিজ্ঞতা হ’ল আমার ও সীতার। • আমাদের বাড়িটা বেশ বড়, দোতলা, কিছু পুরনো ধরণের। বাড়ির পেছনে বাগান, ছোট একটা পুকুর । আমরা যখন গাড়ী থেকে নামূলম-বাড়ির মেয়ের কেউ কেউ দোরের কাছে দাড়িয়েছিলেন, তার মধ্য জ্যাঠাইম, কা মীমারাও ছিলেন । মা বললেন, প্রণাম করো। পাড়ার অনেক মেয়ে দেখতে এসেছিলেন, তারা সীতাকে দেখে বলাবাল করতে লাগলেন, কি চমৎকার মেয়ে দেখেচ ? এমন রং আমাদের দেশে হয় না, পাহাড়ের দেশে ব’লে হয়েচে । দাদাকে নিয়েও তার খুব বলাবলি করলে, দাদার ও সীতার রং নাকি দুধে আলতা—আমার মুখের চেয়ে দাদার মুখ সুন্দর, এসব কথা এই আমরা শুনলাম। চা-বাগানে এসব কথা কেউ বলেনি। আর একটা লক্ষ্য করলাম আমাদের গায়ের মেয়ের প্রায়ই কালো, চা-বাগানের অনেক কুলীমেয়ে এর চেয়ে ফল । - আমাদের থাকৃবার ঘর দেখে ত আমরা অবাকৃ এত বড় বাড়িতে এ-ঘরট ছাড়া ত আরও কত ঘর রমেচে । নীচের একটা ঘর, ঘরের মেজেয় মাটির কড়িকাঠ ঝুলে পড়েচে বলে বাশের খুটির ঠেকৃনে । কেন ও রে দোতলায় ত কত ঘর, এত বড় বাড়ি ত । অন্য ঘরে জায়গা হবে না কেন ? এ খারাপ ঘরটাতে আমরা থাকবো কেন ? দেখলাম বাবা মা বিনা প্রতিবাদে সেই ঘরটাতেই আমাদের জিনিষপত্র তুললেন। দিন-চারেক পরে জ্যাঠাইম একদিন আমায় জিজেল করলেন,- ই্যা রে, তোর মাকে নাকি সেখানে মেমে পড়াতো ? আমি বললাম,—ষ্ট্য জ্যাঠাইমা। গর্কের স্বরে বললাম,