পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৮৭৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

हैछटj খেলায় পরাস্ত হইয়া যাইবার ভয়ে অপুৰ্ব্ব সাহিত্য-স্থটির ভিতরও এইরূপ ভেজাল চালাইয়া দিতেছেন। বাংলা কথার ভিতর ইংরেজী কথা চালাইয়া দেওয়া বাহাদুরি মনে করে আট-দশ বছরের ছেলেমেয়েরা যখন তাহারা প্রথম ইংরেজী পড়ে। “ম ভাত give" কিংবা "দিদি sit down” বলিয়া তাহার আনন্দ পাইলে ৪ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ বাংলা ভাষায় সমস্ত মনোভাব প্রকাশ করিতে ন পারিলে তাহা আপনার অক্ষমতা বলিমা মনে করিবে ইহাই আমরা আশা করি। আমাদের সাহিত্যিকের যে “ষ্টীল, সিল্ক,” ষ্ট্রং লাইট, প্রিমিটিভ ইত্যাদির অর্থ জানেন, এমন কি যথাস্থানে ‘প্রি-র্যাফেলাইট’ অথবা ফরাসীতে ‘নেস-পা’ পৰ্য্যন্ত বলিতে পারেন ইহা আমরা ত জানিই। যদি একস্তই ইহ সৰ্ব্বসাধারণকে ছাপার অক্ষরে জানানো প্রয়োজন হয়, তবে ইহারা ইংরেজীতে মাঝে মাঝে কবিতা গল্প এবং প্রবন্ধ লিখিলেই ত পারেন । দেবী বঙ্গ ভারতীর উপর অত্যাচার না করিলেও চলিবে, কেন-ন বাংলা দেশে ইংরেজী মাসিক ত্রৈমাসিক পাক্ষিক সবই আছে। শবদ-চয়ন ও শব্দ-যোজনাতেও আজকাল আমাদের মধ্যে শৈথিল্য দেখা দিয়াছে। যে-কথা বাংলা ভাষায় আদৌ নাই অথবা যাহা থাকিলেও গ্রামাত-দোষদুষ্ট এমন সকল শব্দ সাহিত্যের দরবারে চালানো অনেকে সাহসের ও মৌলিকতার পরিচয় মনে করেন। “মাথার চুলের ঝাপি” “গাল দুটি ট্যাপর ট্যাপর” “আকাশের বজ্রের মতধমূকাইল”—এই রকম কত অদ্ভুত কথাই যে আজকাল চোখে পড়ে বলা যায় না। “মাকাশে ঘনায়মান মেঘের পুঞ্জ...” লিখিতে লিখিতে হঠাৎ কেক শেষ করেন “মেঘের নাচন-লীলা চলেছে” বলিয়া । ভাষা ও সাহিত্যের গতিও নদীর জলস্রোতের মত ; তাহা চিরকাল একই খাতে প্রবাহিত হয় না। রাজা রামমোহন রামের বাংলা ভাষা যেরূপ ছিল বঙ্কিমচন্দ্রের সময় তাহ রহিল না ; আবার বঙ্কিমের ভাষা রবীন্দ্রনাথের যুগে হুবহু পাওয়া সম্ভব নয়। স্বতরাং আধুনিক তরুণ সাহিত্যিকের রবীন্দ্রনাথের মত “জীর্ণ পুপাল যথা ধ্বংস ভ্রংশ করি চতুর্দিক यांझिब्रांम्न कळপুরাতন পর্ণপুট দীর্ণ করি বিকীর্ণ করিয়া অপূৰ্ব্ব আকারে তেমনি সকলে তুমি পরিপূর্ণ হয়েছ প্রকাশ প্রণমি তোমারে।” ভাষা ও সাহিত্য ৮২১ না লিথিয়া না-হয় লিখিতে পারেন, "আমার কালে মেয়ূের পায়ের তলায় দেখে যা আলোর নাচন। ময়ের রূপ দেখে দেয় বুক পেতে শিব, যার হাতে মরণ বাচন ।” কিন্তু নদীর স্রোতের মতই এই লিখনভঙ্গী ও ভাষার একটা মাত্র নির্দিষ্ট খাতে প্রবাহিত হওয়া স্বাভাবিক ও প্রয়োজন : নদীর মুখ ফিরিয়া যায়, গতি পরিবর্তিত হয় সত্য, কিন্তু এলোমেলে ভাবে শতদিকে নদীর জল ত চলে না। দুঃখের বিষয়, বাংলা ভাষার অবস্থা আজ হইয়াছে এইরূপ । শতমুখী কথাটার অর্থ ভাল নয়, কিন্তু সেঅর্থটা ভুলিয়। আজ বাংলা ভাষাকে শতমুখী বলিলে অস্কায় হয় না। o বিদেশী-শব্দবাহুল্য এবং অন্যান্ত অপপ্রয়োগের কথা ছাড়িয়া দিলে বাংলা ভাষার সাধু ও চলিত এই দুইটি রূপ আছে বলিয়া সাধারণতঃ আমাদের ধারণা হয় । কিন্তু চলিত অথবা চলতি বাংলা আজ একাই এক-শ। আমাদের মত যাহার বাল্যকালে সাধুভাষায় লেখাপড় করিতে শিথিয়াছে এবং কথিত ভাষাও একটা মাত্র জানে, তাহারা আজ বাংলা ভাষার উন্মত্ত বন্যায় ভাসিয়া যাইবার উপক্রম করিষ্কাছে। চলতি বাংলা ত লিখিতেই ভয় হয়, ন জানি কখন কি লিখিয়া বসিব । প্রথম লিখিতে স্বরু করিলে মনে হয় ক্রিয়াপদগুলি সংক্ষিপ্ত করা ছাড়া আর ত কোনো বালাই নাই, কি বা এমন কষ্ট ! কিন্তু দেখা যায়, প্রথমতঃ এক ক্রিয়াই ত বহুরূপী। তাহার পর অন্ত বিপদের কথা না-হয় পরে বলা যাইবে। কয়েকটা নমুনা দেখা যাকৃ— পুরাতন ‘করিলাম –এখন “করলাম, কলাম, কল্লাম, করলুম, করলেম ।” গিয়াছে’— এখন “গেচে, গেছে, গিয়েছে, গ্যাছে।” ‘করিতেছি?—এখন “করছি, কচ্ছি, কোরছি।” পুরাতন হইল”—এখন “হ’ল, হোল, হোলো, হল।" পুরাতন আসিতেছে—এখন আসছে ‘আস্চে । রবীন্দ্রনাথ বিশ্বভারতীর বানানের একটা নির্দিষ্ট ধারা পরিবর্তিত করিবার চেষ্টা করিয়াছিলেন। কিন্তু সকলে তাহা অনভ্যাস, অনিচ্ছা অথবা স্বাতন্ত্র্যরক্ষার জন্ত মানিয়া চলেন না। মুস্কিল আরও বেশী হয় যখন দেখি রবীন্দ্রনাথ. পুরাতন পুরাতন