পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৯০২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

tూనీ8 “কচির অত্যাচারের কথা বলছিলেন ; কিন্তু এই বয়সে বাবার শরীরের উপর অত্যাচার কি সঙ্ক হবে ?” - “আপনার কাছে হার মানলুম। কিন্তু আসল কথাটা বলি, ইচ্ছে ছিল ওঁর দোহাই দিয়ে অসময়ে আমি নিজেও এক কাপ চা খাব!’ • - “কি মুস্কিল! আমি এখনই তৈরি করে আনছি।" যামিনী বেতের চেয়ারে ভাল করিয়া নড়িম্ব চড়িয়া বসিল । চাহিয়া দেখিলেই বোঝা যায় ছেলেটি অত্যন্ত চঞ্চল এবং তীক্ষ্মী। বয়স বােধ করি বাইশতেইশ। মিনিট পনের পরে নিৰ্ম্মলা চ: জানিল। ঘড়ির দিকে চাহিয়৷ চন্দ্ৰকান্ত কহিলেন, “দশটা যে বাজে। নিৰ্ম্মল, তোমার কলেজের সময় হয়ে এল।’ - “ভাবছিলুম আজ কলেজ যাৰ না”—নিৰ্ম্মল অফুট কণ্ঠ কহিল, “ময়ের শরীর খারাপ।” “আপনিও যে দেখচি একটুখানি ছুতে পেলেই কলেজ কামাই করেন।” যামিনী হাসিয়া বলিল । “তাই না কি ” নিৰ্ম্মলার মুখেও হাস্তরেখা ফুটিয়া উঠিল। একটুখানি আগে মায়ের উপর অভিমান হইয় তাহার চোখের নীলাভ তারার কিনারায় যেটুকু অশ্রুঞ্জলের ঝিকিমিকি উজ্জল হইয়া উঠিয়াছিল, স্নিগ্ধ হাস্য-পরিহাসে সে সমস্তই মন হইতে মিলাইয়া গেল । SS8O যামিনী বলিল, “আপনি মনে করচেন আপনার দোষ ধ'রে আমি নিজে কেন উঠবার নাম করচিনে। আমার কি লেখাপড় কিংবা কলেজের বালাই নেই ? কিন্তু আমার কি জানেন, কলেজ কামাই করতে পেলে ছাড়িনে ৷” “ভালই তো । আমারও কলেজের উপর বিশেষ প্রীতি নেই।” “কিন্তু আমি যে ‘ক্স’ পড়ি । ল’ পড়ায় কলেজ যাওয়া কিংব-না যাওয়ার কোন মানে হয় না।” - নিৰ্ম্মল! উঠিয়া পড়িয়া কহিল, “কোন রকম পড়াতেই কলেজ না যাওয়ায় বিশেষ কোন ক্ষতি হয় না, যদি লেকুচার শোনার বদলে বাড়িতে বসে সেই বিষয়ের ওপর ভাল বই পড় যায়। কিন্তু মিথ্যে বাড়িতে বসে থেকেই বা কি হবে, আমি যাই ।” তাহার আবার মনে পড়িয়া গেল, মাম্বের শরীর খারাপসত্ত্বেও তাহাকে কোন কাজ করিতে দেন নাই এবং দিবেন না। মনে পড়িতেই তাহার মন অভিমানে পূর্ণ হইয়া উঠিল এবং খাওয়-দাওয়ার পরে প্রস্তুত হইয় সে যখন বই-হাতে কলেজের বাসে উঠতেছে, তখনও বাহিরের ঘরে যামিনী ও তাহার বাবার উত্তেজিত ভর্কের রেশ শোনা যাইতেছে । ক্রমশঃ মথুরাপুর দেউল শ্ৰীগুরুসদয় দত্ত মথুরাপুরে একটি অতি প্রাচীন অৰ্দ্ধভগ্ন দেউল আছে— বিদ্যাসাগর কলেজের ছাত্র ক্রযুক্ত অজিতকুমার মুখোপাধ্যায়ের নিকট এই সংবাদ শুনিয়া ইহা দেখিবর আকাঙ্ক্ষা আমার মনে জাগ্রত হয় ; গত পূজার ছুটিতে অজিত বাবুর পিতার জাতিথ্য গ্রহণ করিয়া ইহা দেখিয়া আসিয়াছি। দেখিবার মত জিনিষ এই মথুরাপুর দেউল—স্থাপত্য ও ভাস্কৰ্য্য শিল্পে বাঙালীর বৈশিষ্ট্যের নিদর্শন। - (3.). মথুরাপুর গ্রাম ফরিদপুর জিলার রাজবাড়ি মহকুমার অন্তর্গত। ইস্টার্ণ বেঙ্গল রেলপথের কালুথালি-ভাটিয়াপাড়া শাখার নলিয়াগ্রাম হইতে তিন মাইল ও কালুখালি হইতে এক মাইল দূরে ইহা অবস্থিত। পূৰ্ব্বে রেলপথ ও পশ্চিমে চন্দনা নদী হইতে প্রায় সমদূরবর্তী স্থানে এই দেউল । শতাব্দীর পর শতাব্দী এই পল্লীগ্রামে এই উন্নত শিখর দেউল দাড়াইয় আছে—কোন ঐতিহাসিক, ভাস্কর কিংবা প্রত্নতত্ববিদের দৃষ্টি ইহার প্রতি আকৃষ্ট হয় নাই। আমি যখন প্রথম ইহা দেখিতে ঘাই তখন ইহার চারিদিকে প্রায় ১• ফুট উচু কাটা জঙ্গল। অতি কষ্টে একটি সরু পথ ধরিষ্ঠা