পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪৯৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শ্রাবণ পাশ্চাত্য জাতিগুলিকে আফ্রিকার ও এশিয়ার দেশবাসীদের সংস্পর্শে লইম আসে। প্রধানতঃ উৎপন্ন সামগ্রীর কাটুতি ও কাচ মালের আমদানি করিবার জন্য আধুনিক সাম্রাজ্যবাদের উৎপত্তি। কিন্তু পাশ্চাত্য জাতির, বিশেষতঃ ইংরেজগণের, শাসন বিস্তারের ফলে অধীন জাতিদের মনে রাষ্ট্রীয় অধিকার লাভের ইচ্ছাও জাগরিত হয়। মহাযুদ্ধের পর পোল্যাণ্ড, ফিনল্যাণ্ড, ল্যাটভিয়, এষ্টোনিয়া, চেকোপ্লেভাকিয়া, যুগোশ্লাভিয়া প্রভৃতি বহু পরাজিত জাতির স্বাধীনতা লাভ দেখিয়া আফ্রিকা ও এশিয়ার অধীন জাতির NFS THÄfTIFLI (self-determination) FE STS হইয় উঠে । ইহাতে সাম্রাজ্যবাদের সহিত জাতীয়তাবাদের সংঘর্য উপস্থিত হইয়াছে। কিন্তু জাতীয়তাবাদের শক্তি আন্তর্জাতিক কয়েকটি আন্দোলনের ফলে হ্রাস হইবার সম্ভাবন আছে। শেষোক্ত আন্দোলনের দুইটি রূপ, -এক হইতেছে জাতিসঙ্ঘের ( League of Nations) *fs, আর বিভিন্ন দেশের শ্রমিকগণের স্বার্থের একত্ব অনুভব । এই দুইটি ঘটনা ছাড়া বিংশ শতাব্দীতে আর একটি ব্যাপার ৪ লক্ষ্য করিবার বিষয় । সেটি নারীজাগরণ আন্দোলন। রাষ্ট্র-ব্যাপারে নরনারীর সমান অধিকার ফ্রান্স ব্যতীত সকল প্রধান রাষ্ট্রেই স্বীকৃত হইয়াছে । পুরুষের ন্যায় নারীও প্রতিনিধি নির্বাচন করিবার ও প্রতিনিধি হইবার ক্ষমতা লাভ করিয়াছে। বিত্তহীনের রাষ্ট্রীয় অধিকার কলকারখানার প্রসার, প্রাচ্য জাতির উপর পাশ্চাত্য জাতির অধিকার বিস্তার ও নারীর রাষ্ট্রীয় অধিকার -এই তিনটি ঐতিহাসিক ঘটনা আধুনিক রাষ্ট্রচিন্তাকে কি ভাবে প্রভাবান্বিত করিয়াছে এক্ষণে তাহারই আলোচনা করিব। কলকারখানার প্রসারের সঙ্গে সঙ্গে শ্রমিক আন্দোলন প্রবল আকারে দেথা দিয়াছে। মহাযুদ্ধের সময় ইউরোপীয় জাতিসমূহ সঞ্চিত বিত্ত ব্যয় করিতে থাকে ও ধন আহরণে বিরত হইতে বাধ্য হয়। যুদ্ধের জন্য প্রয়োজনীয় গোলাবারুদ, জাহাজ, ডুবোজাহাজ, এরোপ্লেন, পোষাক প্রভৃতির উৎপাদন সে সময়ে চলিয়াছিল বটে, কিন্তু তাহাতে জাতীয় ধনসম্ভার সমৃদ্ধ হয় নাই। যুদ্ধের পরে প্রত্যেক ইউরোপীয় রাষ্ট্রেরই জাতীয় ধনভাণ্ডার শূন্ত হইয় পড়ে। ফলে সব দেশেই বিংশ শতাব্দীর রাষ্ট্রীয় চিন্তাধারা 863) বেকারের সংখ্যা অসম্ভব রকম বাড়িয়া যায়। যে-ধন উৎপন্ন হইতে লাগিল তাহার অংশ-বিভাগ লইয়া শ্রমিক ও ধনিকের মধ্যে ভীষণ দ্বন্দ্ব দেখা গেল। যুদ্ধে যোগ দেওয়ার জন্য শ্রমিকদের রাষ্ট্ৰীয় অধিকারবোধ জন্মিল। তাহারা বুঝিল, যুদ্ধের দ্বারা তাহারাই সৰ্ব্বাপেক্ষ ক্ষতিগ্রস্ত হইয়াছে। এক জাতির সহিত অন্য জাতির বিরোধের অর্থ এক রাষ্ট্রের ধনিক-সম্প্রদায়ের সহিত অন্য রাষ্ট্রের ধনিকদিগের স্বার্থের সংঘর্ষ। যুদ্ধের সময় অনেক ধনিক ধন অর্জন করিবার অন্যায্য স্থযোগ পাইয়াছিল। স্বতরাং শ্রমিকগণ রাষ্ট্রে এমন অধিকার দাবি করিতে লাগিল যাহাতে ভবিষ্যতে আর ধনিকগণ যুদ্ধ বাধাইয় তাহদের সর্বনাশ সাধন করিতে ন পারে। এই আন্দোলনের দাবি মিটাইবার জন্য বিভিন্ন মতবাদী মনীষী বিভিন্ন প্রকার সমাধান উপস্থিত করিয়াছেন । সমূহতন্ত্রবাদ শ্রমিকগণের দাবি ও তাঁহাদের অধিকার লাভের উপায় Two of Louis Blane, J. K. Rodbertus, F. Lassallo প্রভৃতি মনাৰ্মা গবেষণা করিলেও উহার ঋষি কাল* মার্কস্ । মার্কস্ ইতিহাসের মধ্যে ধনিক ও শ্রমিকের আবহমানকালের দ্বন্দ্ব, পনিকের দ্বারা শ্রমিকের নিষ্পেষণ ও বিত্তহীন সম্প্রদায়ের ক্রমশ: সংপ্যাবুদ্ধি দেপিতে পান। তিনি বলেন, শ্রমিকেরাই ধন উৎপাদন করিয়া থাকে, সুতরাং উৎপন্ন ধন তাহাদেরই দ্যায্য প্রাপ্য। ধন ক্রমশঃ কতিপয় মুষ্টিমেয় ধনীর হাতে পুঞ্জীভূত হইতেছে। ইহার ফলে সংখ্যাগরিষ্ঠ বিত্তহীনের সহিত সংথ্যালঘিষ্ঠ বিত্তবানের সংঘর্ষ উপস্থিত হইবে, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিপ্লব আসিবে। তাহার পর শ্রমিকগণ রাষ্ট্রীয় ও বাৰ্ত্তাসম্পৰ্কীয় সমস্ত ক্ষমতা নিজের হাতে লইবে । তপন ধন ব্যক্তিবিশেষের হাতে না থাকিয় রাষ্ট্রের হাতে আসিবে, শিক্ষা অবৈতনিক হইবে, শ্রম করিতে প্রত্যেকেই বাধ্য হইবে ও সমাজ হক্টতে শ্রেণী-বিভাগ অন্তহিত হইবে। এই সকল উদ্দেশু সিদ্ধ করিবার জন্ত সকল দেশের শ্রমিকগণ মিলিত হইয়৷ আন্তর্জাতিক সঙ্ঘ স্থাপন করিবে ও কার্ধ্যে অগ্রসর হইবে। মার্কসকে গুরু মানিয়া বিত্তহীনের রাষ্ট্রীয় অধিকার লইয়া বিভিন্ন মতবাদ স্বস্ট হুইয়াছে। ইহার মধ্যে Collectivism