পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৫০৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শ্রাবণ আর ব্যক্তিগত সম্পত্তি নাশ করা কেবলমাত্র রাষ্ট্রের স্বারা সম্ভবপর নহে। জনসাধারণের মন হইতে স্বাৰ্থবাসনা দূরীভূত হইয়া যখন আধ্যাত্মিক বোপের বিকাশ হইবে তখনই বলশেভিক নীতির সাফল্য আসিবে। সে কায্য মূলতঃ ধৰ্ম্মবোধের উপর স্থাপিত। রাষ্ট্রীয় আইন কেবলমাত্র মানসিক অবস্থার ও ভাবের বহিবিকাশ, এই সত্য বলশেভিকবাদীদের উপলব্ধি করা প্রয়োজন । আধুনিক রাষ্ট্র ও সমূহতন্ত্রবাদ ইউরোপের আধুনিক রাষ্ট্রে শ্রমিক রাষ্ট্রনীতির মূলস্ত্রগুলি স্বীকৃত হইয়াছে। মহাযুদ্ধের পর জাৰ্ম্মানী, পোল্যাণ্ড, চেকোস্লোভাকিয়, যুগোশ্লাভিয়, এষ্টোনিয়া,ফিনল্যাণ্ড, লাটভিয় প্রভৃতি রাষ্ট্রের উদ্ভব হইয়াছে। উনবিংশ শতাব্দীর লিবার্যালগণের রাষ্ট্ৰীয় দর্শন যাহা কেবলমাত্র ব্যক্তি-স্বাতস্থ্যের উপর প্রতিষ্ঠিত ও যাহাতে রাষ্ট্র কেবলমাত্র পুলিসের কাজ করিবার জন্য বর্তমান তাহ সম্পূর্ণরূপে পরিত্যক্ত হইয়াছে। অর্থনৈতিক সমস্ত যে রাষ্ট্রীয় সমস্যা হইতে বিভিন্ন সমাজজীবন-বিকাশের পক্ষে শ্রমজীবীদের সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের প্রয়োজন সৰ্ব্বাপেক্ষ অধিক, তাঙ্ক স্বীকৃত হইয়াছে। জাৰ্ম্মানীর নূতন কনষ্টিটিউশনের ১৫১ ধারায় আছে, “জাতির অর্থনৈতিক জীবনের সংগঠন রুবিচারের উপর প্রতিষ্ঠিত হক্টবে ও যাহাতে সকলে ভালভাবে জীবনযাত্র নির্বাহ করিতে পারে তাহার ব্যবস্থা হইবে।” এষ্টোনিয়ার কন্‌ষ্টিটিউশুনের ২৫ ধারায় আছে, “অর্থ নৈতিক ব্যবস্থা এরূপভাবে নিয়ন্ত্রিত হুইবে যে. মতুন্যের উপযোগী জীবনযাত্ৰ নিৰ্ব্বাহের উপায় সকলের হস্তগত হুইবে ।" পোল্যাণ্ডের কন্‌ষ্টিটিউশনে আছে ষে শ্রমজীবীদের স্বর্থ-সুবিধা দেথা রাষ্ট্রের অন্যতম প্রধান কৰ্ত্তব্য। অনুরূপ ব্যবস্থা ফিনল্যাণ্ডের ও যুগোশ্লাভিয়ার কন্‌ষ্টিটিউশুনেও গৃহীত হইয়াছে। উনবিংশ শতাব্দীর লিবার্যাল মতের সম্পূর্ণ বিরোধিতা করিয়া যুগোশ্লাভিয়ার কনষ্টিটিউশনে ( ১৬ ধারা ) স্পষ্টই লিখিত হইয়াছে--- “The Government has in the interest of the whole and based upon thc spirit of the law, the right and duty to intervene in the economic affairs of its citizens in the spirit of justice and for the prevention of sosial adversity.” ধনসম্পত্তির উপর ব্যক্তিগত অধিকার এই সকল নবরাষ্ট্রে স্বীকৃত হইলেও, রাষ্ট্র সাধারণের স্বার্থের প্রতি লক্ষ্য রাগিয়া 6t)- 8 বিংশ শতাব্দীর রাষ্ট্ৰীয় চিন্তাধারা ĝWedł ব্যক্তিগত সম্পত্তির অধিকাংশ বা সৰ্ব্বাংশ প্রয়োজনমত অধিকার করিম লক্টতে পরিবে এই মত গৃহীত হইয়াছে। জাৰ্ম্মানীর নবরাষ্ট্রে অর্থনৈতিক সমস্ত সমাধানের জন্য ইকনমিক্‌ কাউন্সিল স্থাপিত হইয়াছে তাহাতে শ্রমজীবীদের কর্তৃত্ব স্বীকৃত হইয়াছে । ব্যক্তি, জাতি ও বিশ্ব উল্লিগিত মতবাদ ও রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা পৰ্য্যালোচনা করিলে দেখা যায়, সমাজ-জীবনে সদিচ্ছ। গু সদ্ভাবপ্রণোদিত ব্যাপক সহানুভূতি ও একত্ববোধের বিকাশ হইতেছে । এই নবভাবের উদ্দেশ্য ব্যক্তিত্বের পূণবিকাশ সাধন করা। ব্যক্তি নিজেকে একক বিচ্ছিন্ন ও স্বতস্থ ভাবে না দেপিয়৷ বিরাট সমাজ-জীবনের অশমাত্র ও সমষ্টির স্বার্থেই ব্যষ্টির স্বাখ এই ভাবে উদ্বুদ্ধ হইবে । জাতিলিশেষের মপো যেমন বিভিন্ন শ্রেণীর স্বার্থ বিরোধের সমন্বয় ধীরে ধীরে সাধিত হইতেছে, তেমনি বিভিন্ন জাতীয় রাষ্ট্রের মধ্যেপ্ত স্বার্থের একত্ব উপলব্ধি হইতেছে ও বিরাট আন্তর্জাতিক জীবনধারার পথ পরিষ্কৃত হইতেছে। ভূমার প্রতি লক্ষ্য অল্পের অনাদর আধুনিক চিন্তাধারার প্রধান বৈশিষ্ট্য। একদিকে যেমন স্বরাষ্ট্রনিয়ম্বণ নীতি পরাধীন জাতিদিগকে স্বাধীনতা-অঞ্জনের দিকে উন্মুখ করিয়া তুলিয়ছে ও তুলিতেছে, অন্য দিকে তেমনি বিশ্বজাতি সঙ্ঘ (League of Nations), fosso Tsa ( League of the Youth of the World ), Tsutosfossil isol (Anti-Imperialist League ). Arooff& effolo isol (International Labour Conference ) s of golfso of tafso সঙ্ঘ এক রাষ্ট্রের সহিত অপর রাষ্ট্রের মিলন সাধন করিতেছে । ন্যাশ নালিজম্ বা জাতীয়তাবাদের মধ্যে যে হিংসার বিষ রহিয়াছে তাহা দূর করিবার জন্য পৃথিবীর বহু শ্রেষ্ঠ মনীষী আঞ্জ বিশেষভাবে চেষ্টিত হইতেছেন। পরিশেষে বলিতে চাই, আধুনিক রাষ্ট্ৰচিস্তার ধারা সমাজতত্ত্ব, মনস্তত্ব, প্রাণবিদ্য। প্রভৃতি নব নব বিজ্ঞানের দ্বার। প্রভাবান্বিত হইয় পরিপুষ্ট হইতেছে ও মানব-সমাজে সংঘাত ও স্বার্থবিরোধের অবসান করিয়া বিশ্বশাষ্টি আনয়নের প্রয়াস পাইতেছে ।