পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৮৫৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ੋਲੀ জোরে ছোটদের তাড়াই দিয়া নিজের সামনে গিয়া দাড়াইয়াছে। সামনে দাড়াইলে দেখা যায় ভাল। ঐবিলাস দু-একটা জিনিষ দেখাশোনা করিয়া পথে নামিল, ভাবিল একবার পোষ্ট আপিসটা ঘুরিয়া দেখিয়া আসিলে হয়—কোনও চিঠি আসিয়াছে কি-না। চারিদিকে সন্ধা হয়-হয়। দেখিতে দেখিতে ঐবিলাস তখন বারোয়ারীতলায় গিয়া পৌছিয়াছে। চারিদিকে বটগাছ-মূল গাছটি আজ দশটা গাছে পরিণত হইয়াছে। কাল আরও হইবে । শ্ৰীবিলাস চারিদিকে চাহিয়া দেখিতে লাগিল—পোষ্ট আপিস, পাঠশালা এবং তাহারই দক্ষিণ দিকে মঙ্গলচণ্ডীর মন্দির। মন্দিরের দাওয়ার উপর বসিয়া কত লোক তখন গল্প করিতেছে। নদীর ধারে আলিয়া তবে শ্ৰীবিলাসের যেন মাথা ঠাও। श्झेल । সারাদিন তাবুর ভিতর বসিয়া বাড়ির কথা ভাবিতে ভাবিতে তাহার মনের সমস্ত শাস্তি নষ্ট হইয়া যায় —অনেক দূরে একটা লোক কেমন বাণী বাজাইতেছে। গ্রামের সীমানা ছাড়াইয়া মাঠ পার হইয়া ধানজমি, মেঠো পথ আঁকিয়া বাকিয়া গিয়াছে। শেষে দিগন্তসীমায় গিয়া মিশিয়াছে। মাধুরী তাহার উপর খুব রাগ করিয়াছে নিশ্চয়, রাগ করিয়া হয়ত চিঠির উত্তর দিতেছে না—নইলে শ্ৰীবিলাস কবে চিঠি লিথিয়াছে এখনও উত্তর আসিল না কেন ?...নিধিরাজ সেখানে গিয়া কি দেখিবে কে জানে। ছোট ভাড়াটে বাড়ি। সব দিন কলের জল আসে না । তাও ও-বাড়ির কল ৰক্ষ করিলে তবে এ বাড়িতে জল আসে । এই জল লইয়াই বাড়ির মেয়েদের মধ্যে দিনরাত ঝগড় । তারপর পাশের বাড়ির লোকের নিজেদের লঙ্গ বাচাইবার জন্ত ভূ-তল সমান এক মস্ত পাচিল তুলিয়া দিয়াছে। সেই পাচিল দেওয়াতে ঘরের ভিতর আলো-বাতাস প্রবেশ করিতে পারে না। বিধাতার দেওয়া আলো বাতাস জল—তাঁও শহরে পয়সা দিয়া কিনিতে হয় । wहे चांक्शआब्र डिऊरब बांधूबौब्र औदनषभप्नब्र कथ ভাবিয়া জীবিলাসের কষ্ট হইল। বিবাহ করিয়াছে বটে, কিন্তু এক দিমের জন্তও জীবিলাস মধুরীকে স্বৰী করিতে পারে নাই। এই রকম পারা জীবন তাৰে টে-টাে করিয়া ঘুরিয়া প্রথম শিশু 4>:ు বেড়াইতে ইবে, ছনি তাহার স্ত্রীর কাছে থাকারও অধিকার নাই । ཙཱ་༣ - - এই ত সন্ধ্যা হইল, কলিকাতার সেই অপরিসর গলিতে হয়ত এখনও গ্যাস জালা হয় নাই। চারি পাশের বাড়ি হইতে ধোয়া আসিয়া ঘরদোর একেবারে ভরিয়া যাইবে ... তারপর ঠাকুর-ঘর হইতে পিসিমা আহ্নিক সারিয়া শাখ বাজাইবে -সারা বাড়ি গঙ্গাজলের ছিটা দিয়া প্রদীপ দেখাইয়া নামমাত্র গুহের কল্যাণ-কামনা করা হইবে । পাশের বাড়ির এক বৃদ্ধ হাফানি রোগী ঘড় বড় আওয়াজ তুলিয়া নিশ্বাস-প্রশ্বাস কেলিবে। রাত্রির সঙ্গে । সঙ্গে সে আওয়াজ বাড়িবে। সেই আওয়াজ গুনিয়া রাত্রে বিছানায় একলা গুইয়া মাধুরী হয়ত ভয় জাংকাইয়া ওঠে । - রাত্রি যখন দু-টা, ঠিক সেই সময় প্রতিদিন এক মাতাল চীৎকার করিয়া সমস্ত পাড়া সচকিত করিয়া তোলে। তারপর সেই মাতাল স্বামী আর তার স্ত্রী মিলিয়া সে কি বকবকি চীৎকার। নিত্যই এইরূপ ! কেন যে শ্ৰীবিলাস বিবাহ করিয়াছিল তাহাই আশ্চৰ্য্য ঠেকে। শুধু কষ্ট দেওয়া বইত নয়। এই যে মাধুরী এখন অস্বস্থ-সারা বাড়ির কাজ হয়ত সবই লে করিতেছে, পিসিমা বারণ করিলেও কি শুনিবে? · জানালার পর্দাগুলি একটু কালো হইলেই তাহার কাচিয়৷ পরিষ্কার করা চাই। ধোপার বাড়ি দিলে পাছে নষ্ট হুইয়া যায়—মশারি বালিশের ওয়াড় মাধুরী মাসে দু-বার করিয়া নিজেই কাচিবে । তারপর ঘর ঝাট দেওয়া। শুধু বাট দিলেই কি শান্তি ? দুইবার জল দিয়া ধুইয়া মুছিয়া ফেলা চাই রোজ ! টেবিলে চেয়ারে কোথায় ধূলা জমিয়াছে—কোন ঘরে কোথায় ঝুল জমিয়াছে—ভাড়ার-ঘরে কোথায় আরগুলা জমিতেছে—সব মাধুরীর নিজের খোজ রাখা চাই। অথচ এই গৃহিণীপনা যে কি মূল্য দিয়া সে শিখিয়াছে তাহ কাহারও অজান নয় । ফুলশয্যার রাত্রে মাধুরী প্রথম কি কথা বলিয়াছিল, তাহা আজও জীবিলালের মনে আছে ।