পান তাহদের অবশ্ব অন্ত মত। যাহা হউক, বর্তমান প্রবন্ধে এই বিরাট ও বিরোধী বিষয় লইয়| আলোচনার প্রয়োজন নাই। মূল বিষয়ে প্রত্যাবর্তন করা যাক। ট্যকার দর ২ শিলিং থাকাকালীন “হোম চার্জেস” দরুণ প্রায় ৩ কোটি পাউণ্ড ষ্টার্লিং পরিশোধ . করিতে আমাদিগকে যত টাকা দিতে হইত, টাকার দর যখন ১ শিলিং ৩ বা ৪ পেনিতে নামিয়া আসিল, তখন আমাদিগকে তদপেক্ষা একেবারে এক-তৃতীয়াংশ বেশী দিতে হইল। অর্থাং কেবল বাট্টার হেরফেরের জন্য আমাদের দেন ১ কোটি ১৭ লক্ষ পাউণ্ড (অর্থাৎ ১৭ কোটি ৫৫ লক্ষ টাকা ) প্রতি বৎসর বৃদ্ধি পাইয় গেল ! শুধু তাম্বাই নহে, বাট। ব| বিনিময়ের হারের এরূপ অনিশ্চয়তার দরুণ বিদেশের সহিত বাণিজ্য করা কঠিন হষ্টম উঠিল ; কারণ কাহারও পক্ষে লাভক্ষতির পরিমাণ স্থির করিয়া কাৰ্য্য কর! আর সম্ভব রহিল না। বিনিময়ের হার নামিম যাওয়ায় আমাদিগকে যে অতিরিক্ত টাকা দিতে হইল তাহাও আমাদিগকে পণ্য বিক্রয় করিয়৷ সংগ্ৰহ করিতে হইল এবং তাহার মূল্য ও বাটার জন্যই আমরা আবার কম করিয়া পাইলাম। টাকার মূল্য হ্রাস পাওয়ায় ভারত সরকার তাহার তহবিলের ঘাটতি পূরণ করিবার জন্য লবণ-কর ইত্যাদি বুদ্ধি করিলেন । যাহারা পূর্দেষ্ট একবার ক্ষতিগ্ৰস্ত হইয়াছিল তাহদেরই উপর পুনরায় জুলুম হইল। ভগবান যে বিপুল নৈসর্গিক ঐশ্বৰ্য্য ভারতকে দান করিয়াছেন, সেই ঐশ্বৰ্য্য আহরণ করিতে হইলে প্রভূত অর্থের প্রয়োজন । অর্থের প্রধান হাট লগুন । সেখানে সমস্ত কারবার স্বর্ণের মারফতে হয় ; ভারতবর্ষের কারবার রৌপ্যে ; আবার তাহারও মূল্যের কিছু স্থিরতা নাই। কাজেই বাটার গোলমালে বিদেশীয় অর্থ ভারতের ব্যবসাবাণিজ্য-বিস্তারের সহায়তার জন্য তেমন আসিতে পারিল না । এক হিসাবে ইহাও আমাদের পক্ষে ক্ষতিকর হইল । এই সব কারণে ১৮৭৮ সাল হইতে ১৮৯২ সাল পৰ্য্যস্ত স্বর্ণমান প্রচলন ও রৌপ্যমুদ্রার অবাধ নিৰ্ম্মাণ স্থগিত রাখিবার জন্ত বাণিজ্য-প্রতিষ্ঠান ও ব্যবসা-সঙ্ঘ প্রভৃতি হইতে জোর আন্দোলন চলিতে থাকে। ১৮৭৮ সালে ভারত-সরকার স্বর্ণমান প্রতিষ্ঠার উদ্দেশুে একটি স্কিম পেস করিলেন বটে, কিন্তু ভারতসচিব তাহ নাকচ করিম দিলেন। এই দিকে ফলে ga وهنا ১৮৬৭ সাল ও ১৮৯২ সালের মধ্যে যে চারিটি আন্তর্জাতিক আর্থিক বৈঠক বসে, ভারত-সরকার তাহার সহযোগিতায় বিনিময়ের হার নির্দিষ্ট করা যায় কি-না সেই চেষ্টাও করিতে লাগিলেন । সেই দিকেও নিরাশ হইয়। ১৮৯২ সালে ভারতগভর্ণমেন্ট পুনরায় ভারতসচিবের নিকট নিম্নলিখিতরূপ একটি প্রস্তাব প্রেরণ করেন—(১) স্বর্ণমান প্রচলন উদ্দেশ্যে সৰ্ব্বসাধারণ কর্তৃক টাকশাল হইতে রৌপ্যমুদ্র প্রস্তুত রহিত করিম : দেওয়া হউক ; (২) তদ্বিনিময়ে স্বর্ণমুদ্র প্রস্তুতের অবাধ অধিকার সর্বসাধারণকে দেওয়া হউক ; (৩) স্বর্ণমান প্রতিষ্ঠার পূর্ববর্তী কয়েক বৎসরের গড় হার পরীক্ষা করিয়া স্বর্ণ ও রৌপ্য মুদ্রার মধ্যে বিনিময়ের হার নিদ্ধারণ করা হউক ; (৪) বিলাতের যুদ্রাকে দেশীয় মুদ্রার ন্যায় . এদেশে চলিতে দেওয়া হউক এবং রৌপ্যমুদ্রার সহিত ইহার বিনিময়ের হার ১ শিলিং ও পেনি নির্দিষ্ট করা হউক। " ভারতসচিবের নির্দেশ-মত হাসে ল কমিটি এই প্রস্তাব পরীক্ষা করেন। তাহাদের নিৰ্দ্ধারণ অনুযায়ী ১৮৯৩ সালে যে মুদ্র-অষ্টম বিধিবদ্ধ হয় তাহার ফলে ভারতীয় টাকশালে সাধারণ কর্তৃক রৌপ্যমুদ্র প্রস্তুত বন্ধ করিয়া দেওয়া হইল ; কিন্তু অবাধ স্বর্ণমুদ্র প্রচলনের কোন ব্যবস্থা করা হইল না। ভারতীয় রাজকোষ হইতে টাক দিয়া গভর্ণমেণ্ট সৰ্ব্বসাধারণ হইতে স্বর্ণমান ও স্বর্ণমুদ্রা ১ শিলিং ৪ পেনি হারে ( ১ শিলিং ৬ পেনি নহে ) গ্রহণ করিবেন ইহাই মাত্র স্থির হইল। এই ব্যবস্থার একটি প্রধান দোষ এই থাকিয় গেল যে, গভর্ণমেণ্ট স্বর্ণমুদ্র বা স্বর্ণমানের পরিবর্কে টাকা দিতে বাধ্য থাকিলেও টাকার বিনিময়ে স্বর্ণ দিবার কোন বাধ্যবাধকতা তাহদের রহিল না। এই অবস্থায় স্বর্ণমুদ্রা ও হীন রৌপ্যমুদ্রার মধ্যে গভর্ণমেণ্ট-নিৰ্দ্ধারিত ১ শিলিং ৪ পেনি হার স্থির রাখা সম্ভব হইতে পারে না । কারণ বাটার হার বাধিয়া দেওয়া হইল কিন্তু বাজারের দুইটি ধাতু বা মুদ্রার পরিমাণ স্বাভাবিক নিয়মে নিয়ন্ত্রিত হইবার পথ রুদ্ধ করিয়া দেওয়া হইল। ১৮৯৩ সালের পরেও রূপার দর কমিয়াই চলিল এবং বিনিময়ের হার ১ শিলিং ১ষ্ট্র পেনি পৰ্য্যন্ত নামিল। ১৮৯৮ সালে ভারত-গভর্ণমেণ্ট অবিলম্বে স্বর্ণমান প্রতিষ্ঠার জন্ত পুনরায় একটি প্রস্তাব প্রেরণ করিলেন। তাহার ফলে ফাউলার কমিটি নামে যে কমিটির নিয়োগ হইল তাহারা ভারত
পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৮৯
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।