পাতা:প্রবাসী (ত্রয়োবিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৫৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

३घ्र-शश् ] ’ . বেনো-জল ২৫১ ८दहन-ऊल পনেরো সমুদ্রের উপর দিয়ে রৌদ্রের জলন্ত বন্যা বহে যাচ্ছে— জলধির বিপুল হিন্দোলাকে কল্পনাতীত মণি-মাণিক্যে বিচিত্ৰ ক’রে তুলে'। দুপুর-বেলায় চারিদিকে যেন এক রৌদ্রময়ী রান্ত্রির নির্জনতা খ গ করছে,–কিন্তু প্রকৃতির এই অপুৰ্ব্ব নাট্যশালায় দশকের অভাবে সমুদ্র একটুও নিরুৎসাহ হ’য়ে পড়েনি, তার মত্ত তাগুবের অভিনয়, গম্ভীর স্বর-সাধনা আর প্রবল ভাবের উচ্ছ্বাস সমানই চলেছে—আর চলেছেই! রতন সমুদ্রের দিকে তাকিয়ে ভাবছে,—ই, আর্টিষ্ট, বটে এই সমুদ্র । আমরা মাতুষ-অটিষ্ট, বাহব না পেলে দমে যাই, টিটুকিরি দিলে ভেঙে পড়ি, সমজদার না থাকূলে কাজ বন্ধ ক'রে বসি । সমূদ্র কিন্তু এ-সবের কোন ধারই ধারে না, তুমি ভালোই বল আর মনই বল সে তাতে সম্পূর্ণ নিৰ্ব্বিকার, সে চায় খালি নিজের মনে নেচে-গেয়ে আপনাকে এই বিরাট বিশ্বে ছড়িয়ে দিয়ে বহে যেতে। তার. উৎসাহ আসে নিজের ভিতর থেকে,—বাইরে থেকে নয়। এই তো খাটি আর্টিষ্টের লক্ষণ ! তুমি বাধা দিলেও তার নাচ-গান বন্ধ হবে না, তুমি হাততালি দিলেও সে বাড়াবাড়ি করবে না । সমুদ্রকে দেখে আমরা অনেক শিখতে পারি। সমুদের পানে চেয়ে রতন অনেকক্ষণ চুপ ক'রে বসে ब्रझेल । জানলার ধারে বসে সুমিত্র একথান ছবির উপরে রঙের তুলি বুলিয়ে যাচ্ছিল, হঠাৎ মুখ তুলে ফিরে দেখে’ সে বললে, “কি ভাব চেন, রতনবাবু ?” রতন বললে, “বুদ্ধদেবের মুর্টির সঙ্গে সমুদ্রের তুলনা করছি।” “কি-রকম ?” —“তুমি ধ্যানী-বুদ্ধের প্রকাও মূৰ্ত্তি দেখেছ ?” —“ছ, মিউজিয়মে দেখেছি।” —“সেই মূৰ্ত্তির সঙ্গে কখনো সমুদ্রের তুলনা ক’রে দেখেছ ?” 鬱 —“ন, আপনার মত আমি ত দার্শনিক নই, অতটা কষ্টকল্পনা কবুবার বাতিক আমার নেই।” “শোনো সুমিত্রা, এ একটা মৌলিক ‘আইডিয়া' ! ধ্যানী-বুদ্ধের শিল-মূৰ্ত্তি—নিবাত-নিষ্কম্প দীপশিখার মতন স্থির । আর এই সমুদ্ৰ—এ হচ্চে গতি-চাঞ্চল্যের উচ্ছসিত প্রকাশ । এই দুই বিপরীত ভাবের মধ্যে কি নিয়ে তুলনা চলে বল দেখি ?" —“আমি জানি না, আপনার পূর্ণিমাকে জিজ্ঞাসা করবেন।” পূর্ণিমার নামে রতন আহত দৃষ্টিতে স্থমিত্রার দিকে চাইলে । কিন্তু তার পরেই সহজ স্বরে বললে, “ধ্যানীবুদ্ধের মূৰ্ত্তি নিৰ্ব্বাণ লাভের জষ্ঠে সাধনায় স্থির। আর সমুদ্রের বিশাল মূৰ্ত্তি গতির সাধনায় অস্থির। কিন্তু এই স্থিরতা আর অস্থিরতার মধ্যে আশ্চয্য একটি মিল অtছে, আপন আপন সাধন-সীমার বাইরে অন্য কোন-কিছুর বিষয়েই এর কেউ একটুও সচেতম নয় । বুদ্ধের স্থিরতা ও গম্ভীর, আর সমুদ্রের অস্থিরতাও গম্ভীর। বিশ্ব-ভরা বিপুবে ও এই স্থিরতা অস্থির বা এই অস্থিরতা স্থির হবে না।......এই দুই বৈচিত্র্যই হচ্চে জগৎহষ্টির মূল—এই দুই সাধনাব মধ্য দিয়েই মামুসের সভ্যতা সম্পূর্ণতার দিকে অগ্রসর হতে চাইছে। বুঝলে স্থমিত্রা ?” সুমিত্র মাথা নেড়ে বললে, “উ ছ ! অত বড় বড় কথা আমার এই ছোট মাথায় ঢুকবে না, রতন-বাৰু ! আপনার পূর্ণিমাও বোধ হয় এ-সব তত্ব শুনতে রাজি হবে না।” রতন একটু অসন্তুষ্টভাবে বললে, “বার বার তুমি পূর্ণিমার নাম করুছ কেন ?” —“বার বার তাকে মনে পড়ছে ব'লে । সে যে ভারি সুন্দরী !” স্বতন বিরক্তমুখে স্তব্ধ হয়ে রইল । সুমিত্রা বললে, “আচ্ছা রতনবাবু, আপনি কি বলেন ? সত্যিই কি পূর্ণিমা সুন্দরী নয় ?”