পাতা:প্রবাসী (ত্রয়োবিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১৫১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২য় সংখ্যা } মত নেতাটি পারে নিয়ে যাবে না, তলায় নিয়ে যাবে। তৃতীয়পক্ষ যদি আমাদের শত্রুপক্ষই হয়, তা হলে এই কথাটা মনে রাখতে হবে তাঁরা তুফানরূপে আমাদের ফাটল মেরামতের কাজে লাগৃতে আসেনি। তারা ভয়ঙ্কর বেগে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেবে কৃোনখানে আমাদের তলা কাচা । দুৰ্ব্বলাত্মাকে বাস্তবের কথাটা তার ডাইনে বায়ে চাপড় মেরে মেরে স্মরণ করিয়ে দেবে। বুঝিয়ে দেবে ডাইনের সঙ্গে বায়ের যার মিল নেই রসাতলের রাস্তা ছাড়া আর সব রাস্তাই তার পক্ষে বন্ধ । এক-কথায় তারা শিরিষের আঠার ঢেউ নয়, তার ' লবণাম্বু। যতক্ষণ তাদের উপর রাগারগি কুরে বৃথা মেজাজ খারাপ ও সময় নষ্ট করুচি ততক্ষণ যথাসৰ্ব্বস্ব দিয়ে ফাটল বন্ধ করার কাজে লাগলে পরিত্রাণের আশা থাকে। বিধাতা যদি আমাদের সঙ্গে কৌতুক করতে চান, বৰ্ত্তমান তৃতীয় পক্ষের তুফানটাকে আপাতত দমিয়ে দিতেও পারেন—কিন্তু তুফানের সম্পূর্ণ বংশলোপ করে? সমুদ্রকে ডেবা বানিয়ে দেবেন আমাদের মত ধৰ্ম্মপ্রাণ হিন্দুরও এতবড় আবদার তিনি শুনবেন না । অতএব কাপ্তেনদের কাছে দোহাই পাডুচি যেন তারা কণ্ঠস্বরে ঝড়ের গর্জনের সঙ্গে পাল্লা দিতে গিয়ে ফাটল-মেরামতের কথাটা একেবারে চাপা না দেন । কাপ্তেনরা বলেন—সেদিকে যে আমাদের লক্ষ্য আছে তার একটা প্রমাণ দেখ যে, যদিও আমরা সনাতন-পন্থী তবু আমরা স্পর্শদোষ সম্বন্ধে দেশের লোকের সংস্কার দূর করতে চাই । আমি বলি এহু বাহ । স্পর্শদোষ ত আমাদের ভেদবুদ্ধির একটিমাত্র বাহ লক্ষণ । যে সনাতন ভেদবুদ্ধির বনস্পতি আমাদের পথরোধ করে দাড়িয়ে আছে তার থেকে একটি কাঠি ভেঙে নিলেই ত পথ খোলসা হবে না। আমি পূৰ্ব্বে অন্যত্র বলেচি, ধৰ্ম্ম যাদের পৃথক করে তাদের মেলবার দরজায় ভিতর দিক থেকে আগল দেওয়া । কথাটা পরিষ্কার করে বলবার চেষ্টা করি। সকলেই বলে থাকে—ধৰ্ম্মশদের মূল অর্থ হচ্চে যা আমাদের ধারণ করে। অর্থাৎ আমাদের যে-সকল আশ্রয় ধ্রুব, তারা ইচ্চে ধৰ্ম্মের অধিকারভুক্ত। তাদের সম্বন্ধে তর্ক সমস্যা ›ጎ » حصحص يحصبح محصح নেই। এই-সকল আশ্রয়ের কোনো পরিবর্তন ঘটে না । এদের সঙ্গে ব্যবহারে যদি চঞ্চলত করি, কথায় কথায় যদি মত বদল ও পথ বদল করতে থাকি, তা হলে ৰ’চিনে । কিন্তু সংসারের এমন একটা বিভাগ আছে যেখানে পরিবর্তন চলচে, যেখানে আকস্মিকের আনাগোনার অস্ত নেই, সেখানে নূতন নূতন অবস্থার সম্বন্ধে নূতন করে বারে বারে আপোষ-নিষ্পত্তি না করলে আমরা বাচিনে । এই নিত্য-পরিবর্তনের ক্ষেত্রে ধ্রুবকে অধ্রুবের জায়গায়, অধ্রুবকে ধ্রুবের জায়গায় বসাতে গেলে বিপদ ঘটবেই। যে মাটির মধ্যে গাছ শিকড় চালিয়ে দাড়িয়ে থাকে, শিকড়ের পক্ষে সেই ধ্রুব মাটি খুব ভাল, কিন্তু তাই বলে’ ডালপালাগুলোকেও মাটির মধ্যে পুতে ফেলা কল্যাণকর নয় । পৃথিবী নিত্য আমাকে ধারণ করে, পৃথিবী ধর্মের মত ধ্রুব হলেই আমার পক্ষে ভাল—তাঁর নড়চড় হতে থাকলেই সৰ্ব্বনাশ । আমার গাড়িটাও আমাকে ধারণ করে, সেই ধারণ ব্যাপারটাকে যদি ধ্রুব করে’ তুলি, তা হলে গাড়ি আমার পক্ষে পৃথিবী হবে না, পিজ রে হবে। অবস্থা বুঝে আমাকে পুরোণে গাড়ি বেচ তে হয় বা মেরামত করতে হয়, নতুন গাড়ি কিনতে হয় বা ভাড়া করতে হয়, কখনো বা গাড়িতে ঢুকতে হয়, কখনো বা গাড়ি থেকে বেরতে হয়, আর গাড়িটা কাৎ হবার ভাব দেখালে তার থেকে লাফিয়ে পড়বার জন্যে বিধান নেবার পূৰ্ব্বে ভাটপাড়ায় সইস পাঠাতে হয় না। ধৰ্ম্ম যখন বলে—মুসলমানের সঙ্গে মৈত্রী কর, তখন কোনো তর্ক না করে’ই কথাটাকে মাথায় করে নেব । ধৰ্ম্মের এ কথাটা আমার কাছে মহাসমুদ্রের মতই নিত্য । কিন্তু ধৰ্ম্ম যখন বলে—মুসলমানের ছোওয়া অল্প গ্রহণ করবে না, তখন আমাকে প্রশ্ন করতেই হবে—কেন করব না ? একথাটা আমার কাছে ঘড়ার জলের মত অনিত্য, তাকে রাখব কি ফেলব সেটার বিচার যুক্তির দ্বারা। যদি বল, এসব কথা স্বাধীন বিচারের অতীত, তা হলে শাস্ত্রের সমস্ত বিধানের সামনে দাড়িয়েই বলতে হবে,–বিচারের যোগ্য বিষয়কে যারা নির্বিচারে গ্রহণ করে তাদের প্রতি সেই দেবতার ধিক্কার আছে “ধিয়ে যে নঃ প্রচোদয়াৎ" যিনি আমাদের বুদ্ধিবৃত্তি প্রেরণ করেন। তারা পাগুকে দেবতার চেয়ে