Woë & si«in: 3 Sово রৌপ্য ইত্যাদি ধাতু মুদ্রাজগতে একাধিপত্য করিয়া কৌলীন্ত লাভ করিয়াছে। কোন দেশের গভর্ণমেণ্ট ইচ্ছা করিলেই মুদ্র প্রস্তুত করিয়া ধনী হইতে পারেন না; কারণ তাহাকে স্বর্ণ, রৌপ্য ইত্যাদি ধাতু বাজার হইতে মূল্য দিয়া ক্রয় করিতে হইবে এবং সাধারণ নিয়মানুযায়ী ধাতুর যাহা মূল্য তাহাই মুদ্রার মূল্য-স্বরূপ নিৰ্দ্ধারণ করিতে হইবে। এখানে কাগজের তৈরি নোটের কথা উঠিতে পারে । তাহার উত্তর এই যে, কাজকর্শ্বের স্থবিধার জন্য সকল দেশের গভর্ণমেণ্ট নোটের প্রচলন করিলেও নোটের বিনিময়ে টাকা বা মুদ্রা দিবার আইনসঙ্গত দায়িত্ব গভর্ণমেণ্টের সর্বদাই রহিয়াছে এবং ভারণ তাহাকে স্বর্ণ বা রৌপ্য তহবিল পৃথক করিয়া রাখিতে হয়। কোন গভর্ণমেণ্ট যখন নোটের বিনিময়ে স্বর্ণ বা রৌপ্য দিতে অসমর্থ হন (যেমন স্বর্ণমান পরিত্যাগ করিয়৷ ইংলও, আমেরিক প্রভৃতি দেশে সম্প্রতি ঘটিয়াছে ) তখন সেই গভর্ণমেণ্টের আর্থিক অবস্থা কোন বিশেষ কারণে সঙ্কটাপন্ন এবং এই ব্যবস্থা সাময়িক বুঝিতে হইবে। গভর্ণমেন্টের ন্যায় সরকারী টাকশালে স্বর্ণ বা রৌপ্য জমা দিয়া নিখরচায় মুদ্রা প্রস্তুত করিয়া লইবার অধিকার সকল সভ্যদেশের প্রজাবর্গেরও সাধারণ অবস্থায় রহিয়াছে। এই অধিকার হইতে আমরা ভারতবাসী ১৮৯৩ সালের আইনস্বারা বঞ্চিত হইয়াছি এবং সম্ভবতঃ তাহারই ফলে উল্লিখিত ভ্রান্ত ধারণার উৎপত্তি হইয়াছে। এখানে একটা কথা বলিয়া রাখা আবশ্যক । সমর-ঋণ, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের প্রতিবন্ধকতা ইত্যাদি কৰ্ম্মদ্বারা পাশ্চাত্য দেশসমূহ আত্মকৃত ব্যাধির স্বষ্টি করিয়া সঙ্কটকালে যে-সকল বিশেষ ব্যবস্থা অবলম্বন করিতে বাধ্য হইতেছে, সেই সকল বর্তমান আলোচনায় ধৰ্ত্তব্য নহে। সহজ স্বাভাবিক অবস্থায় অর্থনীতির যে-সকল হিতকর মূলস্বত্র সভ্যদেশে অনুস্থত হয়, সেই সব সুত্রের প্রতি দৃষ্টি রাখিয়াই ভারতের অবস্থা বিচার করিতে হইবে। উপরোক্ত আলোচনা হইতে আমরা এইরূপ দুইটি সাধারণ নীতি বা স্বত্রের পরিচয় পাইয়াছি- (১) প্রত্যেক দেশের প্রধান মুদ্রার বাহিরের নির্দিষ্ট মূল্যের সহিত তাহার অন্তর্গত ধাতুর মূল্যের কোন প্রভেদ থাকিবে না ; (২) সৰ্ব্বসাধারণের সরকারী টাকশাল হইতে টাকা প্রস্তুত করিয়া লইবার অবাধ অধিকার থাকিবে। দুর্ভাগ্যবশতঃ ভারতে ইহার কোনটাই বিদ্যমান নাই। অর্থশাস্ত্রে যাহাকে wwR <l : Rai (Base or token coin) <ti, state: রৌপ্যমুদ্রা সেই শ্রেণীর। ইহার ধাতুর মূল্য অপেক্ষ গভর্ণমেন্ট-নির্ধারিত মূল্য প্রায় দ্বিগুণ। বিশ্বের আর কোন উন্নতিশীল জাতির প্রধান মুদ্রার এরূপ হীন অবস্থা আছে বলিয়া আমরা অবগত নহি। প্রথম নীতির ব্যতিক্রম ঘটিলে দ্বিতীয় নীতিকেও পরিহার করা ভিন্ন উপায় থাকে না। অন্তৰ স্বল্প মূল্যের ধাতুম্বারা অধিক মূল্যের মুদ্রা লাভ করিয়া রাতারাতি ধনী হুইবার সহজ কল্পনায় সকলেই চঞ্চল হইয়া উঠিবে। অবাধ বাণিজ্য ও বিভিন্ন দেশের দেনা-পাওনা সহজে নিম্পত্তি করিবার জন্ত আর্থিক ব্যবস্থা যথাসম্ভব সহজ ও সরল হওয়া আবশ্বক। প্রত্যেক দেশের মুদ্রা যদি পূর্ণ মূল্যের স্বর্ণ বা রৌপ্য ধাতুর উপর প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের দায় মিটাইবার জন্য মুদ্রার অপ্রতুল হইলে প্রয়োজন অনুযায়ী যদি সরকারী টাকশাল হইতে উহু প্রস্তুত করিয়া লওয়৷ বিধিমত সম্ভব হয়, তাহা হইলে আস্তর ও বহির্বাণিজ্যের দেনা-পাওনা মিটান সম্পর্কে অনেক সমস্তার হাত হইতে আমরা মুক্তিলাভ করিতে পারি। এমন কি যুদ্ধবিগ্ৰহ আদি. গুরুতর ও অস্বাভাবিক অবস্থার ফলে, আন্তর্জাতিক দেনপাওনার তুলাদণ্ড একদিকে অতিরিক্ত ভারী হইয় অধিকাংশ স্বর্ণ বা রৌপ্য এক দেশ হইতে অপর দেশে উধাও হইবার সম্ভাবন না ঘটিলে ( সম্প্রতি পাশ্চাত্য দেশে যাহা ঘটিয়াছিল ) ইহা অপেক্ষ স্নব্যবস্থা মুদ্রাব্যাপারে আর কিছু হইতে পারে না। বিষয়টি আরও পরিষ্কার করিয়া বলিবার চেষ্টা করা যাকৃ। যদি দুইটি পরস্পর-সংশ্লিষ্ট দেশের প্রধান মুদ্রাম কোনরূপ ঘাটতি না থাকে, অর্থাৎ যদি উহাদের বাহিক ও আভ্যন্তরীণ মূল্য একই হয়, এবং দুইটি দেশই যদি স্বর্ণমানের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকে, তাহা হইলে মুদ্রানীভির মারপ্যাচে কোন পক্ষের ঠকিবার কোনরূপ সম্ভাবনা থাকে না এবং তাহাদের মধ্যে দেনা-পাওনা স্থির করা বা মিটানও সহজ হইয় দাড়ায় । আমেরিকার ডলার, ইংলণ্ডের ষ্টার্লিং ও ফ্রান্সের ফ্র মুদ্রার কোনটিতে কি পরিমাণ স্বর্ণ অাছে, আমরা জানি। স্বতরাং জোগান ও চাহিদার সাধারণ নিয়মানুসারে জস্তান্ত জিনিলের স্তায় স্বর্ণের বাজার-দর কম-বেশী হইলেও
পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৮৬
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।