পাতা:প্রবাসী (ত্রয়োবিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১৭২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

УФ e আসিল, তাহার বয়স ২৫/২৬ হইবে, বেশী লেখা পড়া না শেখায় সে চৌধুরীদের জমিদারী কাছারীতে ৯২ টাকা বেতনে মুহুরীগিরি করিত। কিশোরীলাল নিজের ঘরে প্রবেশ করিয়া দেখিল ঘরে আলো দেওয়া হয নাই, অন্ধকারেই জমি কাপড় ছাড়িয়। সে বাহিরে হতে পা ধুইতে গেল। তার পর ঘরে ঢুকিয় শুনিল, খুটুঘুটে অন্ধকার ঘরে মুশীলা তাহার সম্মুখের বাতাসকে সম্বোধন করিয়া বলিতেছে যে এ ংসারে থাকিয়া সংসার করা তাহার শক্তিতে কুলাইবে না, অতএব কাল সকালেই মন গরুর গাড়ী ডাকাইয়। তাহাকে বাপের বাড়ী পাঠাইয় দেওয়া হয় । কিশোরী সে কথার কোন বিশেষ জবাব না দিয়া লণ্ঠন জালিয় ও বাশের লাঠিগাছা ঘরের কোণ হইতে লইয়া বাহির হইয়া গেল। গু-পাড়ায় রায়-বাড়ীর চণ্ডীমগুপে গ্রামের নিষ্কৰ্ম্ম যুবকদিগের যাত্রার আখড়াই ও রিহাসেল চলিত—সেইপানে অনেকক্ষণ কাটাইয়। অনেক বাত্রে বাড়ী ফিরিয়া আসি তাহীর নিত্যকৰ্ম্মেব ভিতর । - রামতনু মুখুয্যে মহাশয় ও অনেকক্ষণ বাহিরের ঘরে কাটাইলেন । প্রতিবেশী হরি রায় তামাকের খরচ বঁাচাইবার জন্য সকাল সন্ধ্যায় মুখুয্যে মহাশয়ের চণ্ডীমণ্ডপ আশ্রয় করিতেন , তাহাকে রামত জানাইলেন যে তিনি খুব শীঘ্রই কাশী যাইতেছেন, কারণ আর এ-বয়সে ইত্যাদি। o র্তাহার এ বানপ্রস্থ অবলম্বনের আকাঙ্ক্ষার জন্য দায়ী একমাত্র তাহার পুত্রবধূ স্বশীল। স্বশীল সকাল নাই সন্ধ্যা নাই এধটা কিছু না বাধাইয়া থাকিতে পারে না । সে অত্যন্ত আনাড়ি, কোন কাজই গুছাইয়া করিতে পারে না, অথচ দোষ দেখাইতে যাইলে ক্ষেপিয়া যায়। তাহার জন্ত রামতনু মুখুয্যের বাড়ীতে কাক চিল বসিবার উপায় নাই। শ্বশুর-শাশুড়ীকে সে হঠাৎ অঁাটিয়া উঠিতে পারে না বটে, কিন্তু এজন্য তাহার চেষ্টার ক্রটি দেখা योंध्र न ! অনেক রাত্রে কিশোরী বাড়ী ফিরিয়া আসিয়া দেখিল তাহার ঘরে খাবার ঢাকা আছে ধ্ৰু স্ত্রী ঘুমাইতেছে। খাবারের ঢাক খুলিয়৷ আহারাদিপশষ করিয়া সে শুইতে প্রবাসী—অগ্রহায়ণ, ১৩৩• . [ ২৩শ ভাগ, ২য় খণ্ড গিয়া দেখিল স্ত্রী ধুম-জড়ানো চক্ষে বিছানার উপর উঠিয়া বসিয়াছে। স্বামীকে দেখিয়া একটু অপ্রতিভের স্বরে বলিল—“কখন এলে ? তা আমায় একটু ডাকুলে না কেন ?” কিশোরী বলিল--"আর ডেকে কি হবে ? অামার অীর কি হতে পা নেই ! নিতে জানিনে ?” হঠাৎ তাহার স্ত্রী রাগিয় উঠিল—“নিতে জান তে৷ জেনে । কাল থেকে আমার এখানে আর বনবে না । , এ যেন হয়েচে শক্রপুরীর মধ্যে বাস-বাড়ীম্বুদ্ধ লোক আমার পেছনে এমন করে’ লেগেছে কেন শুনতে চাই । ন। হয় বরং—” কান্নায় ফুলিয়। সে বালিসের উপর মুখ গুজিল । কিশোরী দেখিল স্ত্রী রাত দুপুরের সময় গায় পড়িয়া ঝগড়া করিয়া একটা বিভ্ৰাট বাধাইয়া তোলে। এরকম করিয়! আব সংসার কবা চলে না—ভাত ঢাকা ছিল, খুলিয়। লইয়। পাইয়াছে, ইহাতেও যদি স্ত্রী চটিয়া যায়, তাহা হইলে আর পারা যায় না। কিছু ন, ও একটা ছল, ঐ সামান্য স্বত্র ধরিয়া এখনি সে একট। রামরাবণের যুদ্ধ বাধাইয়া তুলিবে । কিশোরী বলিল—“যা খুর্দী কালকে কোরো-- এখন একটু ঘুমুতে দাও । ঘুমূচ্ছিলে বলেই আর ডাকিনি এই তো অপরাধ ? তা বেশ কাল থেকে ওঠাবো, চুলের নড় ধরে ওঠাবো ।” স্বশীল কথা ও বলিল না, মুখও তুলিল না, বালিসে মুখ গুজিয়া পড়িয়া রহিল । পরদিন সকালে উঠিয়া রামতনু মুখুয্যে শুনিলেন চৌধুরীরা খবর পাঠাইয়াছে কয়েকটি নূতন সাক্ষীর তালিম দিতে হইবে। যাইবার সময় তিনি বলিলেন—“ও বৌম, একটু সকাল-সকাল ভাত দিয়ে, কোর্টে যেতে হবে।” বেল ৯টার সময় ফিরিয়া আসিয়া দেখিলেন স্বশীল৷ স্নান করিয়া আসিয়া রৌদ্রে কাপড় মেলিয়া দিতেছে, গৃহিণী মোক্ষদাসুন্দরী রান্নাঘরে বসিয়া রাধিতেছেন। স্বামীকে দেখিয়াই মোক্ষদা চৌকীদার ইকোর স্বরে বলিতে লাগিলেন—“হয় আমি একদিকে বেরিয়ে যাই, না হয় বাপু এর একটা বিহিত করে। সেই সকাল থেকে