পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৯৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

করিল, “কেমন আছেন রে এখন r ছোট মেয়েটি ভীত, উদ্বিগ্ন দৃষ্টিতে তাহার মুখের দিকে তাকাইয়া বলিল, “কি জানি কেমন, দুটো গাড়ী ত ডাক্তার পার ওষুধ আনতে গিয়েছে ; বাবাও আজকে সারাদিনই বাড়িতুে বসে আছেন। সেই যে তুমি গেলে তখন থেকে ত দেখছি উপরেই ঘোরাঘুরি করছেন। আমাদের ত মোটে যেতেই দিচ্ছে না কাছে, ডাক্তার নাকি গোলমাল একেবারে বারণ করেছে।” রোগীর ঘরের সম্মুখের বারান্দায় আর একটি সালঙ্কার বধৃবেশ মেয়ে দাড়াইয় একটা ওষুধের গোলা প্রস্তুত করিতেছিল । ইহাদের দেখিয়া হাভের ঔষধট নামাইয় একটা শ্বেত পাথরের টেবিলে রাগিয়া বলিল, “এল ভাই এস, তোমার কথাই হচ্ছিল।" সে কথার উত্তর না দিয়া অশ্রমুখী মেয়েটি বলিল, “কিছু কি ভালর দিকে যাচ্ছে ভাই ?...” ডান হাতটা ঘুরাষ্টয়া ঠোঁটের কোনটা একটু বাকাইয়া, গষ্ঠীর মুখে বধু বলিল, “আর ভাল ? জান বেশ টন্‌টনে রয়েছে, কথাবার্তা বেশ কইছেন, কিন্তু এদিকে ত সবই বিগড়ে ঘাচ্ছে। নিজেও সব বুঝছেন, তাই একে ওকে দেখতে চাইছেন । এই মাত্রই বলছিলেন– “কল্যাণী সেই যে গেল এখনও এল না । শেষে কি দেখাই হবে না ?’ ” শুনিতে শুনিতে কল্যাণীর মুখ বেদনায় ক্লিষ্ট হইয়া উঠিল, আঁচল দিম্ব তাড়াতাড়ি আপনার উদগত চোগের জল মুছিয়া ফেলিক্স সে শুধু সংযত হইবার চেষ্টায় বলিল, “এই ওষুধটা দেবে বুঝি এখন !” উত্তরের অপেক্ষ না করিয়াঙ্গ কল্যাণী রোগীর ঘরের ভিতর চলিয়া গেল। একটি প্রশস্ত চার-কোণা ঘরের এক পাশে ছোট একটি আলমারী, শ্বেত পাথরের ছুটি জল চৌকির উপর কতকগুলি বই খাতা ইত্যাদি ; তাহার সম্মুখে একখানি গালিচা পাত, দেওয়ালে একটি বৃদ্ধের প্রতিকৃতির নীচে একটি হরিনামের ঝুলি টাঙানে, ছবিটিতে বেলফুলের একটি শুষ্কমালা দুলিতেছে তাহার নীচে একগোছা ধান। অন্যদিকে ছোট দুটি কাপড়-ঢাকা টেবিলে নানারকম ঔষধ ও পথ, তাহার পাশে দুটি হাতলহীন চেয়ার ও নীচু একটা কাঠের চৌকির উপর এক কুঁজা জল । ঘরের মাঝখানে একহার একটি কালে খাটে শুভ্ৰ বিছানার উপর শীর্ণ একটি মানুষ গরদের চাদর চাপ দিয়া পড়িয়া Se’ "". . . .. . : " . م یشیوه یعتی تیمتحتی - ع - ॐहं 轉 - - আছেন। শিরের কাছে খেতৰন নল বর্ণিা। কাণী খাটের এক পাশে বলিয়া ধীরে রোগীর গায়ে হাত রাখিল । রোগী তাহার দিকে মুখ ফিরাইয়। দুই হাতে ব্যাকুলভাবে কলাশীর সালে সস্নেহ স্পর্শ বুলায় বললেন, “এতক্ষণে এলি মা ? কাছে কাছে থাকিস্ বাছা, কথন আছি কখন নেই কে জানে ?” মুখের কাছে ঝুঁকিয় কল্যাণী বলিল, “আমার ননদ হঠাৎ অমুখে পড়েছেন তাই আসতে একটু দেরী হয়ে গেল। কিন্তু আজ রাত্রে আর যাব না, এইখানেই থাকব। তুমি কিছু ভেবে না ম৷ ” ম! বলিলেন, “আয় মা, কচি মেয়ের মত একটু কোলের কাছে ঘেঁষে বোস্। তুই যে আমার কোলের মেয়ে, যাবার সময় বুকটা সেই মুখে একটু ভরে নিয়ে যাই। বাপ ত সেই কবে ফেলে চলে গেছে, এইবার মাও চলল। চোখের পাতায় পাতায় রেখে তোকে মানুষ করেছিলাম, পরের ঘরে সঁপে দিয়ে কত ভেবেছি কত কেঁদেছি। কখনও তোর মুখ একটু মান দেখলে রাত্রে আর ঘুম আস্ত না। এখন চিরদিনের মত ওপারে গিয়ে কি ক’রে কাটাব জানি না। তোর মুখের দিকে তাকাবার কেউ রইল না ম৷ এ সংসারে । আশীৰ্ব্বাদ করি চির স্বামী-সোহাগিনী হস্ ।” কল্যাণী মা’র বুকের ভিতর মুখ গুজিয়া ঝর ঝর করিয়া কাদিয়া ফেলিল। আবার এক মুহূর্তেই আত্মসম্বরণ করিয়া লইয়া বলিল, “ম, অত দুৰ্ব্বল শরীর নিয়ে এত কথা বলে না, অমল করে ভেবে না। একটু চুপ করে শুয়ে থাক, আমি মাথায় হাত বুলিয়ে দি ” কিছুক্ষণ ঘর নিস্তব্ধ হইয়া রহিল, মা পাশ ফিরিয়া শুইলেন। কল্যাণী বা হাতের উপর মুখ রাখিম৷ মেঝের দিকে তাকাইয়া কি একটা চিন্তায় মগ্ন হইয়াছিল। ঘরে নীল ঢাকনির তলায় স্বল্পতেজ বৈদ্যুতিক আলো জলিতেছিল। হঠাৎ মা শীর্ণ অঙ্গুলি দিয়া কল্যাণীকে ঠেলিয়া বলিলেন, “আমার লোহার সিন্ধুকের চাবি যে তোর আঁচলে ক'দিন আগে বেঁধে দিয়েছিলাম দেখি সেটা ।” কল্যাণী চাবি দেখাইল। মা বলিলেন, “খোল দেয়ালের গায়ের আলমারীটা ।” কল্যাণী একটু বিরক্ত হইয়া ৰলিল, “এখন কেন মা ওসব ? তুমি সেরে উঠে ঘা হয় করে।” ।