পাতা:প্রবাসী (ত্রয়োবিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৮১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২য় সংখ্যা } শিক্ষিত ব্যক্তি বলিতেছেন “বাল্য বিবাহে দোষ নাই । পাশ্চাত্য শিক্ষা ভুল (যদিও আমি লে বিষয়-কিছু জানি না)। ৬। সার গুরুদাস বাল্যবিবাহের সন্তান। (স্বতরাং বাল্য বিবাহের সন্তান মাত্রই গুরুদাসের সমতুল্য )” বাল্যবিবাহের একটি স্বফল ফলিয়াছিল হয়ত । ইহা সত্য হইলেও ইহার চেয়ে মৰ্ম্মঘাতী সত্য এই যে বাল্যবিবাহের • একটি নহে কোটি কোটি কুফল ফলিয়াছে এবং ফলিতেছে। ইহা গেলু শিক্ষিত সমাজের মূখাচরণের কথা । এখানে আমাদের জাতীয় দোষগুলি দেখাইবার কারণ এই যে বৰ্ত্তমান কালে আমরা অপরের দোষ দেখিতে একটু বেশী মাত্রায়ই ব্যগ্র । জাতীয় অবনতির যুগে আত্মদোষ বিস্মৃত হওয়া বিপদজনক । জাতির প্রত্যেক ব্যক্তির এখন ভাবিয়া দেখা উচিত যে র্তাহার জীবন উন্নততর মা হইলে, জাতির উন্নতি সম্ভব কি না। তাহার শরীর ও মন আরও স্বন্দর ও মুগঠিত না হইলে জাতির উন্নতি অসম্ভব। ব্যক্তিকে দিয়াই জাতি গঠিত, জাতি নামধেয় কোন মূৰ্ত্তিমান দানব নাই যে তার উপকার জাতীয় ব্যক্তির উপকার হইতে বিচ্ছিন্ন ভাবে হইতে পারে। আমাদের জাতীয় আদর্শকে নুতন করিয়া জীবনের কার্য্যে দেখাইতে হইবে । সেই আদশে শাস্ত্রের মধ্যে যাহা কিছু ভাল আছে তাহা ত থাকিবেই, উপরন্তু বাহির হইতে নূতনতব যাহা কিছু তাহাকেও আপনার করিয়া লইতে হইবে । কিন্তু জাতীয় আদশ সৰ্ব্বাঙ্গমুন্দর করিয়া কোন মহাপুরুষ জাতির সম্মুখে ধরিবেন এবং জাতি তাহা দেখিয়া কায্য করিবে ইহা সম্ভব নহে। জাতীয় আদর্শ প্রথমত কয়েকটি লোকের হৃদয়ে থাকে । তার পর ব্যক্তি হইতে গৃহে, গৃহ হইতে গ্রামে, গ্রাম হইতে বহুগ্রামে, এইরূপে সেই আদর্শ দেশব্যাপী বা বহুদেশব্যাপী হইয়া পড়ে। কিন্তু ক্রমশঃ প্রচারের পথে তাহার মধ্যে গরিবৰ্ত্তনও হয় । একের বা কতিপয়ের অস্তরে যাহা জাগিয়া উঠে, তাহ দেশব্যাপী হইয় গৃহীত হইতে হইলে তাহার মধ্যে অনেক ক্ষেত্রেই পরিবর্তন প্রয়োজন হয়। কিন্তু জাতীয় জীবনে সেই আদর্শ প্রকৃত রূপে গৃহীত হইতে হইলে সকল ব্যক্তিকে তাহা কাধ্যে মান্য করিতে হুইবে । পরের নিকট আত্মজাহিরের অস্ত্র বা অক্ষম বিবিধ প্রসঙ্গ—জাপানে ধ্বংস-ও হত্য-লীলা २११ শরীর ও মন লইয়া পিতৃপুরুষের সাহায্যে আত্মশ্লাঘা: বোধের আনন্দলাভের উপায় স্বরূপ তাহ ব্যবহৃত হইলে কোন লাভ নাই। কোন কিছুকে তাচ্ছিল্য করিয়া সময়ের অপব্যবহার অপেক্ষা সেখানে যাহা ভাল তাহাকে গ্রহণ করিয়া নিজের জীবনাদর্শকে চিরনবীন ও চিরজাগ্রত রাখিবার চেষ্টা ও কার্য্যত শরীর ও মনকে সেই আদর্শের দিকে লইয়া যাইবার চেষ্টাই ব্যক্তির ও জাতির প্রধান কৰ্ত্তব্য । व्यू জাপানে ধ্বংস- ও হত্য-লীলা সম্প্রতি জাপানে যে ভূমিকম্প হইয়। গিয়াছে তাহার তুল্য ভূমিকম্প পৃথিবীতে আর হয় নাই এসম্বন্ধে সকলেই একমত। খবরের কাগজে প্রথম যে বিবরণ বাহির হইয়াছিল তাহাতে মৃত্যুসংখ্যা কিছু বাড়াইয়া বলা হইয়া থাকিলেও, আজকাল যে পূৰ্ব্ব হইতে সঠিক খবর পাওয়া যাইতেছে তাহাতেও এই ধ্বংস-ব্যাপার কিছুমাত্র অকিঞ্চিৎকর বলিয়া প্রমাণিত হয় নাই। একেবারে নিতুল হিসাব এখন পৰ্য্যন্ত পাওয়া যায় নাই, আর কখনও যে পাওয়া যাইবে তাহার কোন সম্ভাবনাও নাই । মোটামুটি ধরিয়া লওয়া যাইতে পারে যে তোকিও সহরে ১১• • • • জন, ইয়োকোহামায় ৩০ ০০০ জন, কামাকুরীতে ১০০০, মিউরা উপদ্বীপে ১০ ০০০ জন, ওদাওয়ারা ও আতামিতে ১০০০, বোসা উপদ্বীপে ৫০০০ জন—মোটের উপর ১৬৬০ ০০ জন লোক মারা গিয়াছে । তাহা ছাড়া ইয়োকোহামাতে৭০ ০০০ খানি বাড়ী পড়িয়া গিয়াছে ও মাত্র শতখানেক বাড়ী দাড়াইয়া আছে। ইয়োকোস্থকাতে ১২০০০ বাড়ীর মধ্যে মাত্র ১৫০খানা রক্ষণ পাইয়াছে। তোকিওতে শতকরা ৯৩ খানি বাড়ী হয় পড়িয়া গিয়াছে, নয় আংশিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হইয়াছে। তোকিও সহরে কোন কোন বহুতল হৰ্ম্ম্যের তিনতলার মেঝের ফাটল দেখা যাইতেছে, কিন্তু সৰ্ব্বনিম্ন কিঙ্গ সৰ্ব্বোচ্চ তলায় খুব কম ক্ষতি হইয়াছে দেখা যাইতেছে । তোকিও সহরে যে আগুন লাগিয়া গিয়াছিল তাঁহাতে রাজকীয় গ্রন্থাগারের অনেকাংশই পুড়িয়া গিয়াছে ও প্রায় ৭০ • • • • খণ্ড বই নষ্ট হইয়া গিয়াছে।