প্রয়োজন হইলে অতিরিক্ত খরচ লইয়া টেলিগ্রামে অর্ডারটি পাঠান হয় এবং তাঙ্গকে টেলিগ্রাফিক ট্রান্সফার বলে। ১৮৯৩ সাল পর্য্যন্ত হোম চার্জেসের পরিমাণ অতুযায়ী কাউন্সিল বিল বিক্রয় করা:হইত। কিন্তু ১৮৯৩ সাল হইতে এই বিল যথেচ্ছ পরিমাণে ভারতসচিব বিক্রয় করিতে আরম্ভ করেন । ইহার কুফল উপরে উল্লেখ করিয়াছি। বিলাতী পণ্যের মূল্যের দরুণ বা অন্য কারণে আমাদিগকে ইংলণ্ডে টাকা পাঠাইতে হয়। আবার ভারতসচিবেরও এদেশে টাক পঠাইবার প্রয়ােজন হয়। এই অবস্থায় ভারতীয় ট্রেজারীতে টাকা জমা দিয়া আমরা রিভাস কাউন্সিলস্ ক্রয় করিয়! আমাদের পাওনাদারের নিকট পাঠাষ্টয়া দিলে তিনি তাহা ভারতসচিবের নিকট হইতে ভাঙাষ্টয়া লক্টতে পারেন । এই কাউন্সিল বিল ও রিভাস কাউন্সিল সদা-পরিবর্তনশীল বিনিময়ের হার ঠিক রাখিবার অন্যতম উপায়-স্বরূপ ব্যবহৃত ইষ্টত । নিদিষ্ট হার হইতে টাকার মূল্য কমিবার সম্ভাবনা হইলেষ্ট রিভাস কাউন্সিল বিক্রয়ের দ্বারা বাজার তুষ্টতে চলতি traord ofotid off ( contraction of currency) করিয়! ফেলা হঠত, পক্ষান্তবে টাকার মূল্য বাড়িবার উপক্রম করিলেই ভারতসচিব কাউন্সিল বিল বিক্রয় করিতে মুরু করিতেন এবং তদরুণ ভারতীয় ট্রেজারী হইতে টাক বাহির হইয়া বাজারে ছড়াইয়া পড়িত। ফলে বাজারে biata font of (expansion of currency) পাইয়া তাহার মূলা আর বাড়িতে পারিত না । অতিরিক্ত পাচন মুদ্রানীতিকে বঁচাইবার জন্য ইহাকে অন্যতম বার্থ চেষ্টা বলা যাক্টতে পারে । এক্ষণে ১৮৯৯ সাল হইতে ১৯১৬ সাল পর্যাস্ত যে-ভাবে কাজ চলিতে লাগিল তাহার স্বরূপ সংক্ষেপে দিতেছি : ( ১ ) টাকা ও বিলিত সভারিন ( পাউণ্ড-ষ্টালি ) এষ্ট দ্বিবিধ মুদ্রাই আইনসঙ্গত ez? Ini (legal tender ) Izo গণ্য হইত ; (২) সভারিনের মূল্য ১৫ টাকা নির্দিষ্ট ছিল ( অর্থাৎ ১ শিলিং ৪ পেনি = ১ টাকা ) ; (৩) স্বর্ণমুদ্রার বিনিময়ে রৌপ্যমূদ্র দাবি করা চলিত ; ( ৪ । কিন্তু রৌপ্যমুদ্রার বিনিময়ে স্বর্ণমুদ্র দাবি করা চলিত না, তবে প্রয়োজন অনুযায়ী ও সাধ্যমত তাহা দেওয়া হইত ; (৫) টাকার মূল্য ১ শিলিং ও পেনির নিয়ে নামিতে চাহিলে అ:ు রিভাস কাউন্সিল বিক্রয় করিয়া যেমন তাহার মূল্যহাস ঠেকান হইত, তেমনি টাকার মূল্য বাড়িবার উপক্রম করিলে উল্লিখিত ৩য় দফার বিধান অনুযায়ী বাজারে চলতি টাকার পরিমাণ বাড়াইয়া ও স্বর্ণমুদ্রার পরিমাণ কমাইয়া ফেলিয়৷ টাকার মূল্য বুদ্ধির প্রতিবন্ধকতা করা চলিত। এদিকে গভর্ণমেণ্টের মুদ্রানীতি সম্পর্কে কঠোর সমালোচনা এক ভাবেই চলিতে থাকে এবং বৃটিশ গভর্ণমেণ্ট ইংলণ্ডের বর্তমান রাজস্বসচিব স্তর অষ্টিন চেম্বারলেনের সভাপতিত্বে ১৯১৪ সালে এক কমিশন নিয়োগ করেন। তাহারা অনেক গবেষণা করিয়া ভারতবাসীরা স্বর্ণমুদ্রা বিশেষ চাহেন না এবং ভারতের জন্য রৌপ্যমুদ্র ও নোট প্রচলনই প্রশস্ত, ইহাই নিৰ্দ্ধারণ করেন এবং ঘটনাচক্রে ‘গোল্ড এক্সচেঞ্জ ষ্ট্যাণ্ডার্ড নামে যে অভিনব মুদ্রানীতির প্রচলন হইয়াছে তাহাই সম্পূর্ণ সমর্থন করেন । এদিকে ১৯১৪ সালে ইউরোপে লঙ্কাদহন পাল স্বরু হয়, এবং বিশ্বব্যাপী অবস্থবিপর্যায়ের সহিত ভারতের এই অস্বাভাবিক মুদ্রার ব্যবস্থাও একেবারে ভাঙিয়া পড়ে। লড়াইয়ের সাজসরঞ্জাম, মালমশলী জোগাইবার জন্য ভারতের রপ্তানী অসম্ভব বৃদ্ধি পায় ; অথচ প্রধান দেশসমূহ যুদ্ধে ব্যপৃত থাকায় ভারতে তাহাদের পণ্যের আমদানী স্বভাবতই অত্যন্ত হ্রাসপ্রাপ্ত হয়। ভারতসরকারকে বৃটিশ সরকারের পক্ষে ছয় বৎসরে ২৪ কোটি পাউণ্ড ষ্টার্লিং (অর্থাৎ ২৬০ কোটি টাকা ) ব্যয় করিতে হয়। এদিকে লড়াইয়ের দরুণ কোন দেশই অন্যান্য জিনিষের ন্যায় রৌপ্যকেও হাতছাড়া করিতেছিল না। এই কারণে ও অন্যান্য কতকগুলি সমবেত কারণে রূপার দর অভাবনীয় রূপে বৃদ্ধি পায়। ১৯১৫ সালে প্রতি-আউন্স রৌপ্যের মূল্য ২৭ পেনি ছিল ; ১৯২০ সালে তাহ ৮৯ পেনিতে আসিয়া দাড়ায়! অতিরিক্ত রপ্তানীর মূল্য দিবার জন্য যে অতিরিক্ত কাউন্সিল বিল বিলাত হইতে আসিতে লাগিল ভদ্ধরুণ এবং বৃটিশ গভর্ণমেণ্টের বরাতি উল্লিখিত লড়াইয়ের ব্যক্ষসস্কুলনের দরুণ যে অত্যধিক টাকার প্রয়োজন হুইল তাহার জন্য অগ্নিমূল্যে রৌপ্য খরিদ করিতে হইল। হিসাববহিভূত এই বিরাট ব্যয়সস্কুলনের জন্য ভারত-গর্ভর্ণমেণ্টকে অতিরিক্ত কর ধার্ঘ্য করিতে এবং ১৯১৭-১৯ সাল মধ্যে ১• কোটি টাকা ঋণ গ্রহণ করিতে হয়। বিপাকে পড়িয়া ।
পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৯১
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।