পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৯০৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রামায়ণ দৃশ্য মথুরাপুর দেউল প্রতিষ্ঠাতা সংগ্রাম শাহ যে অভিন্ন, এইরূপ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যেতে পারে । স্থানীয় লোকেরও বিশ্বাস এইরূপ ; এবং বহুকাল যাবৎ এরূপ কিম্বদন্তী প্রচলিত আছে। ফরিদপুরের ইতিহাসেও এইরূপ লিখিত আছে যে, তিনি মথুরাপুরে তাহার আবাস নিৰ্মাণ করেন। দেউলের দেওয়ালের মূৰ্ত্তিগুলিও ইহা সমর্থন করে । শ্ৰীকৃষ্ণ কর্তৃক রুক্মিণী হরণ ও পরিণয় এই সংগ্রাম শাহের বলপূর্বক বিবাহেরই দ্যোতকরূপে স্থাপিত, এরূপ বিশ্বাস করিলে অন্যায় হইবে না। ইহাও লক্ষ্য করিবার বিষয় যে বৃন্দাবন লীলার দৃপ্তাবলীতে শ্ৰীকৃষ্ণ রাখালমূৰ্ত্তিতেই চিত্রিত, কিন্তু রুক্মিণীহরণ ও বিবাহের দৃশ্বে শ্ৰীকৃষ্ণের পরিণত বয়স্ক ও পুষ্টায়তন মনুষ্য-রূপ। পুরাণে বর্ণিত মূৰ্ত্তির সহিত ইহার কোনই সাদৃপ্ত নাই। যদি এই কিম্বদন্তী সত্য হয় তবে ইহা বলা যাইতে পারে যে, এই দেউল সম্ভবতঃ সপ্তদশ শতাব্দীর উত্তরাদ্ধের প্রথম ভাগে নিৰ্ম্মিত হয়—হয়ত ১৬৬৫ খৃষ্টাব্দে । একটি সরকারী বিবরণে নির্মাণের তারিখ ১৪৭২ খৃষ্টাৰ বলিয়া উল্লেখ করা হইয়াছে । এই তারিখ সমৰ্থন করিবার মত কোন কাহিনী আমি সবগত নছি। - ( & ) দেউলটির গঠনের বিশেষত্ব এই যে, ইহা ভিত্তি হইতে চুড়া পৰ্য্যন্ত সমদ্বাদশভূজ। ভূমি হইতে ইহার উচ্চতা প্রায় সত্তর ফুট । ভিত্তি ভূমিতে ইহার ব্যাস বাহিরের বৃত্তে ৩৪/১১ ও ভিতরের বৃত্তে ১২:১১* অর্থাৎ দেওয়াল ১১ পুরু। দ্বার মাত্র দুইটি -পশ্চিম ও দক্ষিণের দিকে ; পশ্চিমেরটিই প্রধান দ্বার। উত্তর ও পূর্ব দিকে নকল দরজা আছে। পূৰ্ব্বদিকের দ্বার পিপুল বৃক্ষটিতে সম্পূর্ণরূপে নষ্ট করিম ফেলিয়াছে। দেউলের ভিতরে প্রাচীরগাত্রে কোনও কারুকার্য নাই ; নেহাতই সাধারণ ভাবে ২৯ পর্য্যন্ত উঠিয়াছে। তারপর চুড়া পৰ্য্যস্ত “চব ক্ষেত” পদ্ধতি অর্থাৎ প্রাচীরগ্রাত্র সমান নহে, একবার উচু একবার নীচু । ইহাতে সৌন্দর্ঘ্য বাড়িয়াছে, সন্দেহ নাই- কোন দেউলে ইহার অনুরূপ আমি দেখি নাই। সৰ্ব্বোচ্চ চুড়ায় সমম্বাদশভূজ পদ্ধতি পরিত্যক্ত হইয়াছে। ইহা যেন বিপরীত ভাবে স্থাপিত জলপাত্রের তলদেশের ভিতর-দিকের স্থায় ঈষৎ সমতল । এই ছাদের কিয়দংশ ভাঙিয়া পড়িয়ছে, ইহা বড়ই দুঃখের বিষয়। ভিত্তিভূমিতে বাহির দিকে এই সমম্বাদশভূজের প্রত্যেক